Friday, March 29, 2024
বাড়িরাজ্যত্রিপুরা ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ

ত্রিপুরা ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৭ অক্টোবর : রাজনৈতিক জমি ফিরে পেতে কংগ্রেস ছেড়ে এবার নতুন রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলেন প্রদেশ যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি পুজন বিশ্বাস। বৃহস্পতিবার আগরতলা প্রেস ক্লাবে প্রদেশ যুব কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি পুজন বিশ্বাস ত্রিপুরা ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট নামে নতুন সংগঠনের আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে। এদিন প্রাক্তন বিধায়ক তাপস দে বলেন রাজ্যে মানুষ অত্যাচারিত, নিপীড়িত এবং অবহেলিত।

তাই অত্যাচারিত, নিপীড়ন, অবহেলা ও বঞ্চনা থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে রাজনৈতিক দলটির আত্মপ্রকাশ করা হয়েছে। জনগণের স্বার্থে রাজনৈতিক দলটি কাজ করবে। দলের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে পুজন বিশ্বাসকে। এই রাজনৈতিক দলটি আগামী দিনে রাজ্যে সংবিধান বিরোধীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে। অভিজ্ঞতা এবং তরুণদের সহযোগিতা নিয়ে দলটি কাজ করব বলে জানান প্রাক্তন বিধায়ক তাপস দে। তিনি বলেন কংগ্রেস ছেড়ে আসার মূল কারণ হলো কংগ্রেস দিল্লি থেকে ত্রিপুরা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। যারা এখনো কংগ্রেস করে তাদেরই বিষয়টা বোঝা দরকার। কারণ সর্বভারতীয় কংগ্রেস ত্রিপুরা রাজ্যের কংগ্রেসের প্রতি উদাসীন। যারা এখন কংগ্রেসে যোগ দিয়েছে তারা জনগণের স্বার্থে এবং রাজ্যের স্বার্থে কাজ করবে বলে ভাবার কোন কারণ নেই। সুতরাং যারা এখনো কংগ্রেস আছে তারা কংগ্রেস থেকে টিডিএফ -এ যোগদান করতে আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে প্রদেশ কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত প্রাক্তন সভাপতি পীযূষ কান্তি বিশ্বাস বক্তব্য রেখে বলেন, তিনি অত্যন্ত বেদনা নিয়ে কংগ্রেস দল ত্যাগ করেছেন। ৫০ বছরের বেশি সময় কংগ্রেস করে গেছেন রাজ্যে গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে। কংগ্রেসের জন্য এ দীর্ঘ সময়ে বহু যুবক সিপিএম -এর দ্বারা প্রাণ হারিয়েছে। কিন্তু দিল্লি থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা ত্রিপুরা রাজ্যের কংগ্রেসকে করা হয়নি। সিপিএমের ২৮ বছর রাজ্যের কংগ্রেসের কর্মীরা শুধু প্রতারিত হয়েছে। সিপিআইএম দ্বারা নির্যাতন হলেও কংগ্রেস কর্মীরা এই দীর্ঘ সময়েও পিছুপা হয়নি। রাজ্যের কংগ্রেস কর্মীরা বছরের পর বছর রাজ্যের বেকার, কর্মচারী এবং গরিব মানুষদের জন্য লড়াই করেছে। কিন্তু বহুবার কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হতে চাইলেও দিল্লির কংগ্রেসের অসহযোগিতায় এবং প্রতারণায় রাজ্যে কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনি। নির্বাচন আসলে সমস্ত পরিকল্পনা এমন ভাবে সাজিয়ে তুলত যে সিপিআইএম -এর কাছে পরাজয় স্বীকার করত কংগ্রেস। এইগুলি ছিল দিল্লির কংগ্রেসের তীব্র ষড়যন্ত্রমূলক। ২০১৩ সালের আগে সোনিয়া গান্ধী এবং মনমোহন সিং রাজ্য সফরে এসে কর্মসূচি করার কথা ছিল। কিন্তু কর্মসূচির কয়েকদিন আগেই দিল্লি থেকে সীতারাম ইয়েচুরি বলে দিয়েছিলেন ত্রিপুরা সফরে যাচ্ছেন না মনমোহন সিং এবং সোনিয়া গান্ধী। কিন্তু তা সঠিক হয় কর্মসূচির দুদিন আগে। কর্মসূচির দুদিন আগের দিল্লি থেকে কংগ্রেস বলে দেয় রাজ্য সফরে আসবেন না সোনিয়া গান্ধী এবং মনমোহন সিংহ। ২০১৬ সালে কংগ্রেস ভোট পেয়েছিল মাত্র ২ শতাংশ। পরবর্তী সময় প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন কংগ্রেসে যোগদান দেওয়ায় লোকসভা নির্বাচনে ভোট বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ শতাংশ। কিন্তু পরবর্তী সময় দেখা যায় কংগ্রেসকে দাঁড় করাতে বহু প্রচেষ্টা করেছিলেন প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মন। এবং রাজ্যে কংগ্রেসের কমিটি গঠন করতে চেয়েছেন তিনি। কিন্তু কমিটি গঠন করতে দেওয়া হয়নি। যার ফলে তিনি শেষ পর্যন্ত দল থেকে বের হয়ে আসতে বাধ্য হয়। পরবর্তী সময় যখন দায়িত্ব দেওয়া হলো প্রদেশ কংগ্রেসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে তখন তিনি নিজেও অনুভব করেন রাজ্য কমিটি গঠন করতে দেওয়া হচ্ছে না সর্বভারতীয় কংগ্রেসের থেকে। দীর্ঘ ১৮ মাস সারা রাজ্যের গ্রাম পাহাড় চোষে বেরিয়ে দেখা গিয়েছিল কংগ্রেসের কমিটি গঠন করা অত্যন্ত দরকার। দিল্লি থেকে কোনরকম সহযোগীতা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত দল ছাড়তে বাধ্য হন বলে জানান পীযূষ কান্তি বিশ্বাস।

সংগঠনটি তিপরা পার্টির সাথে আঁতাত হয়ে আগামী দিনের লড়াই করবে বিশ্বস্ত সূত্র জানা যায়। আগামী নভেম্বর মাসে নয়তো ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে পুর নির্বাচন। নির্বাচনে টি ডি এফ লড়াই করবে। তবে যতদূর জানা যায় আসন্ন পুর নির্বাচনে প্রদ্যুৎ সমতল এলাকায় পূজন বিশ্বাসের কাঁধে কাঁধ রেখে লড়তে চাইছে। নয়তো সমতলে সমর্থন পাওয়া প্রদ্যুৎ -এর জন্য কঠিন হয়ে যাবে বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য