স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৬ আগস্ট : রবিবার রাতে আচমকা উত্তপ্ত হয়ে উঠে রানীরবাজার কইতুর বাড়ি এবং দুর্গানগর এলাকা। অভিযোগ কালী মূর্তি ভাঙ্গা ঘিরে এই ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। এলাকায় ভাঙচুর হয় বহুবারই ঘর সহ ব্যক্তিগত সম্পত্তি। পাশাপাশি চলে মানুষকে মারধোর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা। সোমবার এলাকার পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা শাসক ডঃ বিশাল কুমার। তিনি এলাকায় পৌঁছাতে জেলা শাসককে ঘিরে ধরে মহিলারা নিরাপত্তার দাবি জানায়।
তাদের অভিযোগ, রবিবার সন্ধ্যা সময় তারা দেখতে পায় এলাকার কালী মন্দিরে মধ্যে প্রতিমা ভাঙ্গা। সাথে সাথে বিষয়টি নিয়ে তারা আলোচনায় বসলে এলাকার কিছু মানুষ দাবি করে প্রতিমা আঠা দিয়ে জোড়া লাগিয়ে দেওয়ার জন্য। আবার কেউ কেউ দাবি করে কাগজের প্রতিমা নির্মাণ করার জন্য। এ ধরনের অরুচিকর মন্তব্য শুনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকার মানুষ। তারপর কিছু দূরত্ব এসে তাড়াতাড়ি যুবকদের উপর হাত তুলে। তখন পরিস্থিতি আরো বেশি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তখন এলাকায় কিছু যুবক এবং বহিরাগত এসে এলাকার ১০ থেকে ১২ টি বাড়ি ভাঙচুর চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে। তারপর ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে এক অংশে মানুষের এলাকায় নিয়ে শিবির পরে থাকার জন্য বন্দোবস্ত করে প্রশাসন। তারপরেই এ বিষয় নিয়ে আরো বেশি ক্ষোভ সঞ্চার হয়।
মহিলারা দাবী করেন যাদের দ্বারা তাদের বাড়ি ঘরের মানুষ আক্রান্ত হয়েছে তাদেরই আবার এলাকায় এনে শিবিরের রাখা হয়েছে। যেকোনো সময় তারা আবার আক্রমণ করতে পারে। কারণ রবিবার রাতে পুলিশের উপস্থিতিতে দুর্বৃত্তরা তান্ডব চালিয়েছে দুর্গানগর গ্রামে বলে দাবি মহিলাদের। জেলা শাসক তাদের পুরোপুরি নিরাপত্তার আশ্বস দেন। আর কোন অশান্তির ঘটনা এলাকায় ঘটবে না বলে শান্ত থাকার জন্য বলেন। এলাকার মহিলাদের আরো অভিযোগ যতক্ষণ না পর্যন্ত পুনরায় এলাকায় কালি মূর্তি প্রতিষ্ঠা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত সেই অংশের মানুষ এলাকায় কোন ধর্মীয় কার্যকলাপ করতে পারবে না। এদিকে জেলা শাসকের কাছে একটি অভিযোগ তোলা হয়েছে এলাকায় নাকি অনেকের বাড়িতে অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে। যারা শাসক আশ্বস্ত করেছেন এ বিষয়টা অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে বাড়িঘর তল্লাশি শুরু করা হবে। জেলাশাসক জানান, এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। সব অংশের মানুষের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এবং যারা অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে তাদের মধ্যে কয়েকজনকে সনাক্ত করেছে প্রশাসন। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করবে পুলিশ। বর্তমানে সাত থেকে আটটি পরিবার বাড়িঘর ছাড়া রয়েছে। তাদের নিরাপত্তা শিবিরে রাখা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। তারপর ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করা হবে। বর্তমানে এলাকায় ১৬৩ ধারা জারি রেখে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।