স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২১ ফেব্রুয়ারি। চমকের পর চমক দেখিয়ে চলেছেন মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক সুশান্ত চৌধুরী। ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিআই(এম) দলে একের পর এক ভাঙন অব্যাহত। বামেদের পক্ষে কিছুতেই আটকানো সম্ভব হচ্ছে সুশান্ত চৌধুরীকে। সোমবার বিকেলে আবারও মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের মজলিশপুর পঞ্চায়েতের ১২৭ টি পরিবারের ৩৫৭ জন দীর্ঘবছরের কট্টর সিপিআই(এম) সমর্থক সিপিআই(এম) দল ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগদান করেন। সিপিআই(এম) দলের প্রতি আস্থা হারিয়ে এরা বিজেপিতে যোগ দিলেন বলে যোগদান সভায় জানালেন দলত্যাগীরা। এই দলবদলের মাধ্যমে মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী তাঁর বিরোধী প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে কে বুঝিয়ে দিলেন তার বিধানসভা কেন্দ্রে মানিক দে এখন নখদন্তহীন বুড়ো বাঘ! মানিক দে’র পক্ষে মজলিশপুরে ঘুরে দাঁড়ানো আর সম্ভব হবে না। মজলিশপুরে সুশান্ত চৌধুরী এখন একমেবাদ্বিতীয়ম।
গত চার বছরে রাজ্য সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সাধারণ মানুষের উন্নয়নে কি কি কাজ করেছে তা আজ আবারো যোগদান সভায় উপস্থিত দলীয় কর্মী সমর্থকদের সামনে তুলে ধরেন তিনি। মজলিশপুরে বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি এলাকার উন্নয়নে কী কী কাজ করেছেন তা আজ তার প্রদত্ত ভাষণে তোলে ধরেন। সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে নেতা–কর্মীরা সুশান্ত চৌধুরীর জনকল্যাণমূলক কাজ ও নেতৃত্বর প্রতি আস্থা জানিয়ে বিজেপিতে যোগদান করে চলেছেন। আজকেও কিন্তু তার ব্যতিক্রম হল না বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিআই(এম) দলের ঘরে ভাঙন শুরু হয়ে যায়। রোজই এখন দেখা যাচ্ছে সিপিআই(এম) দল ছেড়ে শয়ে শয়ে কর্মী–সমর্থক থেকে শুরু করে নেতারা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। আর তাতে এই বিধানসভা কেন্দ্রে বিরোধী দলগুলোর সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়ছে। স্থানীয় মন্ডল নেতৃত্বদের সাথে শলা-পরামর্শ করে সিপিআই (এম) দল থেকে বাছাই করা স্বচ্ছ ইমেজের কর্মীদের দলে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন বুথে যোগদান সভার মাধ্যমে।
আজকের যোগদান সভায় দলত্যাগীদের বক্তব্য, তাঁরা দীর্ঘবছর ধরে সিপিআই(এম) দলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে কাজ করলেও সেই দলে যোগ্য সম্মান পাননি। এজন্যই তারা আজ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ৷ দলত্যাগীদের অভিযোগ, বিগত সরকারের আমলে সিপিআই(এম)দলের নেতারা ব্যাপকভাবে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতি করতেন। কোনো রকম উন্নয়নমূলক কাজ হতো না গোটা এলাকায়। দুর্নীতি এবং গুন্ডা রাজ চলতো মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রে। বিভিন্ন সময়ে প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে’র সরকারী আবাসে ওনার সাথে দেখা করতে গেলে চরম অপমানিত হতে হতো।
মজলিশপুর কেন্দ্রের বিধায়ক সুশান্ত চৌধুরীর অনুপ্রেরণায় তাঁরা রাজ্যের এবং গোটা মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উন্নয়নযজ্ঞে শামিল হতে চান। মজলিশপুরের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে, বিধায়ক সুশান্ত চৌধুরীর হাতকে আরও মজবুত করতে তারা ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেছেন। তাদের বক্তব্য, বর্তমান বিধায়ক দলমত নির্বিশেষে এলাকার মানুষের উন্নয়ন করে চলেছেন। বিভিন্ন ধরণের সরকারী সুযোগ সুবিধা প্রদানে এখন আর বাম আমলের মতো দলবাজী ও স্বজন পোষণ করা হয়না। মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের সকল স্তরের মানুষ বর্তমান সরকারের উন্নয়নের সুফল পাচ্ছেন। তাই বর্তমান সরকারের উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে শামিল হতেই তাঁরা সিপিআই(এম) ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন।
এদিন দলত্যাগীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিয়ে তাদের দলে স্বাগত জানিয়ে বিধায়ক সুশান্ত চৌধুরী বলেন, সিপিআই(এম) দলেও কিছু ভালো মানুষ আছেন। বিবেকের তাড়নায় তারা এখন নিজেদের ভুল বুঝতে পারছেন।মানুষ বুঝতে পারছে যে সিপিআই(এম) ও তাদের ছদ্মবেশী বন্ধু কংগ্রেসের অশুভ মিতালী বা সুযোগসন্ধানীপরিযায়ী পাখী তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের সমস্যা মেটাতে পারবে না। এদের অশুভ জোট রাজ্যের বিবেকবাণ মানুষ মেনে নেবেন না। তাই মানুষ বিজেপি দলের প্রতিই আস্থা রাখছেন। সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছেন “সবকা সাথ সবকা বিকাশ” তত্ত্বের মাধ্যমে বর্তমানে রাজ্যের মানুষের সমস্যা দূর করতে পারবে একমাত্র ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার। আজকের যোগদান সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মজলিশপুর মন্ডলের সভাপতি গৌরাঙ্গ ভৌমিক,জিরানিয়া পঞ্চায়েত সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান প্রীতম দেবনাথ সহ অন্যান্য নেতৃবর্গ ও কার্যকর্তারা।