স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৯ সেপ্টেম্বর : গত ২৫ আগস্ট রানীরবাজার কৈতুরবাজার এলাকায় প্রতিমা ভাঙ্গার ঘটনায় ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা বাধে। উত্তেজিত হয়ে উঠে গোটা এলাকা। দুষ্কৃতিকারীরা ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি অগ্নি সংযোগ ঘটায় মানুষের বাড়ি ঘর, যানবাহন থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত সম্পত্তির উপর। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। একই সাথে দুষ্কৃতিকারীরা দুর্গানগর এলাকাতেও ব্যাপক আক্রমণ সংগঠিত করে মানুষের বাড়ি ঘরের উপর।
ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মানুষের। সবকিছু শান্ত হয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘ ২৫ দিন পর এলাকায় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গেলেন পলিটব্যুরোর সদস্য তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে, প্রাক্তন বিধায়ক পবিত্র কর, সিপিআইএম নেতা রাধা চরণ দেববর্মা সহ বামফ্রন্টের একটি প্রতিনিধি দল। বৃহস্পতিবার গোটা এলাকার পরিদর্শন করে তারা মানুষের সাথে কথা বলে ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে এবং ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে অবগত হয়। ঘটনার তীব্র সমালোচনা করে পলিটব্যুরোর সদস্য তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বলেন, ঘটনার পরের দিন এলাকায় পরিদর্শনে আসতে চাইলে পুলিশের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হয়। বলা হয় সেখানে ১৬৩ ধারা জারি রয়েছে। তাদের যেতে দিলে অন্যান্য রাজনৈতিক দল সহ বিভিন্ন সংগঠনকে যেতে দিতে হবে। ফলে এলাকার পরিস্থিতি আরো বেশি জটিল হয়ে উঠতে পারে বলে সহযোগিতার দাবি করেছিল পুলিশ প্রশাসন। তারপর এখন পর্যন্ত তৃতীয়বারের চেষ্টায় বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এসেছেন। তিনি বলেন, এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে বোঝা গেল এটা স্বতঃস্ফূর্ত ঘটনা নয়। পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনা সংগঠিত করেছে দুর্বৃত্তরা।
কারণ যারা এই ঘটনা সংগঠিত করেছে তারা সেদিন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রামের শ্লোগান দিয়ে মানুষের বাড়ির ঘরে এসে আক্রমন করেছে। বিশেষ করে লক্ষ্য করা গেছে, সেদিন তালিকা তৈরি করে বাছাই করা বাড়িঘরে এভাবে আক্রমণ সংগঠিত করেছে দুর্বৃত্তরা। ক্ষতিগ্রস্তদের কাছ থেকে আরও অবগত হয়ে গেছে, বাড়িতে প্রবেশ করে দুর্বৃত্তরা আগে লুটপাট করেছে। তারপর জিনিসপত্র একসাথে করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। দুর্বৃত্তদের কাছ থেকে রেহাই পায়নি ছয় থেকে সাত মাসে শিশু পর্যন্ত। এমনকি সন্তান সম্ভাব্য মা পর্যন্ত জঙ্গলে গিয়ে সেদিন আত্মরক্ষা করেছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, মানুষ সেদিন পুলিশের হাতে পায়ে ধরে নিরাপত্তা চেয়েছেন। কিন্তু পুলিশ নিরাপত্তার স্বার্থে কোন কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারেনি। তিনি বলেন এই ঘটনায় লক্ষ্য করা গেছে রাজনৈতিক ভাবনা মাথায় রেখে ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন তৈরি করতে পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ সংগঠিত করেছে। সবশেষে তিনি বলেন এই কথাগুলি তাঁর কথা নয়, ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের অভিমত, এগুলি তিনি তাদের হয়ে তুলে ধরেছেন। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের হয়ে সরকারের উদ্দেশ্যে কোন কিছু দাবি তোলা হবে কিনা সে বিষয় নিয়ে মুখ খুলেননি মানিক সরকার।