স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৬ সেপ্টেম্বর : ২৬ সেপ্টেম্বর ভারতের নবজাগণের পথিকৃৎ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০৩-তম জন্ম বার্ষিকী। অল ইন্ডিয়া সেভ এডুকেশান কমিটি সারা দেশে এই দিনটি শিক্ষা বাঁচাও দিবস হিসাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারই অঙ্গ হিসাবে মঙ্গলবার কমিটির ত্রিপুরা শাখার উদ্যোগে উজ্জয়ন্ত প্রাসাদের সামনে মহান বিদ্যাসাগরের প্রতি এক শ্রদ্ধা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রথমে বিদ্যাসাগরের প্রতিকৃতিতে পুস্পার্ঘ্য অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন কমিটির সদস্যগণ। পরে বিভিন্ন বক্তা বিদ্যাসাগরের জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে আলোচনা করেন। বক্তাগণ বলেন সামস্ত ব্যবস্থার অন্ধকারময় যুগে রামমোহন রায় ছিলেন ঊষালগ্ন এবং বিদ্যাসাগর ছিলেন প্রথম সুর্যোদয়। বিদ্যাসাগর এদেশে সংস্কৃত শিক্ষার পরিবর্তে ইংরেজী ও আধুনিক বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষার প্রবর্তন করেছিলেন। তিনি নারী শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়েছিলেন।
তিনি ইউরোপের জন স্টুয়ার্ট মিলের লজিক পড়ানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। বাংলা ভাষাকে এক সুশৃঙ্খল পদ্ধতির উপর দাঁড় করিয়ে তার বিকাশ ঘটিয়েছিলেন। বিধবা বিবাহ প্রচলন ও বাল্য বিবাহ এবং বহু বিবাহ রদ করার চেষ্টা করেছিলেন। বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টার ফলেই এদেশে বিজ্ঞান চর্চার রাস্তা উন্মোক্ত হয়েছিল। আরো বলেন, স্বাধীন ভারতে একটার পর একটা কমিশন বসিয়ে সার্বজনীন ও বিজ্ঞান ভিত্তিক শিক্ষার দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে। তার সর্বশেষ পদক্ষেপ জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০। এই নীতির ফলে দেশের শিক্ষা জগতে অবৈজ্ঞানিক চিন্তার অনুপ্রবেশ ঘটবে এবং শিক্ষা বেসরকারীকরণের রাস্তা প্রশস্ত হবে। ত্রিপুরা রাজ্যে বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্প চালু করে এবং ব্যাপক ফি বৃদ্ধি ঘটিয়ে শিক্ষাকে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে নিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় শিক্ষা বিরোধী জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২০ এবং রাজ্যের বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্প সহ ব্যাপক ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলনে সামিল হতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিনে মানুষের প্রতি বক্তাগণ আহ্বান জানান।