Monday, February 17, 2025
বাড়িরাজ্যবিশ্বাসঘাতকতা দিবস সংযুক্ত কিষান মোর্চার

বিশ্বাসঘাতকতা দিবস সংযুক্ত কিষান মোর্চার

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩১ জানুয়ারি : দেশের ৭০ ভাগ মানুষ কৃষির সাথে জড়িত। দেশের সরকার কৃষকদের কথা রাখেনি। তাই সরকারকে বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কোন ভাষা নেই বলার। আর সার্বিকভাবে দেখলে এই সরকারের নীতি বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। কৃষকদের তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করার দাবিতে আন্দোলন দীর্ঘ এক বছর চলার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আশ্বস্ত করেছেন প্রাথমিকভাবে কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হয়েছে।

 আন্দোলনরত কৃষকদের দাবি ছিল কৃষি আইন সংসদে প্রত্যাহার করতে হবে। কিন্তু ৭২ দিন অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও সরকার তার কথা রাখেনি। গুরু পূর্ণিমার দিন প্রধানমন্ত্রী মনে পবিত্রতা নিয়ে দেশবাসীকে যে কথাটি দেননি তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তাই সংযুক্ত কিষান মোর্চা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৩১ জানুয়ারি দিনটি বিশ্বাসঘাতকতা দিবস হিসেবে পালন করার। সোমবার সংযুক্ত কিষান মোর্চা রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে সংযুক্ত কিষান মোর্চা অফিসে বিশ্বাসঘাতকতা দিবস কর্মসূচিতে এমনটাই বললেন সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সম্পাদক তথা উপজাতি গণমুক্তি পরিষদের সভাপতি জিতেন্দ্র চৌধুরী। তিনি বলেন সার্বিকভাবে বর্তমান সরকারের নিতি দেখলে সবটাই বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে তিনি আরো বলেন, পুর নির্বাচনের আগে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন করে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অর্থ রিলিজ করেছেন। আর এর জন্য নগর পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় স্ক্রিনে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল বক্তব্য লাগানো হয়েছিল। যে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে পারে তার থেকে নিলজ্জ বেহায়া আর কিছু হতে পারে না। আর এ সম্পর্কে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর কোন অভিজ্ঞতাই নেই বলে জানান জিতেন্দ্র চৌধুরী।

৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দিয়েছেন, তা অসত্য। ২১ জানুয়ারি ত্রিপুরা পূর্ণ রাজ্য দিবসেও প্রধানমন্ত্রী ত্রিপুরার জন্য অসত্য ভাষণ রেখেছেন। রাজ্যে বর্তমানে বারবার প্রধানমন্ত্রীকে সামনে নিয়ে আসার প্রধান কারণ হলো রাজ্যের বর্তমান সরকার সম্পূর্ণভাবে জনবিচ্ছিন্ন। তাই তাদের বারবার প্রধানমন্ত্রীকে আনতে হচ্ছে। যে ব্যক্তি কৃষক-শ্রমিকদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তাদের কাছে বিশ্বাস রাখতে পারে না রাজ্যবাসী। শুধু বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে যার সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই বলে জানান তিনি। তিনি বলেন কৃষকরা অকাল বর্ষণে যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ফসল বীমা যোজনা প্রতিনিধি তাদের কাছে যায়নি। এবং এ বীমা কোম্পানিগুলো লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। রাজ্যে কোথাও তাদের স্থায়ী কোন অফিস নেই। ফলে কৃষকরা কোন সুবিধাই পাচ্ছেনা ফসল বীমা যোজনা এর মাধ্যমে। এমনটাই অভিযোগ তোলেন শ্রী চৌধুরী। তিনি বলেন কৃষি নিধি সম্মান যোজনা ২০১৪ সালের আগে না থাকলেও তখন রেগা কাজ বছরে ৯০ দিনের অধিক হত রাজ্যে। এখন রেগা কাজ চল্লিশ দিনের নিচে নেমে এসেছে। ফলে কৃষি নিধি সম্মান যোজনা না পেলেও গরিব মানুষরা রেগা কাজ থেকে কৃষি নিধি সম্মান যোজনার বহুগুণ অর্থ রোজগার করত। কিন্তু বর্তমানে তারা ক্ষতিগ্রস্ত বলে অভিমত ব্যক্ত করে শ্রী চৌধুরী। এদিকে সংযুক্ত কিষান মোর্চা রাজ্য কমিটির নেতৃত্ব পবিত্র কর জানান, দেশের সরকার কৃষি আইন প্রত্যাহার করবে বলে প্রাথমিকভাবে আশ্বস্ত করলেও এখন পর্যন্ত বাতিল করেনি। বর্তমান সরকারের সময়ে দেশের এক লক্ষাধিক কৃষক আত্মহত্যা করেছে। কৃষি আইনে আন্দোলনরত ৭১৬ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আজকে কর্মসূচি থেকে সরকারের কাছে দাবি সরকার যেন মৃত কৃষক পরিবারগুলিকে সরকার যাতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি সংসদে কৃষি আইন প্রত্যাহার করে ও কৃষকদের ফসলের ন্যায্য পাওনার জন্য আইন বলবৎ করে। এদিন এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সারা ভারত কৃষক সভার রাজ্য কমিটির সভাপতি অঘোর দেববর্মা, গণমুক্তি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাধাচরণ দেববর্মা সহ অন্যান্যরা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য