স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ ফেব্রুয়ারি : দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে চলেছে টি এস আর জওয়ানরা। কিন্তু কখনো কখনো তাদের মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে হয়। তাই জওয়ানরা যাতে মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ে তার জন্য তাদের পরিকাঠামোগত সমস্ত কিছু সঠিকভাবে রয়েছে কিনা তা পরিদর্শন শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবং জওয়ানরা যাতে উৎসাহের সাথে নিজেদের দায়িত্ব পালন করে তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী দেখা করে তাদের কথা শোনার উদ্যোগ নিয়েছেন।
শুক্রবার দক্ষিন জেলার শান্তিরবাজার মহকুমার টিএসআর নবম বাহিনীর অন্তর্গত কোয়াইফাং পোস্ট পরিদর্শন যান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। পোস্টে জওয়ানদের থাকার ব্যবস্থা সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা গুলি সম্পর্কে অবগত হন মুখ্যমন্ত্রী। ঘুরে দেখেন পোস্টটি। কথা বলেন টি এস আর নবম ব্যাটেলিয়ানের জওয়ানদের সঙ্গে। জওয়ানরা যেভাবে রাজ্যে ও রাজ্যের বাইরে দক্ষতার সঙ্গে সাফল্যে নজির স্থাপন করে চলেছে, তেমনি তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ের প্রতিও আন্তরিক সরকার। সৈনিক সম্মেলনে দীর্ঘ কর্মজীবনে নিজেদের সঞ্চিত অভিজ্ঞতায় জওয়ানরা জানিয়েছে – যে বেতনের উর্দ্ধমুখীতা, পদোন্নতি, পোশাকের নতুনত্ব সহ বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপ তাঁদের মনোবলকে অনেকটাই চাঙ্গা করেছে। প্রথম প্রচেষ্টায় নানান সংশয় কাটিয়ে বর্তমানে রাজ্যের বাইরেও কর্তব্যপালনে জওয়ানরা স্বেচ্ছায় আগ্রহী বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে যান সাব্রুম মহকুমার অধীনে থাকা বাগমারা পোষ্টে। সেখানেও অনুরূপ ভাবে জওয়ানদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা গুলি সম্পর্কে অবগত হন মুখ্যমন্ত্রী। সংস্কার কাজগুলি দ্রুত করার নির্দেশ দেন।
কারণ যারা নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে তাদের সুযোগ-সুবিধা দিকে সরকার বদ্ধপরিকর। পাশাপাশি এদিন মুখ্যমন্ত্রী জওয়ানদের রেশনিং ব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন। এদিন সব শেষে যান বিলোনিয়ার মহকুমার অন্তর্গত ইচাছড়ার টি এস আর নবম বাহিনীর প্রধান কার্যালয়ে। সেখানে গিয়ে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশি ব্যবস্থাকে আধুনিকিকরনের জন্য কাজ করছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে একটি ফান্ড প্রতিবছর প্রদান করা হয়। ত্রিপুরা পুলিশ ও টি এস আর-এ অনেক কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। পুলিশি ব্যবস্থা পরিবর্তন করা হয়েছে। তাদের পেট্রোলিং- ও পরিবর্তিত হয়েছে। মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে। রাজ্য ছোট হলেও রাজ্যের পুলিশ ও টি এস আর দায়িত্ব সম্পর্কে গোটা দেশে মান্যতা আছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলে নেশার বিরুদ্ধে অভিযান সর্ব প্রথম ত্রিপুরা পুলিশ ব্যাপক ভাবে শুরু করেছে। প্রতিদিন কোন না কোন স্থান থেকে নেশা পাচারকারীকে আটক করা হচ্ছে। উদ্ধার হচ্ছে নেশা সামগ্রী। মহিলাদের উপর নির্যাতন কমিয়ে এনে শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসতে বদ্ধ পরিকর ত্রিপুরা পুলিশ। সাজার হার বৃদ্ধিতে ত্রিপুর পুলিশ তৎপর বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। স্বরাস্ট্র দপ্তরের বিশেষ বাহিনি হচ্ছে টি এস আর। এই বাহিনীর খোঁজ খবর নিতে ধারাবাহিক ভাবে ক্যাম্প গুলিতে যাচ্ছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাদের ব্যারাকের বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়ার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে অবগত হওয়া এবং তাদের জীবন শৈলী সম্পর্কে জানতেই এই সফর বলেও জানান তিনি। টি এস আর নবম বাহিনীর একটা বড় অংশকে ছত্রিশগড়ে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার তাদের হায়ার করেছে। টি এস আর-র জন্য গর্ব হয়ে প্রত্যেকের। দীর্ঘ সময় ধরে চলা সন্ত্রাসবাদ নির্মূলী করণে টি এস আর-র বড় ভুমিকা রয়েছে। এই বাহিনীর প্রত্যেকের মধ্যে উদ্দীপনা যোগাতে এই উদ্যোগ। তাদের কাজ সুধু বন্ধুক নিয়ে পাহাড়া দেওয়া নয়। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার অধিকার তাদের রয়েছে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে তাদের মনোবল বৃদ্ধি পাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন দক্ষিন জেলার জেলা শাসক সাজু ওয়াহিদ, মহকুমা শাসক অভেদানন্দ বৈদ্য সহ পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকেরা।