Friday, September 13, 2024
বাড়িরাজ্যগন্ডাছড়ার ধ্বংসলীলা সরজমিনে দেখে অতিরিক্ত ২ কোটি ৩০ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা...

গন্ডাছড়ার ধ্বংসলীলা সরজমিনে দেখে অতিরিক্ত ২ কোটি ৩০ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতার ঘোষণা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ আগস্ট : রবিবার গন্ডাছড়ার ধ্বংসলীলা সরজমিনে দেখতে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। ঘটনা ঘটেছিল গত ১২ জুলাই। সেই ক্ষত শুকায়নি আজ ২৩ দিনেও।  স্যন্দন পত্রিকা ও স্যন্দন টিভিতে সম্প্রতি খবরও প্রকাশিত হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর দেখা চাইছে সর্বহারা মানুষ। অবশেষে শনিবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেন গন্ডাছড়া পরিদর্শনে যাওয়ার। তারপরই শুরু হয় প্রশাসনিক তৎপরতা, শরণার্থী শিবিরে গিয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করে প্রশাসনিক আধিকারিকরা। রাত জেগেও কাজ করেছেন অনেক প্রশাসনিক কর্মী।

বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার গুলিতে গিয়েও মানুষের খোঁজখবর নেন প্রশাসনিক কর্মীরা। শুরু হয় পুলিশ প্রশাসনেরও দৌড়ঝাঁপ। নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয় গোটা মহকুমা। থানা ওসি থেকে শুরু করে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক এবং জেলা পুলিশ সুপারের ব্যস্ততা ছিল এদিন চূড়ান্ত। তারপর রবিবার তিনি সকালবেলা মুখ্য সচিব জে কে সিনহা, রাজ্য পুলিশের মহা নির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন সহ বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে গন্ডাছড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ত্রিশ কার্ড, নারায়নপুর বাজার, শরণার্থী শিবির সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন। কথা বলেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সাথে। পরে পরমেশ্বর রিয়াং -এর পরিবারের সাথে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী। শুরু থেকে শেষ গোটা ঘটনার সম্পর্কে অবগত হন তিনি। পরবর্তী সময়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে মুখ্যমন্ত্রী জানান গত সাত জুলাই আনন্দ মেলাকে কেন্দ্র করে এক দুর্ঘটনা ঘটে। পরমেশ্বর রিয়াং নামে এক যুবক আহত হয়েছিল।

জিবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১২ জুলাই মৃত্যু হয় তার। পরবর্তী সময়ে তার মৃতদেহ গন্ডাছড়ায় আনার পর বহু বাড়িঘর আক্রান্ত হয়েছে। সেই ঘটনাগুলো সম্পর্কে অবগত হয়ে ৩০ কার্ড এলাকায় সিকিউরিটি ক্যাম্প বসানোর চিন্তাভাবনা নেওয়া হয়েছে। এম আর দাসপাড়া, রামনগর এলাকা গুলিতে নিরাপত্তা আরো বেশি কঠোর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আর্থিক সহযোগিতার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। মৃত পরমেশ্বরে পরিবারকে আগে ছয় লক্ষাধিক টাকা দেওয়া হয়েছিল সরকারিভাবে, তার পরিবারের জন্য আরো চার লক্ষাধিক টাকা দেওয়া হবে। গন্ডাছড়া এসে লক্ষ্য করা গেছে ১০১ টি পরিবার পুরোপুরিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের পরিবারকে প্রথম পর্যায়ে পঁচানব্বই হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। আরো দুই লক্ষাধিক টাকা সহ সর্বমোট তিন লক্ষাধিক টাকা তাদের সরকারি সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তারপর যেসব পরিবার বাড়ি ঘর ক্ষতি হওয়ার জন্য প্রথম পর্যায়ে ৫০ হাজার টাকা করে সরকারি সহযোগিতা পেয়েছিল তাদের জন্য সরকার আরো এক লক্ষাধিক টাকা আর্থিক সহযোগিতা ঘোষণা করছে। অপরদিকে ৩১ টি পরিবার প্রথম পর্যায়ের ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছিল সেসব পরিবারকে আরো ২৫ হাজার টাকা করে তাদের সহযোগিতা করা হবে। একই সাথে যেসব পরিবার কুড়ি হাজার টাকা, ১৫ হাজার টাকা, ১০ হাজার টাকা এবং ৫০০০ টাকা করে প্রথম পর্যায়ে সহযোগিতা পেয়েছে সেসব পরিবারকে আরো একই অর্থ রাশি আর্থিক সহযোগিতা হিসেবে দেওয়া হবে। সর্বমোট ১৪৫ পরিবারকে সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে। এতে সরকারের পূর্বের আর্থিক সরকারি ঘোষণা থেকেও অতিরিক্ত ২ কোটি ৩০ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা বেশি ব্যয় হবে। সর্বমোট ৩০ কোর্টে ৪৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ব্যয় হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী গন্ডাছড়ার উন্নয়ন প্রসঙ্গেও এদিন একাধিক বিষয় ঘোষণা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন নিউ কনস্ট্রাকশন নারায়নপুর মার্কেটের জন্য ৩০ টি মার্কেট স্টল করা হবে। এর জন্য সরকারের ব্যয় হবে এক কোটি টাকা। অপরদিকে সুপার মার্কেটটি আরো এক কোটি টাকা ব্যয় করে সংস্কার করা হবে। স্টিট লাইট, রাস্তার ড্রিম সহ বিভিন্ন উন্নয়নের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। আমবাসা থেকে গন্ডাছড়া রাস্তার জন্য ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। জমাতিয়া থেকে ডুম্বুর নগর রাস্তার জন্য ৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় করা হবে। গন্ডাছড়া স্কুলে ফুটবল গ্রাউন্ড এর জন্য ছয় কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন শান্তি ছাড়া কোন দেশ বা রাজ্য এগিয়ে যেতে পারে না। সাবকা সাথ সবকা বিকাশ – এই মূল মন্ত্রকে পাথেয় করে এই সরকার এগিয়ে যাচ্ছে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য