স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৩ জানুয়ারি : মাঝে আর একদিন। সোমবার পৌষ সংক্রান্তি। পিঠে পুলির জন্য প্রয়োজন হয় লালি এবং খেজুরের গুড়ের৷ গাছিরা কোমরে দড়ি বেঁধে খেজুর গাছে উঠে গেছে রস সংগ্রহ করার জন্য। হাতের ধারালো কাচি দিয়ে গাছের বিশেষ অংশ কেটে সেখান হাঁড়ি বসিয়ে রস সংগ্রহ করেন তারা৷ আপাতভাবে সহজ মনে হলেও সুস্বাদু খেজুরের গুড় বা লালি তৈরি করা মোটেও সহজ কাজ নয়৷
বিশেষভাবে নির্মিত চুলায় নির্দিষ্ট সময় ধরে আঁচ দিয়ে তৈরি হয় গুড় বা লালির রস৷ এ জন্য দরকার হয় প্রচুর লাকড়ি। যা কেনা ব্যয় সাধ্য৷ এককথায় পরিবারের প্রাচীন পেশা টিকিয়ে রেখে জীবন যাপন করা এক প্রকার অসম্ভব হয়ে পড়েছে৷ এ কাজ তারা দুই বা তিন মাস করে, বাকী সময় অন্য পেশায় যুক্ত থেকেই বাঁচতে হয় অকপট জানালেন প্রায় তিন দশকের গাছি জগবন্ধু দেবনাথ ৷ কাঁকড়াবন সুরেন্দ্রনগরের বাসিন্দা জগবন্ধু আর তার মা হেমলতা দেবনাথ মিলে চালিয়ে যাচ্ছেন এই পারিবারিক পেশা। তাদের কথায় যে পরিশ্রম এবং খরচ করে গুড় বা লালি তৈরি করা হয় তা থেকে বেশী পয়সা রোজগার করা একপ্রকার দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে৷ তবুও ঐতিহ্যের টানেই একাজে জুড়ে আছেন বলে জানান ৷
পরিবার প্রতিপালন করে দ্বাদশ শ্রেণীতে পাঠরতা মেয়ে রেসমি এবং দশম শ্রেণীতে পাঠরত ছেলে অঙ্কুরের পড়া চালিয়ে যাওয়া অসাধ্য বলেই জানালেন জগবন্ধু ৷ আগামী দিনে কী করবেন ? দীর্ঘ সময়ের এই পেশা আজ অনেকটাই বন্ধের পথে৷ তথ্য দিয়ে জানালেন বহু অঞ্চলে খেজুর গাছ থাকলেও অনিশ্চিত পেশায় আসতে চাইছে না নতুন প্রজন্ম৷ আগামী দিনে গাছিরা থাকবেন না, নাকি অবলুপ্ত হয়ে যাবে তা অবশ্য তারা বলতে পারছেন না ৷ তবে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, একথা জেনেও খেজুরের গুড় বা লালি তৈরি করে যেতে চায় জগবন্ধু ও হেমলতাদেবী ৷