স্যন্দন প্রতিনিধি। আগরতলা। ২২ জুন। অবশেষে তপন দাস বদলি হলো ধর্মনগরে । সফেদ এর গেজেটেড অফিসার সংঘের সভাপতি তপন দাস বদলি হয়েছে শিল্প দপ্তরের সফেদের মেম্বার সেক্রেটারি থেকে ধর্মনগরে ডেপুটি ডিরেক্টর হিসেবে। সূত্রের মারফত জানা গেছে খোদ মুখ্যমন্ত্রী এই দুর্নীতিবাজ তপন দাস কে বদলির ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন।
বিধানসভার নির্বাচনের পূর্বেই টিংকু রায়ের সঙ্গে এই তপন দাসের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎকারী, চাকরি বাণিজ্য এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছিল। মাঝপথে তদন্তকে বিভিন্ন নেতার মাধ্যমে প্রভাবিত করার অপচেষ্টা করেছিল এই দুর্নীতিবাজ তপন দাস। কিন্তু এতেও পার পাওয়া গেল না। তপন দাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের পাহাড় জমা হয়েছিল। হঠাৎ ক্ষমতা পেয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করেছিল এই তপন দাস। তবে শেষ রক্ষা হলো না। জানা গেছে এই বদলিই শেষ নয়। দুর্নীতির অভিযোগ গুলির তদন্ত করতে গিয়ে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে এসেছে। ভবিষ্যৎ শাস্তি কি হবে তা এখনো আন্দাজ করা যাচ্ছে না।
এই সেই তপন দাস যে বামপন্থী পরিবারে বড় হয়ে যার ভাই এখনো বিলোনিয়ায় বামপন্থী নেতা হঠাৎ করে 2018 তে ক্ষমতা পরিবর্তনের পর গেরুয়া আবীর মেখে , গেরুয়া রূপ ধারণ করে। আর রাতারাতি গেজেটেড অফিসার সংঘ নামক সংগঠন বানিয়ে স্বঘোষিত সভাপতি হয়ে যান। ভারতীয় মজদুর সঙ্গে নাম লেখান এবং ভারতীয় মজদুর সংঘের অনুমোদন নিয়ে আসেন অনেক ছলা কলা করে। কিন্তু এই তপন দাস এর ক্ষমতার এত লোভ যে গেজেটেড অফিসার সংঘের সভাপতি পদ পেয়েও তার ক্ষমতার তেষ্টা মিট ছিল না। তাই গেজেটেড অফিসার সংঘের সাথে ভারতীয় মজদুর সংঘের ও সভাপতি হওয়ার জন্য অনৈতিক এবং অসৎ উপায় অবলম্বনের মাধ্যমে সভাপতি হওয়ার চেষ্টা করছিল। এই অসৎ উপায় অবলম্বন করতে গিয়ে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ভারতীয় মজদুর সংঘের রাষ্ট্রীয় সম্পাদক কে মঠ চৌমুনী স্থিত এক হোটেলে শারীরিকভাবে আক্রমণ করে বসে সে এবং তার সাঙ্গোপাঙ্গরা।
সঙ্গে ছিল শিক্ষা দপ্তরের দেবাশীষ রায়, গৌতম দেব , রূপক ভৌমিক, রূপক সাহা, এছাড়া আরো অনেকেই। আক্রমণ করতে গিয়ে উল্টো বেদম পেদানি খেয়ে এরা হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় । এদের বিরুদ্ধে সর্বভারতীয় সম্পাদক মামলাও করে । যেই মামলা এখনো চলছে। এর পরিণতি হিসেবে ভারতীয় মজদুর সংঘের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এই চরম উচ্ছন্নে যাওয়া কর্মীদের বি এম এস থেকে বহিষ্কার করে। কিন্তু ক্ষমতার স্বাদ এদের পেতেই হবে। বহু ছলা কলা করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও তার ওএসডি সঞ্জয় মিশ্র , বর্তমান সভাপতি রাজিব ভট্টাচার্জী এদের হাতে পায়ে ধরে বিবেকানন্দ বিচার মঞ্চ নামক এনজিওতে ঢুকে পড়ে এবং এদের ভুল বুঝিয়ে বিবেকানন্দ বিচার মঞ্চের কর্মচারী সেল গড়ে তোলে যা ছিল অনৈতিক এবং ধান্দাবাজির এক চূড়ান্ত নিদর্শন । তাদের উদ্দেশ্য ছিল প্রাক্তনের ভজনা করে ফেসবুকে শুধু প্রাক্তনের প্রচার করে নিজেদের আখের গুছিয়ে নেওয়া, ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি আদায় করা। কিন্তু ত্রিপুরার মানুষ বুঝতে পেরে কর্মচারীরা এদের বর্জন করেছে। বিবেকানন্দ বিচার মঞ্চকে ব্যবহার করে যে পরিমাণ অনৈতিক কার্যকলাপ , কমিশন বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য , ভাউচার বাণিজ্য এবং চাকরি বাণিজ্য চালিয়ে গেছে এই সমস্ত দুর্নীতির সমস্ত কিছু তথ্য সহ বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর হাতে জমা হয়েছে। যার পরিণতি দুর্নীতিবাজ, কমিশনবাজ , চাকরি বাণিজ্যবাজ এবং ক্ষমতা লোভী এই তপন দাসের বদলি। আপাতত বদলি হলেও ভবিষ্যৎ আরো কঠিন হতে চলেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে বদলির অর্ডার বের হওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই এই দুর্নীতিবাজ তপন দাস তার গডফাদারদের শরণাপন্ন হয়েছে এই বদলি আটকানোর জন্য। কিন্তু তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যেহেতু মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এই বদলি হয়েছে এটা কোনভাবেই কোন কিছু করা সম্ভব না । তাহলে সরকারের আর কোন মূল্যই থাকবে না। প্রাপ্ত খবরে আরো জানা গেছে শুধু এই তপন দাস নয়, দুর্নীতিবাজ এরকম আরো অনেক রাঘব বোয়াল তাদেরও ঘাড়ে শনি নেমে আসবে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই। তপন দাসের এই বদলির ফলে ভারতীয় মজদুর সংঘের নৈতিক জয় হল বলে ভারতীয় মজদুর সংঘের নেতৃত্বরা মনে করছেন।