স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৩ জুন : প্রহসনাত্মকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন সাত রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক দীপক মজুমদার। এডজাস্টিং অ্যাক্ট ভায়োলেট করে তাঁকে বিধায়ক পদে বসানো হয়েছে। কোন স্বচ্ছতার ছিল না এর মধ্যে। কারণ আইনের রয়েছে কোন ব্যক্তি যদি সাংবিধানিক পদে থাকেন তাহলে তাকে সেই সাংবিধানিক পদ থেকে ইস্তাফা দিয়ে তারপর বিধায়ক পদে শপথ নিতে হয়। কিন্তু সেই নিয়ম-নীতির মান্যতা দেয়নি বর্তমান সরকার। তাই এর বিরোধিতা করছে সিপিআইএম। বিষয়টি নিয়ে আইনি দিক বিচার বিবেচনা করে দেখা হবে বলে রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান বিরোধী দলনেতার জিতেন্দ্র চৌধুরী।
সিপিআইএম রাজ্য কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি বলেন, রাজ্যে কাজ এবং খাদ্যের চরম অভাব সৃষ্টি হয়ে আছে। গত দুর্গাপূজা আগে যে রেগার কাজ হয়েছিল, সেই কাজের টাকা এখনো বকেয়া রয়ে গেছে শ্রমিকদের। বর্তমানে রেগার কাজ পুরোপুরিভাবেই বন্ধ বলা চলে। এই বিষয়ে ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসারদের সাথে কথা বললে তারা জানান গত চার জুন মডেল কোড অফ কন্টাক্ট শেষ হওয়ার পর নাকি ৬ তারিখের মধ্যে লক্ষ লক্ষ কাজ হয়ে গেছে। এটা কোনভাবেই গ্রহণ যোগ্য নয়। আসলে শাসকদল বিজয় উল্লাসে এই মজুরি নয়ছয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেন জিতেন্দ্র চৌধুরী। তিনি আরো বলেন সরকার ১০০ দিনের গ্যারান্টি অনুযায়ী কাজের ব্যবস্থা করতে দাবি জানানো হচ্ছে। কারণ মানুষের অভাব অনটন চরম আকার ধারণ করেছে। সাংবাদিক সম্মেলনে বিরোধী দলনেতা আরো বলেন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সময় প্রায় ৯ শতাধিক স্কুল বন্ধ করা হয়েছিল।
বর্তমানে পশ্চিম জেলায় আরো ১৬০ টি স্কুল বন্ধ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। আবার এ সরকার বলছে সাবকা সাথ, সবকা বিকাশ। কিন্তু শিক্ষা ছাড়া বিকাশ সম্ভব নয়। আর সরকার শিক্ষা ধ্বংস করে দিচ্ছে। এবং এই সরকার বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্প দিয়েও রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। বিদ্যাজ্যোতি স্কুলগুলিও সুপার ফ্লপ হয়েছে। কারণ কোটি কোটি টাকা ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করে এ সরকার বিদ্যাজ্যোতির নামে সদ্ব্যবহার করে নি। যা ফলাফলের মাধ্যমে প্রতিফলন ঘটেছে। এর প্রতিবাদ জানায় সিপিআইএম। তাই সরকারের উদ্দেশ্যে দাবী জানানো হচ্ছে এর থেকে যাতে আগামী দিন বিরত থাকে। বেকার প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা বলেন, গত তিন বছর ধরে বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা একই শূন্য পদ নিয়ে বারবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। পরবর্তী সময় দেখা যায় সেই ইন্টারভিউ হয়তো বাতিল হয়ে যাচ্ছে, নয়তো ইন্টারভিউ ফলাফল ঘোষণা করা হয় না। এতে করে বিভিন্ন দপ্তরের শূন্য পদ পরে থাকায় জনগণের পরিষেবা মুখ থুবড়ে পড়েছে। বেকারদের তাচ্ছিল্য করা এই সরকারের জলভাত হয়ে গেছে বলে জানান তিনি। আরো অভিযোগ তুলেন আউটসোর্সিং নিয়ে। পেছনে দরজা দিয়ে নিয়োগ করার নীতি নিয়ে আঙ্গুল তুলেন সরকারের দিকে বিরোধী দলনেতা। রাজ্যে বর্তমানে নির্বাচনী পরিবেশ নেই বলে সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, লোকসভা নির্বাচনে অনৈতিকভাবে ক্ষমতায় এসেছে এই সরকার। রাজ্যেও জয় হয়েছে দুটি আসনে। কিন্তু জনগণের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্য তারা মানুষের উপর ভরসা করতে পারছে না। তাই নির্বাচন দপ্তরের কাছে এবং মুখ্য সচিবের কাছে দাবী জানানো হচ্ছে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন করার সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য। সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকলে নির্বাচন বিগত দিনের মতো প্রহসনাত্মক হবে। তিনি আরো দাবি জানান, নির্বাচনে যারা মনোনয়নপত্র দাখিল করবে তাদের পুরোপুরি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা এবং প্রয়োজনে তারা যাতে ইমেইলের মাধ্যমে মনোনয়নপত্র রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা করা। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য পবিত্র কর ও সুধন দাস।