স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৮ নভেম্বর : জিবি হাসপাতালের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে ছেলে হারা এক অসহায় পিতা চোখ দিয়ে অঝোরে জল ফেলছে, আর বলছে ছেলের মৃত্যুর জন্য কাকে দোষ দেবে ! ভগবানের উদ্দেশ্যে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে কাঁদছে অসহায় পিতা বলছে ভাত না খেলে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেছিল ছেলেকে, কিন্তু ছেলে অভিমানে তাদের ছেড়ে চলে যাবে সেটা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। ছোট থেকেই ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন পিতা। বেশ মেধাবী হয়ে উঠেছিল অভিক সাহা।
ছেলেকে ডাক্তার বানাবে বলে স্বপ্ন দেখে মাথা ঘাম পায়ে ফেলে ছিল এই পিতা। তার জন্য ছেলেকে শাসন করতো – যাতে ভালো করে পড়াশোনা করে। আজ সেই শাসন পিতার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিল। ছেলের মৃতদেহ কাঁধে নিয়ে আজ শ্মশান যাত্রী হবে এই পিতা। জানা যায়, ১৯ বছরের অভিক সাহা পড়াশোনায় ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিল। ৯৪ শতাংশ নম্বর পেয়ে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছিল। ডাক্তারি পড়ার জন্য নীট পরীক্ষা দিলেও পাস করে নি সে। আগামী বছর ফের পরীক্ষায় বসার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিল অভিক। তার পড়াশোনায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে তার জন্য শনিবার বাবা মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছিলেন। পরে রবিবার সে ভাত খাওয়া বন্ধ করে দেয়। তারপর ছেলের কাছে গিয়ে পিতা বলেছিল যদি ভাত না খাস, তাহলে কাল সকালে বাড়ি থেকে চলে যা। এর কিছুক্ষণ পরে মা মা করে চিৎকার করে ঘর থেকে অগ্নিদগ্ধ হয়ে বাড়ির উঠোনে বের হয়ে আসলো অভিক। মা বাবা কিছু বুঝে উঠতে না পেরে ছেলের শরীরের আগুন নিভিয়ে নিয়ে যায় আইজিএম হাসপাতালে। সেখান থেকে রেফার করা হয় জিবি হাসপাতালে। কিন্তু জিবি হাসপাতালে আনার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা নাগাদ মৃত্যু হয় অভিকের। সোমবার জিবি হাসপাতালে মর্গে সামনে দাঁড়িয়ে ছেলে হারা পিতার একটাই প্রশ্ন তা কাকে দোষ দিবেন? এমনতো হওয়ার কথা ছিল না। কেন হলো ভগবান ? বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেছিল, তার জন্য এভাবে অভিমানে বাবাকে ছেড়ে চলে যাবে সেটা মেনে নিতে পারছেন না তিনি ! পরে মৃতদেহ ময়না তদন্ত করে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। নিথর দেহ হাতে পেয়ে পাথর হয় পড়ল গোটা পরিবার।