Wednesday, January 15, 2025
বাড়িরাজ্যবনধ ঘিরে সরকার ও শাসক দল নিরব, ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ী এবং পরীক্ষার্থীরা,...

বনধ ঘিরে সরকার ও শাসক দল নিরব, ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ী এবং পরীক্ষার্থীরা, বিরোধিতা করল বামফ্রন্ট

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৯ সেপ্টেম্বর : ধরি মাছ না ছুঁই পানি – এই প্রবাদটি যেন মিলে গেছে সরকারের সাথে। ৩০ সেপ্টেম্বর সাংবিধানিক দাবি আদায়ের জন্য তথাকথিত মুকুটহীন মহারাজার পার্টি তিপ্রা মথা এডিসি এলাকায় ১২ ঘণ্টার বনধ ডেকেছে। সকাল থেকেই শুরু হবে বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং।

 ইতিমধ্যে সরকার এবং শাসকদলের পক্ষ থেকে বনধ নিয়ে কোন ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ফলে বিপাকে পড়েছে সরকারি কর্মচারী ও ছাত্র ছাত্রী থেকে শুরু করে পুজো মরশুমে ব্যবসায়ীরা। কারণ শুরু হয়েছে বিদ্যালয় গুলিতে পরীক্ষা। ৩০ সেপ্টেম্বর ছাত্র ছাত্রীদের পরীক্ষা ছিল। কিন্তু এদিন বনধের জন্য পরীক্ষা পিছিয়ে করা হয়েছে আগামী ১ নভেম্বর। যার ফলে ছাত্র ছাত্রী ও অভিভাবক মহলে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। অপরদিকে পূজা মরশুম। ব্যবসায়ীরা ব্যস্ত তাদের ব্যবসা নিয়ে। এর মধ্যে দিনের অধিক সময় বনধে ব্যাপক সমস্যায় পড়বে ব্যবসায়ীরা। আর এই সব কিছু চিন্তা করে রাজ্যে অন্যতম বিরোধীদল সিপিআইএম তথা বামফ্রন্ট বনধের বিরোধিতা করার জন্য জনগণের কাছে দাবি জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে তারা প্রকাশ করেছে এখন এ ডি সি এলাকার কাজ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা এমন কি পানীয় জলের তীব্র সংকট চলছে।

 রাজ্যের বিজেপি সরকারের চরম ব্যর্থতায় রাজ্যব্যাপী জনগণের ন্যূনতম পরিষেবা ভেঙ্গে পড়েছে। জনগণ খাদ্য সামগ্রী সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির অগ্নিমূল্যে দিশেহারা। গ্রাম-শহর সর্বত্র কাজের সংকট, বেকারী তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ ডি সি এলাকায় ভিলেজ কমিটির নির্বাচিত কমিটি না থাকায় তিপ্রা মথা ও বিজেপি -র নেতা-কর্মীরা সরকারী অর্থ লুঠ করতে ব্যস্ত। তিপ্রা মথা দলের কর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে। অন্যদিকে রাজ্যের ডাবল ইঞ্জিনের সরকারের বিরুদ্ধে জাতি-উপজাতি নির্বিশেষে মানুষ রাস্তায় নামতে শুরু করেছে। এই সময়ে তিপ্রা মধ্য দল নিজের প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থতা ঢাকতে এবং বিজেপি বিরোধী জনগণের মনোভাবকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে এই ধর্মঘট আহ্বান করেছে। ত্রিপুরা বামফ্রন্ট কমিটি রাজ্যের জনগণকে এই ধর্মঘটের বিরোধিতা করতে আবেদন জানাচ্ছে। যদিও তথাকথিত মহারাজা এই বনধ ঘোষণা করার সময় জনজাতিদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে দেন থানসা হয়ে আন্দোলন করতে হবে। তাহলে দিল্লি পর্যন্ত আওয়াজ পৌঁছাবে। কিন্তু এই আওয়াজ স্থানীয়দের কাছে কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 রাজ্যে এ ধরনের বনধের ট্রেডিশন আগে থেকেই করে আজ অস্তিত্ব সংকটের মুখে আইপিএফটি -র। দাবি পূরণ হোক আর নাই হোক সহজ সরল ব্যক্তিত্বের সুযোগ নিয়ে জনজাতিদের রাস্তায় নামিয়ে আবেগে চোখ ভাসানোর চিত্র দেখে অভ্যস্ত রয়েছে সাধারণ জনগণ। অভিযোগ, এডিসি -তে মথা এবং রাজ্যে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর মানুষের মৌলিক সমস্যাগুলি সমাধানের পথ খুঁজে না বের করে নিজেরা বাছাই করে নিচ্ছে বিভিন্ন আন্দোলন ও কর্মসূচি মতো কার্যকলাপ। বনধ কোন এক সময় বিরোধিতা করেছেন প্রদ্যোত। তিনি বনধের অসমর্থন করে বলতেন এর দ্বারা কোনো সমস্যার সমাধান হতে পারে না। আজ তিনিই পুজো এবং পরীক্ষার মরশুমে মানুষের সমস্যা সৃষ্টি করে বনধ ডেকে জনজাতিদের আবেগ নিয়ে মশকরা করতে চাইছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এখন পর্যন্ত এই বিষয় নিয়ে সরকার এবং শাসক দলের কোন প্রতিক্রিয়া নেই। যা এক প্রকার সরকার এবং শাসকদলের ভাবে সমর্থন বলা চলে। সবটাই ভুক্তভোগী হবে সাধারণ মানুষ। আর রাজনৈতিক মহলের অভিমত তিপ্রা মথাকে সামলে রাখতে পারলে শাসকদলের লাভ হবে। কারণ সামনেই লোকসভা নির্বাচন। হয়তো লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী দলের আসন থেকে ২০২৩ -এর মত কলা কৌশল সাজাতে পারবে মথা। হয়তো দুই আসনের মধ্যে পূর্ব আসন সমঝোতা হয়ে যাবে। কারণ এই আসনকে নিয়ে শাসক এবং বিরোধী মথা উভয়েই চিন্তিত। কারণ আজকের জনজাতিরা বিচক্ষণ। নুন আনতে পান্তা ফুড়ালেও হাতে রয়েছে স্মার্ট ফোন। খবর রাখে দেশ-বিদেশের। সুতরাং টুপি পড়ানো সহজ নয়। এদিকে আগামী দিনে বিজেপি -কে পরাজিত করতে প্রদ্যুৎকে ছাড়াই বিরোধী জোট করতে চাইছে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস নেতৃত্ব।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য