স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২ জুলাই : বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে প্রবেশ করে গুন্ডামিতে আহত আটজন ছাত্রী। আহত ছাত্রীরা ধর্মনগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জানা যায়, শিক্ষক বদলির প্রতিবাদে ধর্মনগর – কৈলাশহর মূল সড়ক অবরোধ করেছিল ছাত্র-ছাত্রীরা। আর এতেই তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল স্থানীয় নেতারা আক্রমণ করল ছাত্র-ছাত্রীদের উপর। এই কলঙ্কিত ঘটনা সংগঠিত হয়েছে আনন্দবাজার জীবন ত্রিপুরা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। অভিযোগ ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষক বদলির প্রতিবাদে মঙ্গলবার রাস্তা অবরোধ করতে গেলে বিজেপি নেতা কান্তি গোপাল নাথ সহ অন্যান্যদের মারে ছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে ধর্মনগর জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কাঞ্চনপুর থেকে বগত তিন মাস পূর্বে ব্রজলাল নাথ নামে একজন শিক্ষক বদলি হয়ে আনন্দবাজার জীবন ত্রিপুরা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় আসেন। ছাত্র-ছাত্রীদের মতে তিনি এই বিদ্যালয়ে আসার পর সেই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা বিশেষ ক্লাস এবং সাহায্যের জন্য ওই স্যারের প্রতি দুর্বলতা দেখা দেয়। স্কুল পড়ুয়া জানান ঐ শিক্ষক বিদ্যালয় আসার পর থেকে বিভিন্ন বিষয়ে তাদের পড়াশোনা ভালো চলছিল। অভিযোগ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং স্কুল পরিচালন কমিটির কিছু সদস্যরা এই ব্যাপারটি একেবারে ভালো চোখে দেখেনি। তাই মাত্র তিন মাসের মধ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ব্রজলাল নাথের বিরুদ্ধে বদলির নোটিশ ধরিয়া দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভ সোমবার থেকে শুরু হয়। মঙ্গলবারে বিদ্যালয়ের ফটকে তাঁরা তালা ঝুলিয়ে দিয়ে আনন্দবাজার এলাকায় অবরোধে বসে। তখন ধর্মনগর থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয় এবং বিদ্যালয়ের আইএস ঘটনা পর্যবেক্ষণ করতে যান। কিন্তু এলাকার নেতা কান্তি গোপাল নাথ, এলাকার শক্তি কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্দ্র মনি নাথ, নারায়ণ নাথ এবং দেবাশীষ নাথের গুন্ডামিতে ছাত্র-ছাত্রীরা অবরোধ স্থল ত্যাগ করে বিদ্যালয়ের কক্ষে ফিরে যেতে বাধ্য হয়।
পরে বিদ্যালয়ের কক্ষে গিয়ে তাদেরকে উচ্চ স্বরে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। পাশাপাশি কান্তি গোপাল নাথ সহ তার সঙ্গপাঙ্গরা অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এমনকি দেবাশীষ নাথ কয়েকজন ছাত্রীকে মারধর করে বলেও দাবি ছাত্র-ছাত্রীদের। এতে আটজন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে ধর্মনগর অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর কর্মীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে সংজ্ঞাহীন ছাত্রীদের উদ্ধার করে উত্তর জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে। এই ঘটনায় ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি অভিভাবক মহল চূড়ান্ত ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং কান্তি গোপাল নাথ, দেবাশীষ নাথ, ইন্দ্র মনি নাথ ও নারায়ন নাথের বিরুদ্ধে ধর্মনগর থানায় মামলা করবেন বলে জানান। ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে তাদের প্রতিও গুন্ডাবাহিনীরা আক্রমণ করবে বলে প্রস্তুতি নেয়।
সাংবাদিকরা ঘটনা প্রতিকূল দেখে এলাকা স্থল পরিত্যাগ করে চলে আসে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের শুধুমাত্র দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছে এখনই যুবরাজনগর বিধানসভা কেন্দ্রে শাসক দলের আশ্রিত কয়েকজন গুন্ডার কারণে ছাত্র ছাত্রী অভিভাবক প্রত্যেকেই অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এলাকার ছাত্রছাত্রী সহ অভিভাবক মহলের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। উল্লেখ্য, গণতান্ত্রিক দেশে মানুষের অধিকার রয়েছে মৌলিক দাবির জন্য রাস্তায় নেমে সরকারের উদ্দেশ্যে আন্দোলন সংঘটিত করার। যাতে সরকার জনগণ কি দাবি করছে সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে গুরুত্ব দেয়। কিন্তু এর পরিণাম এটা হতে পারে না নেতা লেলিয়ে দিয়ে অবুঝ ছাত্রছাত্রীদের উপর আক্রমণ সংঘটিত করার। এতে সুশাসন যেমন কলঙ্কিত হয়, তেমনি কালিমা লিপ্ত হয় রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা।