স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৭ আগস্ট : সুশাসনে মাফিয়ার দৌরাত্ম্যে নিরাপত্তাহীন আগরতলা শহরের অন্যতম বাণিজ্যিক ও জনবহুল এলাকা বর্ডার গোলচক্কর। রাত আটটার পর পিস্তল নিয়ে রাস্তায় ঘুরছে ঝুটন দাস ও রমজান মিয়া নামে দুই কুখ্যাত মাফিয়া। মানুষকে রাস্তায় আটকে টাকা পয়সা ছিনতাই, মোবাইল বাইক লুটপাট করে চলেছে। দুই মাফিয়া এবং তাদের সঙ্গপাঙ্গদের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকার মানুষ। দীর্ঘ পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে তারা এলাকায় এ ধরনের দুঃশাসন চালু করে রেখেছে।
এলাকার ক্লাব, বিধায়ক এবং পশ্চিম আগরতলা থানার পুলিশকে ম্যানেজ করেই তারা এ ধরনের কুকাণ্ড এলাকায় সংঘটিত করে চলেছে। এরই পরিনাম ঘটছে এলাকায়। রাত আটটার পর মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। সন্ধ্যার পর বাড়ি থেকে মহিলারা বের হতে পারছে না। মঙ্গলবার রাতের বেলা এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেন নামে এক যুবক বাড়ি ফেরার সময় তার বাইক আটকে তার কাছ থেকে টাকা পয়সা চায়। না যাওয়ায় তাকে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে। পকেট থেকে পিস্তল এবং ছুরি বের করে প্রাননাশের হুমকি দেয় কুখ্যাত মাফিয়া জুটন দাস এবং রমজান মিয়া নামে দুজন বলে অভিযোগ। তারপর আশেপাশে লোকজন আহত যুবকের চিৎকার শুনে ছুটে আসলে তারা ঘটনার ফল থেকে চলে যায়। তারপর পরিবারের লোকজনেরা এসে জাহাঙ্গীরকে হাসপাতাল নিয়ে যায়। তার মাথায় আটটি সেলাই লাগে। এরই প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে আখাউড়া বর্ডার সংলগ্ন এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে আমজনতা। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তারা এলাকায় এ ধরনের গুন্ডামির ঘটনা সংঘটিত করে চলেছে।
রাত হলেই তারা বুক ফুলিয়ে এলাকায় পিস্তল নিয়ে ঘোরাফেরা করে। পুলিশ, স্থানীয় ক্লাব সহ বিভিন্ন জায়গায় তারা অভিযোগ জানিয়ে কোন সুবিচার পাচ্ছে না। গত ৩১ ডিসেম্বর রাতের বেলাও এলাকায় এক ব্যক্তির কান কেটে দেয়, এবং বেধড়ক মারধর করে। থানায় মামলা হলেও সবটাই উপরওয়ালা সামলে নিচ্ছে। তারপর এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছিল। এলাকাবাসী দাবি করেছিল তারা যাতে এলাকা থেকে বহিষ্কার হয়। কিন্তু কুখ্যাত দুই মাফিয়া কথা দিয়েছিল যদি ভবিষ্যতে তারা এ ধরনের ঘটনা এলাকায় সংঘটিত করে তাহলে যাতে তাদের এলাকা থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরবর্তী সময় দেখাই আছে তাদের স্বভাব পরিবর্তন হয়নি। এলাকায় ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি করে রেখেছে। রাতের বেলা পিস্তল নিয়ে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করার সাথে সাথে মানুষকে ফোন করেও জ্বালা যন্ত্রণা করে।
বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয়। মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্ত দুজনকে এখনো গ্রেপ্তার করেনি। তাই এলাকাবাসীর অবরোধ করে দাবি তুলেছে কুখ্যাত ঝুটন দাস এবং রমজান মিয়াকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি পরিবার সহ এলাকা থেকে বহিষ্কার করার জন্য। তারা মানুষের আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে। তারা এলাকায় থাকলে যে কোন সময় লাশ করতে পারে। খবর পেয়ে অবরোধস্থলে ছুটে আসে পুলিশ। পুলিশের আশ্বাস পেয়ে প্রত্যাহার করলেও মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়ে আছে। মানুষ সুশাসন জামানায় এ ধরনের দুঃশাসন আর চাইছে না। তারা এলাকায় থাকলে মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নেবে। তাই সমাজ বিরোধী দুই কুখ্যাতকে সমাজ ছাড়া করার দাবি করেছে আমজনতা। এখন দেখার বিষয় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে কিনা। তাদের এই ধরনের আচরণে এলাকার জনৈক বিধায়ক পর্যন্ত কালিমালিপ্ত হচ্ছেন। এমনটাই অভিযোগ গোটা এলাকায় মানুষের মুখে মুখে শোনা যাচ্ছে। মানুষ চাইছে সুশাসন যাতে এলাকায় বাস্তবে পরিলক্ষিত হয়।