Sunday, January 26, 2025
বাড়িরাজ্যসালিশি সভায় জন্মদাতা পিতার সামনে বিবাহিত মেয়েকে স্বামীর কোপাতে দেখে মৃত্যু হল...

সালিশি সভায় জন্মদাতা পিতার সামনে বিবাহিত মেয়েকে স্বামীর কোপাতে দেখে মৃত্যু হল পিতার

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৩ মে : বহু আশা নিয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন স্বামীর ঘরে গিয়ে মেয়ে তার নতুন জীবন শুরু করবে। কিন্তু বিয়ের পর মেয়ের জামাতার আসল রূপ সামনে আসে। মেয়ের উপর পাষন্ড স্বামী প্রতিনিয়ত অত্যাচার করত। আর চোখ এড়িয়ে কোন ভাবেই সহ্য করতে পারছিলেন না অসহায় পিতা। সোমবারও যখন অভিযুক্ত মেয়ের জামাতা নিকৃষ্ট কান্ডের বিরুদ্ধে সালিশি সভা চলছিল তখন অভিযুক্ত স্বামী গৃহবধূকে কুপাতে শুরু করে। আর এই বিভৎস দৃশ্য দেখে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলো গৃহবধুর পিতার।

ঘটনা খোয়াই থানাধীন উত্তর দুর্গানগর গ্রামে। জানা যায় বিয়ের পর থেকেই মেয়ের সংসারে অশান্তির চলছিল। এ নিয়ে সোমবার সালিশী সভার মধ্যেই স্বামীর দায়ের কোপে রক্তাক্ত হলো স্ত্রী। ঘটনার বীভৎসতা দেখে ঘটনাস্থলেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলেন শ্বশুর। ঘটনার কিছু সময়ের মধ্যেই খোয়াই মহিলা থানার পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী অনুপ সেনকে গ্রেফতার করে। আর অন্যদিকে দায়ের কোপে মারাত্মক জখম গৃহবধূ জয়া দাসকে খোয়াই জেলা হাসপাতাল থেকে পাঠানো হয় জিবি হাসপাতালে। মাত্র বছর দেড়েক পূর্বে খোয়াই উত্তর দুর্গানগরের যুবক অনুপ সেনের সঙ্গে সামাজিকভাবে বিয়ে হয়েছিল আগরতলা পূর্ব থানার শানমুড়া এলাকার বাসিন্দা নিরুলাল দাসের মেয়ে জয়া দাসের। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই অনুপ তার স্ত্রীকে সন্দেহ করতো পরকীয়া নিয়ে।

ইতিপূর্বেও বেশ কয়েকবার এই গৃহবধূটিকে তার শ্বশুর বাড়িতে মারধর করা হয়েছিল। আর এ নিয়ে বেশ কয়েকবার এলাকার মানুষজনদের নিয়ে সালিশি সভাও হয়। কিছুদিন ঠিকঠাক থাকার পর পুনরায় শুরু হতো স্ত্রীর উপর নির্মম অত্যাচার। গৃহবধূ জয়া দাস জানিয়েছে, ক্রমান্বয়ে তাকে মারধর করার ঘটনা নিয়ে সোমবার বিকেল তিনটায় উত্তর দুর্গানগর তার শ্বশুরবাড়িতে একটি সালিশি সভা হয়। এই সভায় গৃহবধূর পিতা নিরুলাল দাস, তার দুই মামা সহ এলাকার কাউন্সিলর এবং পাড়াপড়শিরা ছিলেন। সালিশি সভায় সিদ্ধান্ত হয় গৃহবধূ জয়া দাস কিছুদিনের জন্য বাপের বাড়ি চলে যাবে। স্বামী অনুপ সেনের মানসিকতা ঠিক হলে তখন সে আবার আসবে।

সালিশি সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে গৃহবধূ জয়া দাস যখন বাড়ি যাবার উদ্দেশ্যে শাড়ি পরছিল ঠিক তখন পেছন থেকে অনুপ সেন একটি দা দিয়ে স্ত্রীর মাথায় কোপ বসিয়ে দেয়। ঘটনার পর রক্তাক্ত হয়ে গৃহবধূটির মাটিতে পড়ে গেলে তা দেখে মেয়ের বাবা নিরু লাল দাস মেয়ের শ্বশুর বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। ঘটনার পর উভয়কে খোয়াই জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। দায়ের কোপে জখম গৃহবধূটির মাথায় ১০-১২ টি সেলাই লাগে। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে পাঠানো হয় জিবি হাসপাতালে। হাসপাতালে থাকাকালীন অবস্থায় জয়া দাস জানতে পারেনি তার বাবা নিরোলাল দাস হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। উল্লেখ্য গৃহবধূ জয়া দাসের পাঁচ মাসের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে উত্তর দুর্গানগর এলাকায় ব্যাপক শোকের ছায়া নেমে আসে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য