Sunday, June 15, 2025
বাড়িরাজ্যগাড়ি ও স্কুটির মুখোমুখি সংঘর্ষে মর্মান্তিক মৃত্যু ১

গাড়ি ও স্কুটির মুখোমুখি সংঘর্ষে মর্মান্তিক মৃত্যু ১

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৬ জুন :  মৃতদেহ মর্গে নিয়ে যাওয়া জন্য ঠেলাঠেলি প্রশাসনিক কর্মীদের। আরাম কেদারায় বসে নিজেদের আরাম বোধের তৃপ্তি মিটছে না পুলিশ এবং টি এস আর জওয়ানদের। অতি অভিজ্ঞতা তারা এতটাই নিষ্ঠুর হয়ে গেছে মৃত দেহটি পর্যন্ত হাতে তুলে নিচ্ছে না। এই নমুনাটি দেখা গেল মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটার নাগাদ বিশালগড়ের জাঙ্গালিয়া স্কুল সংলগ্ন এলাকায়। গাড়ির সাথে স্কুটির মুখোমুখি সংঘর্ষে মর্মান্তিক মৃত্যু এক যুবকের। মৃত যুবকের নাম চন্দন দেবনাথ। পিতার নাম ক্ষিতীশ দেবনাথ। বাড়ি উত্তর চড়িলাম গ্রামের গৌতম কলোনি এলাকায়। ঘটনার বিবরণে জানা যায় চন্দন দেবনাথ মঙ্গলবার সকালে TR-07F-5605 নাম্বারে স্কুটি নিয়ে বিশালগড় থেকে উত্তর চরিলাম নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। জাঙ্গালিয়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অপরদিক থেকে আসা একটি ডি.আই গাড়ি চন্দন দেবনাথের স্কুটিকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে চন্দন দেবনাথের মাথা ফেটে দুই টুকরো হয়ে যায়।

রক্তাক্ত অবস্থায় দীর্ঘ সময় রাস্তায় পরে থাকে চন্দন দেবনাথ। দীর্ঘ সময় রাস্তায় পরে থাকার ফলে মৃত্যু হয় চন্দন দেবনাথের। পরবর্তী সময় স্থানীয়রা ঘটনা প্রত্যক্ষ করে দমকল কর্মী ও পুলিশকে খবর দেয়। যথারীতি ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ এবং দমকল কর্মীরা। কিন্তু দমকল কর্মী, টি এস আর ও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসার পর শুরু হয় তাল বাহানা। দমকল কর্মীরা বলছে মৃতদেহটি পুলিশকে নিয়ে যাওয়ার জন্য, আর পুলিশ বলছে টিএসআর জওয়ানদের নিয়ে যাওয়ার জন্য। টি এস আর জওয়ানরা পরিষ্কার জানিয়ে দেয় মৃতদেহকে তারা হাত লাগাবে না। ফলে রাস্তায় মাঝে পড়ে রইল দীর্ঘক্ষণ মৃতদেহ। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের দুই অফিসার। তারাও নিজের গায়ে রক্ত লাগতে দেয়নি। এই দুই অফিসার উপর মহলকে বারবার ফোন করতে দেখা গেছে। শেষ পর্যন্ত দমকল কর্মীরা মৃতদেহ উদ্ধার করে বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু মর্গে নিয়ে এসে মৃতদেহ দমকল কর্মীর গাড়িতে ফেলে রাখা হয় দীর্ঘ আধঘন্টা। সেখানো টিএসআর-কে হাত লাগাতে দেখা যায়নি।

আবার হাসপাতালে মর্গে ছিল না পুলিশ। এক প্রকার ভাবে প্রশাসনের গড়িমসি ভালো প্রত্যক্ষ করা যায় এদিন। দায়িত্বজ্ঞান কতটা যে হারিয়ে ফেলেছে এই গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর গুলির কতিপয় কর্মীরা সেটা প্রত্যক্ষ না করলে জনগণ ভুল করবে। রাস্তায় কোন দুর্ঘটনা হলে স্থানীয়রা পর্যন্ত আহত মানুষকে বা মৃতদেহটি হাসপাতালে পাঠাতে এগিয়ে আসে। আর সেখানে আইনের রক্ষকরা এবার আইন শেখাচ্ছে। এই যদি হয় গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর গুলির ভূমিকা তাহলে মানুষ অত্যন্ত অসহায়। কিন্তু কাদের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে এই পুলিশের বারো মাসে তেরোবার বেতন হয় সেটা তারা ভালো করেই জানে। তারপরও এ ধরনের এহেন ভূমিকা অত্যন্ত নিন্দা জনক। এইদিকে ঘটনার খবর পেয়ে বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে ছুটে যায় মৃত চন্দন দেবনাথের পরিবারের লোকজন। মৃত চন্দন দেবনাথের ছোট ভাই জানায় চন্দন দেবনাথ এইদিন সকালে আগরতলা থেকে বিশালগড় যায়। বিশালগড় যাওয়ার পর সে পরিবারের লোকজনদের সাথে ফোনে কথা বলেছিল। জানিয়েছিল সে বিশালগড় থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছে। কিছু সময় বাদে পরিবারের লোকজনদের কাছে খবর যায় চন্দন দেবনাথ দুর্ঘটনার কবলে পরেছে। তখন পরিবারের লোকজন হাসপাতালে ছুটে এসে দেখতে পায় চন্দন দেবনাথের মৃতদেহ। হাসপাতাল চত্বরে কান্নায় ভেঙ্গে পরে মৃত চন্দন দেবনাথের পরিবারের লোকজন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য

error: <b>Alert: </b>Content selection is disabled!!