স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৯ জুন : কুমারঘাটে উল্টোরথে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে বৃহস্পতিবার জিবি হাসপাতালে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। আহতদের চিকিৎসায় যাতে কোন ধরণের সমস্যা না হয় সেজন্য মুখ্যসচিব থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব এবং জিবির মেডিকেল সুপারকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন তিনি। এক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় জখম রোগীদের ঔষধপত্র থেকে শুরু করে খাওয়া দাওয়া সহ সমস্ত কিছুর ব্যয় ভার রাজ্য সরকার বহন করবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, বুধবার কুমারঘাটে উল্টো রথ ফেরার সময়ে জাতীয় সড়কের উপর রথে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী এই দুর্ঘটনায় ২ জন শিশু সহ ৭ জন নিহত ও ১৬ জন আহত হয়েছেন।
এদিন জিবি হাসপাতালে গিয়ে আহত রোগীদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ সাহা। এর পাশাপাশি কর্তব্যরত চিকিৎসক সহ জিবি কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলেন। পরে অপেক্ষমান সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, গোটা বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। রোগীদের সাথেও কথা হয়েছে। আহত রোগীদের সুস্থ করে তুলতে চিকিৎসক থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আহত রোগীরা খুব সহসাই সুস্থ হয়ে উঠবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এর পাশাপাশি রোগীদের চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তার বিষয়ে কোন সমস্যা হবে না বলেও স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানান, আমি ব্যক্তিগতভাবে মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্য সচিব এবং জিবির মেডিকেল সুপারকে নির্দেশ দিয়েছি যে সরকার খাদ্য ও ওষুধ সহ সমস্ত খরচ বহন করবে। রাজ্য সরকার সাধ্য মতো সাহায্য করবে।
কুমারঘাটে এই মর্মান্তিক ঘটনার পরপরই রাতের ট্রেনে চেপে সেখানে গিয়ে গোটা পরিস্থিতির খোঁজখবর নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। খোঁজ নিয়েছেন নিহত ব্যক্তিদের। কথা বলেছেন মৃতদের পরিজনদের সঙ্গে। সেই সাথে হাসপাতালে গিয়ে আহতদের শারীরিক অবস্থা প্রত্যক্ষ করেন।
পরবর্তী সময়ে কুমারঘাট ডাকবাংলোতে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী আহত, নিহতদের আর্থিক সহায়তার ঘোষণা দেন। তিনি জানান, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক নিহতের নিকট আত্মীয়কে চার লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। তাছাড়া এই দুর্ঘটনায় ৬০ শতাংশেরও বেশী আহতদের ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ আহতদের ৭৪ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়াও আহতদের হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী রিলিফ ফান্ড থেকে এই ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এই ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার প্রয়োজনে বহিঃরাজ্যে নিয়ে যেতে হলে সরকার তার ব্যয়ভার বহন করবে। পাশাপাশি এই ঘটনার তদন্তের জন্য ইতিমধ্যেই জেলাশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।