স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৬ জুন : রাজ্য সরকার রাজ্যের ১৬০ টি বিদ্যালয়কে বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই পরিকল্পনা গ্রহণের বিষয়টি সামনে আসার পর বিদ্যালয়গুলো বন্ধ হয়ে গেলে কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে সেই সমস্ত বিষয় নিয়ে শুরু হয়ে যায় চুলচেরা বিশ্লেষণ। রাজ্যের কোন কোন স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হবে তার একটি তালিকা খুব শীঘ্রই বের হতে যাচ্ছে। আর সেই আশঙ্কাকে সামনে রেখে গোলাঘাটি বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত যুগল কিশোর নগর এসবি স্কুলে বুধবার স্থানীয় এলাকাবাসী, বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী সহ তাঁদের অভিভাবক এবং বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটি একটি জরুরী সভার আয়োজন করে।
যুগল কিশোর নগর এস বি এস স্কুল পরিচালন কমিটির কাছে একটি খবর এসেছে যে যুগলকিশোর নগর এস বি স্কুলটিও বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। সেই বিষয়টিকে সামনে রেখেই এদিন দুপুরে বিদ্যালয়ে এই জরুরী সভার আয়োজন করা হয়। সভায় স্থানীয় এলাকাবাসীরা সহ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা মত প্রকাশ করে যে, এই এলাকার বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীরা গরীব অংশের। তাই এই বিদ্যালয়টি বন্ধ করে দেওয়া হলে দূরের কোনো স্কুলে গিয়ে পড়াশুনা করা সম্ভব হবে না তাদের। তাই এই স্কুলটিকে বহাল রাখতে সরকারি নিয়ম অনুসারে যা যা পূরণ করতে হয় তা সবকিছুই পূরণ করবে স্থানীয় এলাকাবাসী সহ বিদ্যালয় পরিচালন কমিটি। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীরা সহ বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির চেয়ারম্যান বিজন দেববর্মা জানিয়েছেন এলাকার গরিব অংশের ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে বিদ্যালয়টি বহাল রাখা অত্যন্ত জরুরি। তিনি আরো জানিয়েছেন যুগল কিশোর নগর থেকে টেলরবন উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব কমপক্ষে পাঁচ কিলোমিটার।
আর সেখানে গিয়ে এলাকার ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এদিন সবাই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে দাবি জানিয়েছেন তাদের এলাকার যুবক কিশোর নগর এসবি স্কুলটি বাহাল রাখার জন্য। কেননা এই স্কুলটি হলে এলাকার গরিব ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার দিক দিয়ে বড়সড় ক্ষতি হবে। শুধুমাত্র যুগল কিশোর নগর এসবি স্কুলটি নয়, এডিসি এলাকাতে এমন বহু স্কুল রয়েছে যেগুলো বন্ধ করে দিলে সেই সমস্ত স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের বড় স্কুলে গিয়ে পড়াশুনা করতে যাতায়াতের প্রবল সমস্যা হবে। কারণে হয়তো তাদের পঠন পাঠন এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা করছে তাদের অভিভাবকরা। উল্লেখ্য, ১৬০ টি স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে ১০৯৯ টি শূন্যপদ অবলুপ্ত হয়ে যাবে। এই ১৬০ স্কুলের মধ্যে পাঠরত রয়েছে ৩৩০৭ জন ছাত্রছাত্রী। এই স্কুলগুলিকে সর্বোচ্চ পাঁচ কিলোমিটার দূরবর্তী স্কুলের সাথে সংযুক্তিকরণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই একত্রিকরণের জন্য চিহ্নিত ৯৫ টি স্কুলের কোনও সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই। শুধু তাই নয়, রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলোতেও স্কুল একত্রিকরণের জন্য লম্বা তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। দপ্তর সূত্রে খবর, নতুন করে ধাপে ধাপে একত্রিকরণের অজুহাতে প্রায় ১৮৮টি স্কুলকে বন্ধ করা হবে। পাশাপাশি এডিসি এলাকার প্রায় ৫৮৮টি স্কুল রয়েছে। কারণ এই ৫৮৮টি স্কুলে একজনও শিক্ষক নেই।