Friday, December 27, 2024
বাড়িরাজ্যমুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভায় কেন্দ্রে বুথ সভাপতি আক্রান্তের ঘটনায় গ্রেফতার সাতজন মাফিয়া

মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভায় কেন্দ্রে বুথ সভাপতি আক্রান্তের ঘটনায় গ্রেফতার সাতজন মাফিয়া

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২১ অক্টোবর : সুশাসন জামানায় গ্রেপ্তার হলো শাসক দলের লালিত পালিত কুখ্যাত মাফিয়া গোষ্ঠীর সাতজন সদস্য। মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রে তারা দীর্ঘদিন ধরে ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছে। সূত্রে খবর তারা গত ১৫ অক্টোবর কার্নিভাল অনুষ্ঠান ঘিরে চিত্তরঞ্জন এলাকার কুখ্যাত বাম আমলের মাফিয়া কানাই সাহার নেতৃত্বে পিস্তল উচিয়ে প্রাননাশের হুমকি দিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রের ৩২ নং ওয়ার্ডের ২১ নং বুথ সভাপতি কিংকর সাহাকে।

এই ঘটনার পর কিংকর সাহা গত সেদিনই পশ্চিম আগরতলা থানায় মামলা করেছিল। এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত কানাই সহ বাকিদের জালে তুলেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম দেবাশীষ সাহা, অর্জুন দেবনাথ, প্রণব পোদ্দার, কৃষ্ণ পাল, সঞ্জিত সাহা, তনুজ দাশগুপ্ত এবং দ্বীপ দাশগুপ্ত। উল্লেখ্য, ঘটনার সূত্রপাত ১৪ অক্টোবর রাতে কার্নিভাল অনুষ্ঠানে। রাজধানী পোস্ট অফিস চৌমুহনি সংলগ্ন এলাকায় চিত্তরঞ্জন ক্লাবের প্রতিমা নিয়ে যাওয়ার সময় চিত্তরঞ্জন ক্লাবের বাউন্সাররা চারজন শিশুকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। তখন অভিভাবকরা প্রতিবাদ করলে শিশু ও মহিলাদের উপর আক্রমণ করে চিত্তরঞ্জন ক্লাবের বাউন্সাররা। আহত হয় চারজন শিশু।

পরে প্রতিবাদী অভিভাবক পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায়। তারপর অভিযুক্ত বাউন্সারদের গ্রেপ্তারের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে অভিভাবকরা বিক্ষোভে শামিল হয়। কিছুক্ষণ পর দ্বীপ এবং ভিকি নামে দুজন অবরোধস্থলে এসে অভিভাবকদের ধমক দিয়ে বলে তাদের গুলি করে মেরে ফেলবে, তাড়াতাড়ি রাস্তা অবরোধ তুলে নেয়ার জন্য! পরবর্তী সময় পুলিশের আশ্বাস পেয়ে বিক্ষোভ তুলে নেয় অভিভাবকরা। কয়েক ঘন্টা পর গ্রেফতার হয় অভিযুক্ত এক বাউন্সার। তারপর অভিভাবকরা অভিযুক্ত বাউন্সারের বিরুদ্ধে পশ্চিম আগরতলা থানায় মামলা করে বাড়িতে যায়। মঙ্গলবার দুপুর বেলা মামলাকারী একজনের বাড়িতে গিয়ে চিত্তরঞ্জন এলাকার মাফিয়া কানাই সাহা, অর্জুন, বিজয়, বিষ্ণু এবং তনুজ সহ কয়েকজন গিয়ে ধমক দিয়ে আসে। ৮ নং টাউন বড়দোয়ালি বিধানসভা কেন্দ্রের ৩২ নং ওয়ার্ডের ২১ নং বুথ সভাপতি কিংকর সাহার হোটেলে যায়। হোটেলে গিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় কানাই সাহার দলবল। তারপর বুথ সভাপতি কিংকর সাহার বাড়িতে এসে লাঠি, রড সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে আক্রমণ করে।

 কিংকর সাহাকে মারধর করে। পিস্তল উঁচিয়ে প্রানে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দেয়। শেষ পর্যন্ত পশ্চিম আগরতলা থানায় এসে মামলা করেন কিংকর সাহা এবং তার পরিবার। এই মাফিয়া গোষ্ঠীর কারণে মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র পর্যন্ত এবার দুঃশাসনের ভাগীদার হতে চলেছে। তারা প্রতিদিন রাজধানী শান্তি পাড়া এলাকায় ঘাঁটি করে বসে থাকে। এখানেই চলে তাদের জমির দালালি, নিগো মাফিয়াগিরির লেনদেন এবং সমস্ত ঘটনার পরিকল্পনা। এমনটাই গুঞ্জন শোনা যায় কান পাতলে। কিভাবে মুছবে এই দুঃশাসনের কলঙ্ক? প্রশ্ন আম জনতার। আরো জানা যায় ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রের মন্ডল সভাপতি সঞ্জয় সাহার কাছে সহযোগিতা চাইলে পাশে দাঁড়ায় নি। কারণ তাদের সাথে তথাকথিত হেভিওয়েট মন্ডল নেতার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এমনটাও বিশ্বস্ত সূত্রে খবর। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র বলে কথা। সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হতেই কিছুটা নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন। যদি তাদের গ্রেফতার না করা হয় তাহলে সরকার কালিমা লিপ্ত হতে পারে। তাই তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এখন দেখার বিষয় তাদের অস্ত্র আইন অনুযায়ী পুলিশ মামলার গ্রহণ করে কিনা। নাকি দুর্বল ধারা অনুযায়ী মামলা গ্রহণ করে সাত মহারথীকে পার পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য