স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৫ জুলাই : যে বাবা কষ্ট করে কুলে পিঠে করে দুই ছেলে মানুষ করেছেন সেই ছেলেরা হয়ে গেল অমানুষ। নিজেরা আর্থিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত হলেও মা-বাবার খোঁজ খবর রাখা তো দূর, জন্মদাতা বাবার মৃত্যুর পর বাড়ি পর্যন্ত এলেন না দুই ছেলে। সামাজিক অবক্ষয়ের এই করুণ ছবি ধরা পড়লো তেলিয়ামুড়ায়।
তেলিয়ামুড়া থানাধীন নেতাজিনগর এলাকার বাসিন্দা রঞ্জিত তলাপাত্র। উনার দুই ছেলে দুই মেয়ে। পারিবারিক এক ঝামেলার কারণে দুই ছেলে শিলচর চলে যান। সেখানে একজন জুয়েলারির দোকান দিয়েছেন। অন্যজন জুয়েলারিতে থাকেন। অভিযোগ দুই ছেলে মা-বাবার কোন যোগাযোগ রাখেন না। বাড়িতেও আসেন না। রণজিৎ বাবুর স্ত্রী আবার কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। সভ্য সমাজে অমানুষ দুই কুলাঙ্গার ছেলে মা-বাবার দেখভাল না করায় রণজিৎ বাবুর এক মেয়ে তাদের দেখাশোনা করে আসছেন নিজের সংসারের কাজের পরেও। প্রায় তিন বছর ধরেই অসুস্থ রণজিৎ বাবু। মেয়েই চিকিৎসা সহ সমস্ত খরচ বহন করে আসছেন। কিন্তু কুলাঙ্গার ছেলেরা খোঁজও রাখেন না।
সম্প্রতি এলাকার লোকজন অসুস্থ বাবাকে দেখে যাওয়ার জন্য বার কয়েক অনুরোধ করলে দুই ছেলে এসে দেখে যান। তবে তারা বাড়ির বদলে হোটেলে থেকেছেন। অবশেষে মঙ্গলবার রণজিৎ বাবুর মৃত্যুর পর কুলাঙ্গার ছেলেরা সত্যিকারের অমানুষের পরিচয় দিলেন। এলাকা থেকে দুই পাষন্ড ছেলেকে ফোন করে বাবার মৃত্যুর খবর জানানো হলেও তারা আসবে না এবং বাবার অন্ত্যেষ্টিতে থাকবেন বলে সাফ জানিয়ে দিল। এদিকে জানা গেছে মৃত ব্যক্তির এক ছোট ভাই ধর্মনগর থেকে এসে শাস্ত্র মতে সমস্ত কাজ করবেন। এলাকাবাসী দুই ছেলের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ। তারা চান আইনি শুধু নয়, সামাজিক বয়কটও যাতে দুই ছেলেকে করা হয়। এই ঘটনা জানাজানি হতেইও ছিঃ ছিঃ রব পড়ে। মঙ্গলবার এই ঘটনার খবর পেয়ে মৃত ব্যাক্তির বাড়িতে যান তেলিয়ামুড়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা বিধানসভার মুখ্য সচেতক কল্যাণী সাহা রায়, পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন। তারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।