স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৬ সেপ্টেম্বর : স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রী বাড়ি ফিরতেই তাকে প্রকাশ্যে বিবস্ত্র করে পেটানো হয়। মহিলাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসেননি কেউই। ঘটনাটি বিশালগড় থানার অন্তর্গত মধ্য ব্রজপুর এলাকায়। অসুস্থ অবস্থায় স্বামীকে ফেলে রেখে চলে যাওয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, স্বামীর মৃত মুখ দেখতে এসে পাড়া-প্রতিবেশী মহিলাদের হাতে মধ্যযুগীয় বর্বরতার শিকার হয়ে আত্মরক্ষা করতে থানায় ছুটে আসে। মধ্য ব্রজপুর এলাকার পেশায় গাড়ি চালক ৩৫ বছরের যুবক নারায়ণ কর শুক্রবার দিন নিজ বাড়িতে বসতঘরের মধ্যে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করে।
ছয় মাস পূর্বে যান দুর্ঘটনায় তার একটি পা ভেঙ্গে যায়। তারপর থেকে সে বিকলাঙ্গ হয়ে যায়। বিকলাঙ্গ হয়ে যাবার পর তার স্ত্রী স্মৃতি কর তার সমস্ত কাগজপত্র ব্যাংকের বই ইন্সুরেন্সের কাগজ সহ তার ১১ বছরের মেয়ে সুস্মিতা কর কে নিয়ে পুরাতল বাপের বাড়িতে চলে যায়। এরপর থেকে একা একা নিজ বাড়িতে থাকতেন নারায়ন কর। বড় ভাই বৌদি এবং বাবা তাকে দেখভাল করতেন। মানসিক অবসাদে ভোগতেন স্ত্রী চলে যাবার পর থেকে। হঠাৎ করে শুক্রবার দিন তার বৌদি তাকে সকালবেলা ভাত খাবারের জন্য তার ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে ডাকতে থাকেন। কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ঘরের দরজা খুলতে গিয়ে বৌদি দেখতে পান তার দেবর নারায়ন কর ঘরের মধ্যে ঝুলে রয়েছে। দৃশ্য দেখে চিৎকার শুরু করে দেন তিনি। খবর পেয়ে পাড়া-প্রতিবেশী সবাই ছুটে আসে নারায়ন করের বাড়ির সামনে। খবর দেওয়া হয় তার স্ত্রীকে।
খবর পেয়ে শুক্রবার দিন দুপুরবেলা মধ্য ব্রজপুর নারায়ণ করের বাড়িতে আসলে গ্রামের মহিলারা তাকে ধরে নারী ইজ্জত লুণ্ঠন করে দেয়। মহিলাদের অভিযোগ স্বামী থাকার পরেও তিনি অপর পুরুষের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের জড়িয়ে পড়েছিলেন। গ্রামের মহিলাদের অভিযোগ স্ত্রীর অবৈধ সম্পর্কের জেরে ফাঁসিতে আত্মহত্যা করেছে নারায়ন কর। এই ঘটনাটি টাটা কালী বাড়ির পুনরাবৃত্তি ও বলা চলে। এমনটাই বলছে গোটা বিশালগড় এলাকার মানুষ। এভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে একজন মহিলাকে জঘন্যভাবে মারধর করে তার বস্ত্র ছিড়ে ফেলা সভ্য সমাজের পক্ষে কলঙ্কজনক। বিশালগড় থানা এবং বিশালগড় মহিলা থানার দুর্বলতার কারণে এমনটা হয়েছে বলে অভিমত বিশালগড় বাসীর। বিশালগড় মহিলা থানা এখন কি পদক্ষেপ নেয় তার জন্য তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশালগড় মহকুমাবাসী।