ত্রিপুরার পশ্চিম জেলার জেলাশাসক শৈলেশ কুমার যাদবের বিয়ে বাড়িতে ঢুকে লাঠিচার্জের ভিডিয়ো বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। সেই প্রসঙ্গে সরব হলেন গায়ক সোনু নিগম।
অতিমারির মধ্যে ত্রিপুরায় আয়োজন করা হয়েছিল এক বিয়ের অনুষ্ঠানের। অভিযান চালিয়ে ত্রিপুরার বড়সড় একটি বিয়ের অনুষ্ঠান আটকান সেখানকার জেলাশাসক শৈলেশ যাদব। বিয়েবাড়িতে উপস্থিত হয়ে বর কনে থেকে অতিথি, সকলকে ধমক দিয়ে বার করে দেন তিনি। পুরো ঘটনার একটি ভিডিয়োর সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যার থেকে সৃষ্টি হয়েছে নানা বিতর্কের।
ভোজ বাড়িতে প্রবেশ করে জেলাশাসকের আচরণের কড়া সমালোচনার ঝড় ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। লাঠিচার্জ, মহিলাদের সঙ্গে অপব্যবহার, তাঁর ধমকি-চমকিতে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন উপস্থিত অতিথিরা। পরে ডিএমের পদ থেকে অপসারিত এমনকি ক্ষমা চাইলেও ছাড় পাননি তিনি। ইনস্টাগ্রাম ভিডিয়োর মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করেন গায়ক সোনু নিগম। রীতিমতো বকাঝকা দিয়ে ভদ্রতার পাঠ পড়ালেন ওই ক্ষমতাচ্যুত জেলাশাসককে।
ভিডিয়োতে সোনু জেলাশাসকের কাজের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ত্রিপুরার ডিএম সাবের একটা ভিডিও দেখলাম। উনি একটি বিয়েবাড়িতে ঢুকে আইন মানার কথা বলছেন। আমি আইনি বিষয়গুলির দিকে যাচ্ছি না। সেই নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। কিন্তু ডিএম সাব, এটা কথা বলার কেমন ধরণ! আমরা কোন দেশে আছি! কোনও মহিলা যখন কথা বলতে যাচ্ছে, তখন তাঁর কথা না শুনেই আপনি বলছেন অ্যারেস্ট হার, অ্যারেস্ট হিম! নিজের ক্ষমতার ওপর এত অহঙ্কার! প্রধানমন্ত্রী মোদিরও তো এত অহঙ্কার নেই। উনিও মানুষের সঙ্গে ভদ্রভাবে কথা বলেন’।
পাশাপাশি জেলাশাসকে বিঁধে তিনি আরো বলেন, ‘আপনি কোনও রাজা নয় যে এইভাবে কথা বলবেন। আর ধনী থেকে গরীর, এখন ভারতে সবাই কষ্টে আছেন। কেউ যদি ভুল করে থাকে তাঁকে বোঝান। এটা তো সবার পাশে থাকার সময়। আর আপনি বরের কলার ধরে তাঁকে ধাক্কা দিচ্ছেন! আপনি যে চেয়ারে বসে আছেন সেটা আপনার যোগ্য নয়। আপনি ভুল করেছেন আপনার শাস্তি হবে’।
নরম সুরে অভিনেতাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি আপনার খারাপ চাইব না। কেবল বলব, বিয়ে ভারতে একটা শুভ অনুষ্ঠান। আপনি বিয়েতে এমন স্মৃতি তৈরি করলেন যে ওই পরিবারের সবাই বিয়েবাড়িটা ভুলে যাতে চাইবে। আপনি একজন শিক্ষিত গুণ্ডার মত ব্যবহার করেছেন। যেন বিয়েবাড়িতে ডাকাত পড়েছে। এই ঘটনা যদি আপনার নিজের ছেলের সঙ্গে হত? মানুষ খুব কষ্টে আছে। নিজের ক্ষমতা দিয়ে মানুষের সাহায্য করুন, তাদের মুখে হাসি ফোটান’। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘মানুষের সঙ্গে ও ভাবে কথা বলার সাহস কী ভাবে হয় আপনার?’
ভিডিয়োতে শৈলেশের আচরণকে কটাক্ষ করে বলতে শোনা যায় সোনুকে। মাণিক্য কোর্টে সেই বিয়ের অনুষ্ঠান আটকানোর পর বিতর্ক গড়ায় অনেক দূর। সমালোচনার মুখে শেষপর্যন্ত ক্ষমা চেয়েছেন জেলাশাসক শৈলেশ কুমার যাদব। ঘটনার সাফাই দিয়ে শৈলেশ বলেন কাউকে আঘাত করে তিনি এই কাজ করেননি। সাফাই দিয়ে গিয়ে তিনি জানান, মানুষের ভালোর স্বার্থে এবং কোভিড সুরক্ষাবিধি বজায় রাখতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।