স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২১ জুলাই : টি সি এ কার্যালয়ে তালা ঝোলানোর ঘটনায় হস্তক্ষেপ করল প্রশাসন। শুক্রবার সদর মহকুমা প্রশাসনের নির্দেশে ভাঙ্গা হয় তালা। দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ের জল গড়াল বহুদূর। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে রাজ্যের ক্রিকেটের ভাগ্য ঝুলে রইল। প্রশ্ন চিহ্নের মুখে খেলোয়াড়দের ভবিষ্যৎ।
তবে এই দোলাচলের মধ্যে ত্রিপুরা ক্রিকেট এসোসিয়েশনের কাজকর্ম লাটে উঠেছে। রাজ্যের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্ন চিহ্নের মুখে। বিগত দুই দিন যাবত পোষ্ট অফিস চৌমুহনী স্থিত টি সি এ- কার্যালয়ে কোন অজ্ঞাত কারনে তালা বন্ধ করে রাখা হয়। শুক্রবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে এদিন কার্যালয়ের মূল ফটকে সম্পাদকের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি নির্দেশ সাটিয়ে দেওয়া হয়। তাতে উল্লেখ রয়েছে ২১ জুলাই কার্যালয় বন্ধ থাকবে। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ক্রমে এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। এদিকে এদিন টি সি এ- কার্যালয়ে আসেন সভাপতি তপন লোধ। তবে এদিন অফিস কার্যালয়ে সামনে মোতায়েন করা হয় আরক্ষা কর্মী। পুলিশের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকেরা দফায় দফায় কার্যালয়ের সামনে যান। পশ্চিম থানার ওসি জানান দুটি অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অফিস বন্ধ রাখার অর্ডার পুলিশের কাছে নেই। বাকী অভিযোগ গুলি পুলিশ গ্রহণ করেছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তারজন্য আগাম নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসাবে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অফিস খোলা নিয়ে কোন আইন শৃঙ্খার অবনতি ঘটলে তবেই পুলিশ পদক্ষেপ নেবে বলে স্পষ্ট করে দেন তিনি। অন্যদিকে সভাপতি তপন লোধ জানান তাঁকে নির্বাচন করেছে জেনারেক বডি। তাই অ্যাপেক্স বডি তাঁকে সভাপতির পদ থেকে সরাতে পারে না। আইন বহির্ভূত ভাবে অ্যাপেক্স বডি বৈঠক করেছে বলে জানান তিনি। অফিস করতে তিনি সহ অণ্যান্যরা আসতেই পারেন বলে স্পষ্ট করে দেন।
এদিকে টি সি এ কার্যালয়ে তালা দেওয়া এবং অফিস বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে সম্পাদক তাপস ঘোষ জানান টি সি এ অফিস ভাঙ্গার জন্য একাংশ চক্রান্ত চালাচ্ছে। কর্মীদের হুমকী দিয়ে অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে টি সি এ পরিচালন কমিটি। গত ১৯ জুলাই কিছু সমাজ দ্রোহী এবং চক্রান্তকারী পরিচালন কমিটির সদস্যদের হুমকি এবং হেনস্থা করেন। পুলিশকে অবগত করা হলেও কোন সদুত্তর মেলেনি। অফিসের নিরাপত্তার খাতিরে এই কার্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে। এই চক্রান্তের পেছনে রয়েছে সদ্য প্রাক্তন সভাপতি তপন লোধ সহ বেশ কিছু ক্লাবের সদস্যরা। লুটপাট চালাতে তাদের এই অপকৌশল। এই বিষয়ে বি সি সি আই কে জানানো হয়েছে। অফিস কর্মীরা নিরাপত্তার কারনে কর্মবিরতীতে গেছেন। সকলের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবী জানান তিনি। শেষ পর্যন্ত অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে হস্তক্ষেপ করে প্রশাসন। পুলিশের সহায়তা নিয়ে টি সি এ- কার্যালয়ে যান সদর মহকুমা শাসক। এরপর টি সি এ- কার্যালয়ে তালা ভাঙ্গা হয় সদর মহকুমা প্রশাসন এবং একাংশ টি সি এ- পরিচালন কমিটির সদস্য, কর্মচারী এবং ক্লাব গুলির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে।
সদর মহকুমা শাসক জানান টি সি এ- র বর্তমান সভাপতির কাছে থেকে মহকুমা প্রশাসনকে অবগত করেন কে বা কারা কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। সেই মোতাবেক তালা ভাঙ্গা হয়েছে যাতে করে তারা ভেতরে প্রবেশ করতে পারে। মহকুমা প্রশাসন থেকে তালা ভাঙ্গার পর টি সি এ- কার্যালয়ে প্রবেশ করে সভাপতি সহ অন্যান্যরা। ফের একাবার বর্তমান পরিচালন কমিটির একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন সভাপতি তপন লোধ। অনৈতিক ভাবে অফিসে তালা দেওয়া হয়েছে। এর পেছনে তিনি বর্তমান সম্পাদককে দায়ী করেন। তার বিরুদ্ধে তদন্ত পক্রিয়া শুরু হওয়ার পরেই অফিসে আসতে নিষেধ করা হয়। তদন্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব দেওয়া হয় যুগ্ম সম্পাদককে। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে সম্পাদক এই অনৈতিক কাজ করেছেন বলে অভিযোগ করেন সভাপতি তপন লোধ। টি সি এ- র দখল নিয়ে দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ ঘিরে দিন ভোর সড়গড়ম ছিল পোষ্ট অফিস চৌমুহনী চত্বর। অফিস কার্যালয় জুড়ে মোতায়েন করা হয় পুলিশ কর্মী। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে তালা বন্ধ কার্যালয় খুলে গেলেও এর জল আর দূর পর্যন্ত গড়াবে তা এক প্রকার স্পষ্ট। যার জেরে ব্যহত হতে চলেছে রাজ্যের ক্রিকেট। খেলোয়াড়দের ভাগ্য। এই ঘটনায় নিন্দা ক্রীড়া প্রেমীদের মধ্যে।