স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৪ নভেম্বর : আসন্ন দীপাবলি উৎসব ১৩ নভেম্বর। আর এই দীপাবলি উপলক্ষ্যে সেজে উঠছে দক্ষিণ ইন্দ্রনগর স্থিত জয় মা কালি সন্তান সংঘের মন্দির প্রাঙ্গন। এর জন্য জোর কদমে চলছে কাজ। বাৎসরিক উৎসব উপলক্ষ্যে বিশেষ ভাবে মন্দির সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। নতুন করে রং করা হচ্ছে গোটা মন্দিরে। দীপাবলি উৎসবকে কেন্দ্র করে বহু মানুষের সমাগম ঘটে জয় মা কালি সন্তান সংঘের মন্দির প্রাঙ্গণে। বসে মেলা।
জয় মা কালি সন্তান সংঘের সম্পাদক টিঙ্কু ঘোষ জানান জয় মা কালি সন্তান সংঘ প্রতি বছরের ন্যায় এই বছরও শ্যামা মায়ের পূজার আয়োজন করা হয়েছে। সকলে সাথে নিয়ে একটি সুন্দর বাতাবরণ তৈরি করার লক্ষ্যে প্রতি বছর জয় মা কালি সন্তান সংঘ শ্যামা মায়ের পূজার আয়োজন করে থাকে। লাল বাবা মহারাজের অনুপ্রেরনায় এই কালী মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল।
বর্তমানে তিনি নেই। ওনার অনুপস্থিতিতে অভিভাবকহীন ভাবে জয় মা কালি সন্তান সংঘ শ্যামা মায়ের পূজার আয়োজন করেছে। পূজা ও মেলায় সকলকে আমন্ত্রণ জানান তিনি। অপরদিকে এই দীপাবলি মানেই আলোর উৎসব। আলোর রোশনাইয়ে আলোকিত হয় ঘর। কালের নিয়মে অমাবস্যা তিথি থাকলেও চারিদিক যেন আলোকিত হয়ে থাকে। সম্প্রতি অতীতেও দীপাবলীর দিন ঘরে জ্বলত প্রদীপ, জ্বলত মোমবাতি। তবে কালের নিয়মে হারিয়ে যেতে বসেছে দীপাবলির প্রদীপ, মোমবাতি সহ মাটির তৈরি সরঞ্জাম। কিন্তু আধুনিক বিদ্যুতিন আলো বাজারে ছেয়ে গেলেও এখনো অনেকেই মাটির প্রদীপের সংস্কৃতিকে মেনে চলেন। আর দীপাবলিতে মাটির প্রদীপের চাহিদার কথা মাথায় রেখে মৃৎ শিল্পীরা মাটির প্রদীপ তৈরি করে চলেছেন। এক মৃৎ সিল্পী জানান বাঙালি সমাজে দুর্গাপূজার পর সব থেকে বড় উৎসব দীপাবলি। সুন্দর ভাবে এই পূজা করা হয়। এই সময়ে কুমোরের বাড়ির চেহারাই থাকে ভিন্ন। প্যারাফিন জাতীয় দ্রব্য আশার কারনে বাজারে মাটির তৈরি প্রদীপের চাহিদা কমে গেছে। প্রদীপ তৈরির জন্য সমস্ত সামগ্রী কিনতে হয়। মাটি, খড় ও লাকড়ির মূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে। ৭০ পয়সা দরে প্রদীপ তৈরি করলে তা এক টাকার কমে বিক্রি করা যায়না। চাহিদা প্রতিবছর একই থাকে। দাম গত বারের মত রাখা হয়েছে। ১২ হাজার প্রদিপ এবার তৈরি করেছেন তিনি। উৎসবের সময় মাটির প্রদীপদের চাহিদা থাকায় এই সামগ্রী তৈরি করেন। অন্য সময় মাটির হারি , দৈয়ের পাত্র প্রস্তুত করে থাকেন। দাম কম হওয়ায় তারা মার খাচ্ছেন বলে জানান। ছোট প্রদীপ ১২০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করেন। আর বড় প্রদীপের মূল্য ২০ টাকা। এই কাজে মহিলারাও হাত লাগিয়েছেন। দাম না বাড়ালে তাদের শিল্প টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে এই সময় মাটির প্রদীপ তৈরির ব্যবস্তা তাদের। তবে সরকারী সহায়তা পেলে এই শিল্পের বিকাশ ঘটানো সম্ভব বলে জানান মৃৎ শিল্পীরা। উল্লেখ্য, যখন ১৪ বছর বনবাসের পর রাম, সীতা ও লক্ষণকে সঙ্গে নিয়ে অযোধ্যা ফিরে এসেছিলেন। মানুষ প্রদীপ জ্বালানোর মাধ্যমে তাদের রাজার প্রত্যাবর্তন উদযাপন করেছিলেন। এইভাবেই, দীপাবলিতে প্রদীপ জ্বালানোর ঐতিহ্য প্রচলিত হয়ে আসছে।