স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৯ অক্টোবর : দুর্গাপুজোর পঞ্চমী তিথিতে ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী রইল রাজ্যবাসী। আনুষ্ঠানিকভাবে বাণিজ্য নগরী মুম্বাইয়ের সঙ্গে রেলপথে সংযোগ স্থাপন হয় ত্রিপুরার। মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে এই দিন দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা শুরু হয়। সঙ্গে উদ্বোধন হয় আগরতলা – সাব্রুম – আগরতলার মধ্যে কোভিড অতিমারির সময় বন্ধ হয়ে পড়া ডেমু ট্রেনের। এর পাশাপাশি আগরতলা স্টেশনের চলমান সিঁড়িরও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।
রাজ্যবাসী দীর্ঘ প্রতীক্ষায় ছিল কবে নাগাদ বাণিজ্য নগরীর সাথে ত্রিপুরার রেল পথের পলক সংযুক্ত হবে। সেই আকাঙ্ক্ষা ডাবল ইঞ্জিন সরকারের আমলে বাস্তবায়ন হয় বৃহস্পতিবার। মুম্বাইয়ের লোকমান্য তিলক টার্মিনাস স্টেশনের সঙ্গে গুয়াহাটির কামাখ্যা স্টেশনের বহু আগে থেকেই দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেনের সংযোগ রয়েছে। এখন এই রেল কামাক্ষার পরিবর্তে আগরতলা স্টেশন পর্যন্ত বর্ধিত হবে। সপ্তাহে একদিন আগরতলা থেকে মুম্বাই লোকমান্য তিলক টার্মিনাস স্টেশনের উভয় দিতে ট্রেনটি চলাচল করবে। ফ্লাগ অফ করে মুখ্যমন্ত্রী রেলটির আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন।ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব, আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সহ অন্যান্যরা। পরে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা বলেন , রাজ্য বাণিজ্য নগরীর সাথে এয়ারপোর্টে সংযোগের জন্য মুখ্যমন্ত্রী এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে রাজ্যবাসী পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান। এবং দেশে আরো একটি বড় শহরের সাথে ত্রিপুরার রেলপথ জুড়ে যাওয়ায় উপকৃত হবে রাজ্যের মানুষ বলে অভিমত ব্যক্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। রাজ্যবাসির দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল কামাখ্যা লোকমান্য তিলক এক্সপ্রেস, উদয়পুর, আগরতলা, কুমারঘাট ও ধর্মনগর রেল স্টেশনের উন্নয়ন, আগরতলা-পুরির মধ্যে রেল পরিষেবা চালু করা, আগরতলা-জম্মুর মধ্যে রেল পরিষেবা চালু করা ইত্যাদি।
সেই মোতাবেক ৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী ধর্মনগর, কুমারঘাট ও উদয়পুরের রেল স্টেশনের উন্নয়নের জন্য শিলান্যাস স্থাপন করেছেন। বর্তমানে এই তিনটি স্টেশন উন্নয়নের কাজ চলছে। কামাখ্যা লোকমান্য তিলক এক্সপ্রেস উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রত্যন্ত এলাকা গুলিকে মুম্বাইর সাথে সংযুক্ত করবে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন আগরতলা-মুম্বাই-র মধ্যে সরাসরি রেল পরিষেবা চালু হওয়ার ফলে রাজ্যের মানুষের সুবিধা হবে। ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীরা মুম্বাই টাটা ক্যান্সার হাসপাতালে যেতে সুবিধা হবে। আগরতলা রেল স্টেশনকে আন্তর্জাতিক রেল স্টেশনে পরিণত করার জন্য ডিপিআর তৈরি করা হয়েছে ওয়ার্ল্ড ক্লাস স্টেশন স্কিমে। এই ক্ষেত্রে ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৩৫ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা। প্রস্তাবিত ডিপিআর রেলওয়ে বোর্ডের নিকট প্রেরন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। আয়োজিত অনুষ্ঠানে এদিন মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী সহ স্থানীয় বিধায়িকা ও অন্যান্য আধিকারিক।