স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১ জুলাই : দেশজুড়ে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি বাতিল করার দাবিতে এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি সারা দেশে আগামী ৪ জুলাই ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। রাজ্য এ ধর্মঘট পালন করা হবে। সোমবার ছাত্র যুব ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ কথা জানান এস এফ আই রাজ্য সম্পাদক সন্দীপন দেব। এস এফ আই এবং টি এস ইউ কর্তৃক আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, নীট পরীক্ষা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ উঠেছে।
পরবর্তী সময়ে সেই অভিযোগের সততা প্রমাণ হয়। বর্তমানে দেখা গেছে চারটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা সরকার বাতিল করেছে। দেশের লক্ষ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রীর ভবিষ্যৎ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। অর্থনৈতিকভাবেও তারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। দেশের শিক্ষা মন্ত্রক এবং শিক্ষা মন্ত্রীর মূল লক্ষ্য হলো ‘ওয়ান ন্যাশন ওয়ান এক্সাম।’ যা ভারতবর্ষের মধ্যে করা সম্ভব নয়। আর এই সুযোগ নিয়ে দেশের বিভিন্ন কোচিং সেন্টার ব্যবসা চলছে। ফলে গরিব ঘরের ছেলে মেয়েদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ দিন দিন সংকুচিত হয়ে আসছে। প্রথম থেকে ভারতের ছাত্র ফেডারেশনের বিরোধিতা ও প্রতিবাদ করে আসছে। বিশেষ করে দাবি করা হচ্ছে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সিকে বাতিল করে সম্প্রতি বিভিন্ন পরীক্ষার ক্ষেত্রে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করার জন্য। পাশাপাশি এই দায় না এড়িয়ে দেশের শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে পদত্যাগ করার জন্য। কারন শিক্ষা মন্ত্রীও চেষ্টা করছেন এই বিভিন্ন পরিক্ষার দুর্নীতি আড়াল করার জন্য। এর প্রতিবাদ জানিয়ে ৪ জুলাই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। রাজ্য এর সাথে সংযুক্ত হবে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাও। কারণ বর্তমান সরকার ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর রাজ্যের ৯৬১ টি স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তারপর ছাত্র-ছাত্রী ও মানুষকে নিয়ে সম্মিলিত প্রতিবাদ করার পর সরকার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। কিন্তু বর্তমানে আবার বহু স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার অভ্যন্তরীণ চেষ্টা করছে সরকার। তাই সরকারের উদ্দেশ্যে প্রথম থেকে দাবি যাতে যেসব ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যাচ্ছে না তাদের খুঁজে বের করে স্কুলমুখী করা জন্য।
এবং যেসব স্কুলে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা অনেক কম সেসব স্কুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে শিক্ষক নিয়োগ করে শিক্ষা পরিকাঠামো ঢেলে সাজানোর জন্য। কারণ দিন দিন ড্রপ আউট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু সরকার এদিকে কোন কর্ণপাতই করছে না। সরকার বহু স্কুল বন্ধ করে এবং শিক্ষকের শুন্য পদ অবলুপ্ত করে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে চাইছে। তিনি আরো বলেন, বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্প দিন দিন মুখ থুবড়ে পড়ছে। ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যাজ্যোতি স্কুলে পড়াশোনা করতে চাইছে না। আগামী দিনে তাদের বোর্ড পরীক্ষা ইংরেজি মাধ্যমে দিতে হবে বলে তারা বাধ্য হয়ে বিদ্যাজ্যোতি স্কুল ছেড়ে অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে। এর জন্য দায়ী বর্তমান সরকার। এই সরকারের জন্য ছাত্রছাত্রীরা বিপাকে পড়ে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে বলে তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। এর পাশাপাশি পাঠ্যপুস্তক প্রদানে বিলম্বের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছেন তিনি। স্কুলে দ্রুত পাঠ্যপুস্তক প্রদান করা দাবি জানান। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এস এফ আই ও এবং টি এস ইউ রাজ্য কমিটির অন্যান্য নেতৃত্ব।