স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২ অক্টোবর : পার্লামেন্টের শীতকালীন অধিবেশনের সময় দিল্লির যন্তর মন্তরে জনজাতিদের নিয়ে ধর্নায় বসবে কংগ্রেস। কংগ্রেসের সাথে তিপ্রা মথা মিশে গেলে আন্দোলন আরো বেশি তেজী হবে। এর জন্য মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণের কাছে আপিল করলেন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন। সোমবার প্রদেশ কংগ্রেস ভবন প্রাঙ্গনে আদিবাসী কংগ্রেসের যোগদান সভায় সুদীপ রায় বর্মন আরো বলেন, কংগ্রেস রাজাকে ত্রিপুরার সংসদ বানিয়েছিল ও মহারানীকে সাংসদ বানিয়েছিল।
প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সম্পাদক বানিয়েছিল জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্ব। রাজ পরিবারকে কংগ্রেসই স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই এখনো প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মণকে কংগ্রেস পরিবারের হিসেবে ধরা হয় বলে জানান সুদীপ রায় বর্মন। এর জন্য আর দেরি না করে মথাকে কংগ্রেসে মিশে যাওয়ার আহ্বান জানান সুদীপ রায় বর্মন। তিনি প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণকে উদ্দেশ্য করে মঞ্চ থেকে আরো বলেন আসুন, কংগ্রেসে এসে নেতৃত্ব দেন। সভাপতি দায়িত্ব নেন প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ। তিনি বলেন কংগ্রেসকে শক্তিশালী করে জনজাতিদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ সমস্ত অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এবং কংগ্রেস বিগত দিনের মতো রাজ্যের জনজাতিদের উন্নয়ন করতে চায়। খাদ্য বন অধিকার সহ যতগুলি উন্নয়ন হয়েছে সবগুলি কংগ্রেসের দেওয়া। বিজেপি সরকার কংগ্রেসের দেওয়া প্রকল্পগুলির নাম পরিবর্তন করে নিজেরা করেছে বলে দাবি করছে। এভাবেই সমালোচনা করলেন সুদীপ রায় বর্মন। তিনি আরো বলেন বাঁচার একমাত্র রাস্তা হচ্ছে কংগ্রেস, স্বৈরাচারিতার বিরুদ্ধে একমাত্র লড়াই করার দল হচ্ছে কংগ্রেস, ভালোবাসার নাম হচ্ছে কংগ্রেস এবং গণতন্ত্রের অপর নাম কংগ্রেস। তাই আদিবাসীরা দেরীতে হলেও উপলব্ধি করতে শুরু করেছে কংগ্রেসকে শক্তিশালী করতে হবে। কিন্তু বিগত বিধানসভা নির্বাচনে ৬০ শতাংশ ভোট পাওয়ার পরেও রাজ্যের বর্তমান বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি ক্ষমতায় বসতে পারেনি। এতে মানুষ বাকরুদ্ধ।
এ রাজ্যে প্রথম কোন রাজনৈতিক দল এত কম শতাংশ ভোট পেয়ে ক্ষমতায় বসেছে। এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দল জনজাতিদের ভাবাবেগ কাজে লাগাতে বিভিন্ন অর্যৌক্তিক স্লোগান তুলেছে। যে দাবিগুলি পূর্ণ করা কখনো সম্ভব নয়। যোগদান শিবিরে এদিন সুদীপ রায় বর্মন বলেন, যোগদান করেন ১৪৭৩ পরিবারের ৭৪২৩ জন ভোটার। প্রাক্তন মন্ত্রী মনিন্দ্র রিয়াং সহ বেশ কয়েকজন নেতৃত্ব এদিন কংগ্রেসের যোগদান করেন। যা কংগ্রেসের যোগদান করেছে তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কংগ্রেসের যোগদান করতে এসেছে বলে জানান সুদীপ রায় বর্মন।
কাউকে কংগ্রেসে আসার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয়নি। কংগ্রেসের হাতে বিধানসভা এডিসি সহ কোন ক্ষমতা না থাকার পরও কংগ্রেসে এসে যোগদান করা লাখ টাকার প্রশ্ন। এক ডজন আঞ্চলিক দলের আবির্ভাব ঘটেছিল এ রাজ্যে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় ছিল এবং ক্ষমতায় রয়েছে। কিন্তু তারা প্রকৃত অর্থে আদিবাসীদের বন্ধু নয়। তাদের লড়াই শুধু একে অপরের বিরুদ্ধে। এবং রাজ্যের ১৯ টি জনজাতি সম্প্রদায় ভুক্ত মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ষড়যন্ত্র করছে বিজেপি। এর জন্য সাবধান থাকতে হবে। ২০১৪ সালে রাজ্যের জনজাতি অংশের মানুষের জন্য ১২৫ তম সংবিধান সংশোধনের কাজটি শুরু করেছিল কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকার, কিন্তু ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় সেটা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। তিনি এদিন তিপ্রা মথার নাম উল্লেখ না করে বলেন, কোন এক রাজনৈতিক দল নিজেদের দাবি দাওয়া পূরণের জন্য কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন, এডিসি সরাসরি অর্থ রাশি বরাদ্দ করার দাবি সমর্থন করে কংগ্রেস। কিন্তু বর্তমান রাজ্য সরকারের যে মতামত কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব আকারে পাঠিয়েছে তাতে কোথাও এডিসিকে সরাসরি অর্থ বরাদ্দ করার বিষয়ে উল্লেখ নেই। আয়োজিত যোগদানের সভায় এদিন উপস্থিত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহাও একইভাবে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে কামান দাগেন। পরে যোগদানকারীদের দলে স্বাগত জানান।