স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৯ নভেম্বর :স্যন্দন টিভিতে খবর প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসলেন কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোজ দেববর্মা। বিদ্যালয়ের বিপুল বিশ্বাস নামে এক শিক্ষককে জুতোপেটা ও ঝাড়ু পেটা করার দায়ে দুজনের বিরুদ্ধে তেলিয়ামুড়া থানায় মামলা করলেন তিনি। কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করে নি।
বিষয়টি ধাপাচাপা দিতে মাঠে নেমেছে একটি মহল বলে সূত্রে খবর। জানা যায়, গত ১৫ই নভেম্বর কৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষক বিপুল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের কুরুচিকর মন্তব্য করার অভিযোগে তুলে কিছু উশৃংখল অভিভাবক, অভিভাবিকা থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয় চত্বরে রীতিমতো তান্ডব শুরু করে। সেই সকল উশৃংখল অভিভাবক মহল থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রীরা অভিযুক্ত ওই কম্পিউটার শিক্ষক বিপুল বিশ্বাসকে অর্ধনগ্ন করে জুতা, ঝাঁটা সহ বাঁশ দিয়ে প্রকাশ্যে বেধড়কভাবে মারধর করে আইনকে হাতে তুলে নেয়। রাজ্যের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করেছে তারা। এমনকি, উশৃংখলতার মাত্রা এতটাই তীব্রতর ছিল যে বিদ্যালয়ের সরকারি সম্পত্তিতেও ভাঙচুর করা হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় বিদ্যালয়ের এস.এম.সি কমিটির রাষ্ট্রবাদী সদস্যরা এবং তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিক্ষক বিপুল বিশ্বাসকে থানায় নিয়ে আসে, যদিও পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে তেলিয়ামুড়া থানায় শিক্ষকের নাম ধাম দিয়ে অভিযোগ করা হয়। এই ঘটনাটির সংবাদ প্রকাশের পর গোটা রাজ্যজুড়ে ব্যাপক নিন্দার ঝড় উঠে। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোজ দেববর্মা কোন প্রকারের ব্যবস্থা না গ্রহণ করলেও, বর্তমানে সমালোচনার মুখে পড়ে তেলিয়ামুড়া থানায় ১৮ নভেম্বর রাতে শিক্ষককে মারধোরের ঘটনার সঙ্গে জড়িত দু’জনের বিরুদ্ধে লিখিত আকারে মামলা দায়ের করেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোজ দেববর্মা জানায়, এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত নিতাই নম: দাস সহ আরো এক মহিলার বিরুদ্ধে এই লিখিত অভিযোগটি দায়ের করা হয় তেলিয়ামুড়া থানায়। এদিকে এ বিষয়ে তেলিয়ামুড়া থানার ওসি জানান প্রধান শিক্ষকের পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় দুজনের নাম দেওয়া হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। স্যন্দন টিভির খবরের পর থানায় প্রধান শিক্ষক মামলা করলেও বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে ধাপা চাপা দেওয়ার পুরোদমে চেষ্টা চলছে বলে সূত্রে খবর। এমনকি খবর লেখা পর্যন্ত তেলিয়ামুড়া থানার পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেছে বলে জানা নেই। তবে রক্ষকই যদি ভক্ষক হয়ে যায় তাহলে মানুষের আর ভরসা থাকবে না। পুলিশের প্রয়োজন আইন হাতে তুলে নেওয়া অভিযুক্ত অভিভাবকদের শনাক্ত করে কঠোর আইনি ধারা দিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার।