স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৯ সেপ্টেম্বর : গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের রূপ নিল আগরতলার জিবি হাসপাতাল। ছেলের বাড়ির লোকজনদের গণহারে পিটুনি দিল মৃত গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকজনেরা। ঘটনা সোমবার দুপুরে। জানা যায়, বাধারঘাট এলাকার কাঞ্চন পল্লী দেব টিলার বাসিন্দা চন্দ্রা দেবের সঙ্গে ১৫ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল যোগেন্দ্রনগরের আদর্শ কলোনির বাসিন্দা উত্তম দেবের। চন্দ্রা দেবের ডাকনাম তপা।
বাবা-মায়ের ছিল খুব আদরের এই কন্যা। কিন্তু স্বামীর সঙ্গে সংসার করার পর থেকেই দুঃখ দুর্দশা নেমে আসে তার কপালে। এমনটাই অভিযোগ চন্দ্রার বাপের বাড়ির লোকজন এদের। হঠাৎ করেই স্বামী উত্তম দেব পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবি করে বসে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন এদের কাছে। শশুর বাড়ি থেকে এই টাকা না পাওয়ায় উত্তম দেব তার স্ত্রী চন্দ্রা দেবের উপর শুরু অত্যাচার। এমনটাই অভিযোগ করেছেন চন্দ্রার মা এবং ভাই। চন্দ্রাকে তার শ্বশুরবাড়িতে দেখতে গেলে বিভিন্ন সময়ে অপমানিত লাঞ্চিত হয়ে ফিরে আসতে হয় চন্দ্রার মা এবং ভাইকে।
দুর্ভাগ্য বিশ্বকর্মা পুজোর দিন সাত সকালে তাদের কপালে যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত ঘটে। আসে মেয়ের মৃত্যুর খবর। চন্দ্রার মা ভাই বোনসহ পরিবারের অন্যান্য লোকজনেরা ছুটে আসে আগরতলার জিবি হাসপাতালে। তারা দেখতে পায় চন্দ্রার গলায় এবং কানে আঘাতের চিহ্ন। তাদের ধারণা চন্দ্রা কে গলাটিপে হত্যা করেছে তার স্বামী উত্তম দেব, ভাসুর গৌতম দেব এবং তার স্ত্রী জবা দেব। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে রয়েছে চন্দ্রার শ্বশুর শাশুড়িও। চন্দ্রার মা জানিয়েছেন তার মেয়ের হত্যাকারি স্বামী উত্তম দেব ভাসুর গৌতম দেব এবং তার স্ত্রী জবা দেব সহ পরিবারের অন্যান্য লোকজনদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন। অভিযুক্ত হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন তিনি। এদিকে চন্দ্রার এই রহস্যজনক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আগরতলার জিবি হাসপাতাল ক্ষনিকের জন্য রণক্ষেত্রের রূপ নেয়। ক্ষোভে ফেটে পড়ে চন্দ্রার বাপের বাড়ির লোকজনেরা। গন পিটুনি দেয় শ্বশুরবাড়ির লোকজনেদের। চন্দ্রার বাপের বাড়ির লোকজন এদের উত্তেজিত অবস্থায় দেখতে পেয়ে অনেকটা চোরের মতই গা ঢাকা দেয় অভিযুক্ত লম্পট স্বামী উত্তম দেব এবং তার বড় ভাই গৌতম দেব। আগরতলা জিবি হাসপাতালে গোটা ঘটনার যে সমস্ত ভিডিও ফুটেজ সামনে এসেছে তাতে অনেকাংশেই স্পষ্ট চন্দ্রার মৃত্যুর ঘটনার পেছনে রয়েছে বড়সড় রহস্য। চন্দ্রার বাপের বাড়ির লোকজনেরা যখন তার কাগজপত্র চাইছিল তখন চন্দ্রার ভাসুর গৌতম দেবের স্ত্রী জবা দেব এমন বিশ্রী ভাবে অঙ্গভঙ্গি করেন যা চাক্ষুষ করার পর চন্দ্রা দেবের মৃত্যুর পেছনে ভয়াভহ রহস্য আরো বেশি পরিমাণে দানা বাঁধতে শুরু করেছে। যাবতীয় ঘটনাটা এখন পুলিশের তদন্ত সাপেক্ষ। পুলিশের হাই ভোল্টেজ টর্চের আলো পড়লেই বেরিয়ে আসবে চন্দ্রা দেবের মৃত্যুর আসল রহস্য।