স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৫ আগস্ট : বুধবার গভীর রাত থেকে রাজধানীর ইন্দ্রনগর এলাকায় বন্যার জল বৃদ্ধি পেতে থাকে। একটা সময় মানুষের বাড়ি ঘরে বন্যার জল ঢুকে পরে। ভোর হতে না হতেই চারিদিকে বাচার জন্য মানুষের চিৎকার চেঁচামেচি। এইদিকে প্রশাসনের উদ্ধারকারী দল তখন এলাকায় পৌছায় নি। যে যার মতো করে বাড়ি ঘর ত্যাগ করে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিতে শুরু করে। ইন্দ্রনগর এলাকায় জলের গতিবেগ এতটাই বেশি ছিল যে ঘর থেকে বের হওয়া এক প্রকার দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাচার জন্য মানুষ চিৎকার করছিল।
ঠিক তখন সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে ইন্দ্রনগর এলাকার চিরঞ্জিৎ দে ঠাই না পাওয়া জলে ঝাপিয়ে পরে মানুষকে বাঁচানোর জন্য। বহু লোককে জীবনের ঝুকি নিয়ে সে বাচাতে সক্ষমও হয়। কিন্তু কে জানে এই বন্যাই কেড়ে নেবে সাহসি চিরঞ্জিৎ-এর প্রান। বহু লোককে উদ্ধারের পর চিরঞ্জিৎ যখন পুনঃরায় গলা সমান জল দিয়ে মানুষকে উদ্ধার করার জন্য জল মগ্ন এলাকায় যাচ্ছিল তখন জলের তোরে সে ভেসে যায়। শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে অনেকটা দূরে চিরঞ্জিৎ-এর মৃতদেহ দেখতে পায় লোকজন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জিবি হাসপাতালে নিয়ে যায়। ময়না তদন্তের পর মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের লোকজনদের হাতে।
মৃতদেহ উদ্ধারের পর কান্নায় ভেঙ্গে পরে চিরঞ্জিৎ-এর মা সহ পরিবারের লোকজন। রবিবার নিহত চিরঞ্জিৎ-এর বাড়িতে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রী এইদিন নিহত চিরঞ্জিৎ দে-র বাড়িতে গিয়ে তার পরিবার পরিজনদের সমবেদনা জানান। এবং চিরঞ্জিৎ-এর আত্মার সদ্গতি কামনা করেন। পরে মুখ্যমন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান অন্যের প্রান বাচাতে গিয়ে নিজের জীবন দিয়েছে চিরঞ্জিৎ। অত্যন্ত সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে সে। চিরঞ্জিৎ-এর প্রয়াণে তার বৃদ্ধ মা-বাবা অসহায় হয়ে পরেছেন। তাদের ভাঙ্গা ঘরটি ঠিক করে দেওয়ার জন্য জেলা শাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর মা-বাবা যেন খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে, তার জন্য তাদের দুই জনকে সামাজিক ভাতা ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর পরিবারকে এক কালিন চার লক্ষ টাকা প্রদান করা হবে। এইদিন মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ছিলেন পশ্চিম জেলার জেলা শাসক ডাঃ বিশাল কুমার, সদর মহকুমা শাসক মানিক লাল দাস সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা।