স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৪ জানুয়ারি : মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের সামনে গাড়ি যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে আটকে যাওয়ায় ট্রাফিক পুলিশ কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রকে মারধরের শিকার হতে হয় বৃহস্পতিবার। ঘটনাটি ঘটেছিল রাজধানীর সার্কিট হাউস ভিআইপি রোডে। দুই ছাত্রকে মারধোর করার ঘটনায় সরব হলো রাজ্যের বাম ছাত্র যুব সংগঠন। তাদের অভিযোগ এদিন কনভয়ের সামনে দুজন ছাত্র গাড়ি নিয়ে আটকে যাওয়ায় তাদের ট্রাফিক পুলিশ প্রহার করেছে বলে অভিযোগ। তাই প্রশ্ন উঠছে যে রাজ্যে দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করে না, সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে খুশি করতে ছাত্রদের কেন প্রহার করা হলো।
এটা গণতান্ত্রিক রাজ্যের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক, লজ্জার এবং নিন্দাজনক বলে ছাত্র-যুব ভবনে শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিমত ব্যক্ত করেন এস এফ আই রাজ্য সভাপতি সন্দীপন দেব। এদিকে টি এস ইউ সাধারণ সম্পাদক নেতাজি দেববর্মা বলেন, ইকফাই ইউনিভার্সিটি থেকে দুই ছাত্র বাড়ি ফেরার সময় মাঝ পথে তাদের গাড়ি আটকে গিয়েছিল। তাই ট্রাফিক পুলিশ দ্বারা তাদের মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এবং দুই ছাত্রকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেছে ট্রাফিক পুলিশ। কিন্তু কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের এভাবে মারধর করার অধিকার নেই বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজ্যে এসে দু’লাইন ককবরক ভাষায় বলে দিলে হবে না। ছাত্রদের উপর পুলিশ যেভাবে মারধর করেছে সেই ঘটনা গণতন্ত্রের উপর আক্রমণ বলে চলে। সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দরকার। এবং অভিযুক্ত ট্রাফিক পুলিশদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা দাবি জানান তিনি। পাশাপাশি অভিযুক্ত ট্রাফিক পুলিশদের অবিলম্বে বরখাস্ত করার দাবি জানান। এবং তাদের শাস্তি দেওয়া না হলে আগামী দিনের আন্দোলনে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এই ঘটনা প্রসঙ্গে এদিকে ডি ওয়াই এফ আই রাজ্য সম্পাদক নবারুণ দেব প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী রাজা নাকি, নাকি তিনি ভিনগ্রহের জীব ? উনার কনভয়ের সামনে গাড়ি যান্ত্রিক সমস্যায় দাঁড়াতে পারবে না। পুলিশ মারধর করবে।
যখন রাজ্যের পুলিশকে পিষে মারছে দুর্বৃত্তরা, গণধর্ষণের শিকার হচ্ছে মেয়েরা, পত্রিকা অফিস এবং বিরোধী দলের অফিস ভাঙচুর করা হচ্ছে এবং অগ্নি সংযোগ করা হচ্ছে। কোন গ্রেপ্তার নেই। তখন পুলিশ কোথায়? প্রতিদিন শহরে মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে। পুলিশ কোনরকম তদন্ত না করে বলে দিচ্ছে অস্বাভাবিক মৃত্যু। এগুলি কোন সঠিক তদন্ত বা দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার না হওয়ার পেছনে একটাই কারণ পুলিশকে সাথে সেসব ঘটনা করছে দুবৃত্তরা। আর মুখ্যমন্ত্রী গাড়ির সামনে যখন ছাত্ররা যান্ত্রিক সমস্যার কারণে দাঁড়িয়ে পড়ে তখন তাদের পুলিশ দ্বারা প্রহার হতে হয়। এটা সভ্য সমাজের জন্য কাম্য নয়। আর এটা পুলিশের বিরত্ব নয় বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন করোনার মধ্যে আনন্দ নগর এলাকায় এবং শান্তি বাজারে মেলায় শাসক দলের নেতারা অরকেস্টার করছে। পুলিশের হিম্মত নেই তাদের বাধা দেওয়ায়। কিন্তু পুলিশ মুখ্যমন্ত্রীকে খুশি করতে ছাত্রদের পেটাচ্ছে। পুলিশ ভুলেই গেছে তাদের দায়িত্ব শুধু মুখ্যমন্ত্রীর সুরক্ষা নয়। পুলিশের দায়িত্ব রাজ্যের ৩৭ লক্ষ মানুষের নিরাপত্তার। মুখ্যমন্ত্রীর সুরক্ষার যদি এতো ইচ্ছে থাকে তাহলে যেন মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আলাদা রাস্তা তৈরি করা হয়। সুতরাং রাষ্ট্রপতি কালাসপ্রাপ্তদের এই ধরনের ভূমিকা সভ্য সমাজের গ্রহণযোগ্য নয়। তাই যাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তার দাবি জানান তারা। নয়তো আন্দোলনে নামবে বলে হুশিয়ারি দেন।