স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৪ আগস্ট : ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের একদিন আগে সরকারের কাছে স্বাধীনতার সংগ্রামী পরিবার আর্থিক সহযোগিতার দাবি করলো। এই দৃশ্য ফুটে উঠলো খোয়াই পশ্চিম গণকী গ্রামে প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী উদ্ভব চন্দ্র রায়ের পরিবার তাদের আর্থিক দুর্বলতার কথা সংবাদ মাধ্যমের দ্বারা মুখ্যমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
খোয়াই শহরের পশ্চিম গনকী গ্রামের বাসিন্দা তথা স্বাধীনতা সংগ্রামী প্রয়াত উদ্ভব চন্দ্র রায়ের দরিদ্র পরিবারটি কতটা দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে আছে তার খোঁজ নিচ্ছেন না কেউ। প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামীর স্ত্রী প্রবাসিনী রায় বহু বছর ধরে অসুস্থতা জনিত কারণে বিছানায় শয্যাশায়ী। স্বাধীনতা সংগ্রামী উদ্ভব চন্দ্র রায়ের পাঁচটি কন্যা সন্তান এবং একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। কন্যা সন্তানরা সকলেই বিবাহিত। একমাত্র পুত্র উৎপল চন্দ্র রায় শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে পরিবারটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আজ পর্যন্ত এই স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবারটি কিছুই পায়নি। পারিবারিক রেশন কার্ডটি পর্যন্ত এপিএল অন্তর্ভুক্ত।
প্রবাসিনী রায় জানান, উনার স্বামীর স্বাধীনতা সংগ্রামীর পারিবারিক স্বাধীনতার সংগ্রামের পেনশন দিয়ে বহু কষ্টে সংসারটি চলছে। পেনশনের সিংহভাগ টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে উনার ঔষধের নিচে। প্রতিবছরই স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবারকে ১৫ ই আগস্টের দিনে আমন্ত্রণ জানিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। শুধু সংবর্ধনা দিয়ে একটি স্বাধীনতা সংগ্রামীর পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব নয় বিষয়টি প্রশাসনিক স্তরেও জানা আছে। জরাজীর্ণ একটি ঘরে থাকছে পুত্র, পুত্রবধূ এবং এক সন্তান সহ মোট চারজন বসবাস করছেন। স্বাধীনতা সংগ্রামীর স্ত্রী প্রবাসিনী রায় আরো বলেন, দেশকে স্বাধীন করার জন্য উনার স্বামী পুরো জীবনটা বিসর্জন করে দিলেন কিন্তু উনার পরিবারটি আজ অত্যন্ত অসহায়ভাবে আছেন। ১৯১৪ সালের ৪ মে স্বাধীনতা সংগ্রামী উদ্ভব চন্দ্র রায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কৈশোর বয়স থেকেই তিনি পরাধীন ভারতবর্ষকে স্বাধীন করার জন্য বিভিন্ন আন্দোলনে শামিল হন। ১৯৪২ ইংরেজিতে তিনি ইংরেজদের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে ১১ মাস বাংলাদেশের সিলেট জেলে বন্দি ছিলেন। উনার সহযোগী হিসেবে ছিলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী শচীন্দ্রলাল সিং। ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে উনাকে বহু সংবর্ধনা দেওয়া হয়। ২০০৯ সালের ১৬ই জুন তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। ১৯৭৫ সালের ১৫ই মার্চ তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী শচীন্দ্র লাল সিং এই স্বাধীনতা সংগ্রামীকে একটি সরকারি শংসাপত্রও প্রদান করেছিলেন। এই স্বাধীনতা সংগ্রামী নিজের পরিবারটিকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে তৎকালীন বিগত সরকারের কাছে বহু চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুই হয় নি। এখন দেখার বিষয় রাজ্য সরকার কি সহযোগিতা করে।