স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ অক্টোবর : করবুক মহকুমার চেলাগাঙ একছড়ি এলাকা স্থিত এক নতুনবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের পঠন পাঠন নিয়ে অভিযোগ তুলছে এলাকার অভিভাবক মহল। শিক্ষক শিক্ষিকারা খেয়ালখুশি মতো বিদ্যালয় আসে। বিদ্যালয়ে আসলেও ঘুমিয়ে কিংবা গল্প গুজব করে সময় কাটিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। গুণগত মানের শিক্ষা থাক দূরের কথা ন্যূনতম পঠন পাঠন থেকে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা বঞ্চিত হচ্ছে বলে এলাকার অভিভাবকদের অভিযোগ।দীর্ঘ বহু বছর এই বিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে এলাকার অনেক ছেলে-মেয়ে আজ সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
কিন্তু বর্তমানে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের নজরদারির অভাবে কিংবা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চরম গাফিলতির ফলে এক নতুনবাজার উচ্চ বিদ্যালয়টির পঠন পাঠনের বেহাল চিত্র ফুটে উঠছে। নতুনবাজার উচ্চ বিদ্যালয়টিতে প্রায় ৩০০ ছাত্র ছাত্রীর জন্য ১১ জন শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন। কিন্তু অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ প্রায় সপ্তাহের তিন থেকে চার দিন বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা আসেন না। ১১ জনের মধ্যে ৭-৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা উপস্থিত থাকলেও তারাও বিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত থাকেন না বলে অভিযোগ। এমনকি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক সুপ্রিয় সাহা প্রায় দিনই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকেন বলে অভিযোগ। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষিকারাও নানা অজুহাত দেখিয়ে বিদ্যালয়ে সময়মতো উপস্থিত হন না। বেলা বারোটা নাগাদ বিদ্যালয়ে আসা এক শিক্ষিকা বিদ্যালয়ে দেরিতে আসাকে কোন অপরাধ বলে মনে করেন না। তিনি সংবাদমাধ্যমে ক্যামেরার সামনে স্পষ্ট জানিয়ে দেন গাড়ি পেতে দেরি হয়। তাই মাঝে মধ্যে বিদ্যালয় আসতে দেরি হতেই পারে।
অভিযোগ ওই শিক্ষিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের বাইকে করে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করেন। তাই ইনচার্জ বিদ্যালয়ে দেরিতে আসলে তিনিও দেরিতে আসেন। এদিকে ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ বিদ্যালয় যে কয়টি ক্লাস হয় তার গুণমান যথেষ্ট প্রশ্নচিহ্নের মুখে। কারণ শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিদ্যালয়ে ক্লাস করতে এসে বেশিরভাগ সময় ঘুমিয়ে কাটান বলে ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ। ঘুমানোর সময় ছাত্রছাত্রীরা যদি কোন প্রশ্ন করে বসেন তাহলে শিক্ষক মহাশয় উত্তেজিত হয়ে তাদেরকে মারধর করা শুরু করেন বলে অভিযোগ। ছাত্র-ছাত্রীদের আরো অভিযোগ বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী থাকা সত্ত্বেও স্কুলের তালা খোলা থেকে শুরু করে স্কুল বন্ধ করা পর্যন্ত চতুর্থ শ্রেণী কর্মীর যাবতীয় কাজ ছাত্র-ছাত্রীদেরই করতে হয়। এমনকি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পক্ষ থেকে রুটিন করে দেওয়া হয়েছে কোন ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা কোনদিন শ্রেণিকক্ষ খোলা থেকে বন্ধ করা পর্যন্ত কাজগুলি করবে। অভিযোগ বিদ্যালয়ে পঠন-পাঠনের রুটিন মোতাবেক পড়াশোনা না হলেও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মীর কাজের যে রুটিন ছাত্র-ছাত্রীদের করে দেওয়া হয়েছে তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে বাধ্য ছাত্রছাত্রীরা। এলাকাবাসীদের অভিযোগ এক- নতুনবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের এ অচলাবস্থা দীর্ঘদিন যাবত চলে আসছে। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষককে বিষয়গুলো অবগত করা হলেও কোন কার্যকরী পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এমনকি মহকুমা কিংবা জেলা স্তরের প্রশাসনিক আধিকারিকদের বিদ্যালয়টির প্রতি তেমন কোন নজরদারি না থাকায় মাসের পর মাস বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠনে অচলাবস্থা বিরাজ করছে বলে অভিযোগ। তবে প্রশ্ন হল আর কতদিন এভাবে চলবে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা? জেলা শিক্ষা আধিকারিক এর কোনরকম পদারকি না থাকার কারণে এ ধরনের এলাকাবাসী প্রত্যক্ষ করছেন। আর শিক্ষা ক্ষেত্রে হাব করা হবে বলে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিচ্ছেন মন্ত্রীরা। বাস্তব চিত্র কি সেটা জানে অভিভাবক মহল।