স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩১ মে : হাতেনাতে ধরা পড়া চড়িলাম দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিশ্বজিৎ দেবনাথকে প্রাইভেট টিউশন করানোর অভিযোগে শোকজ করেছে জেলা শিক্ষা দপ্তর। শিক্ষা দপ্তরের ডেপুটি ডাইরেক্টর হাবুল লোধ জানিয়েছেন, সিপাহীজলা জেলা শাসকের নির্দেশে শিক্ষক বিশ্বজিৎ দেবনাথের প্রাইভেট টিউশন সেন্টারে প্রশাসনিক হানা দেওয়া হয়।
এতে হাতে নাতে ধরা পড়ে যান গুণধর শিক্ষক। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জেলা শিক্ষা দপ্তরের কার্যালয় থেকে এই শিক্ষককে তিন দিনের মধ্যে ঘটনার জন্য কারণ দর্শানোর সময় বেঁধে দিয়ে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়। তিনদিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর পর উক্ত বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে জেলা শিক্ষা দপ্তর। উল্লেখ্য, দপ্তরে নির্দেশকে লংঘন করে সরকারি স্কুলে শিক্ষকতার পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থ রোজগারের জন্য একাংশ সরকারি শিক্ষক প্রাইভেট টিউশানি চালিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। এক ঘণ্টা প্রাইভেট টিউশনের জন্য অভিভাকদের কাছ থেকে নিয়ে যাচ্ছেন হাজার হাজার টাকা।
রাজ্যজুড়ে চলছে এই অরাজকতা। বাম আমল থেকে এই অরাজকতা চলে আসছে। সরকারি নিয়ম রয়েছে সরকারি স্কুলের শিক্ষক প্রাইভেট টিউশন করতে পারবে না। কিন্তু সরকারি এই নির্দেশকে মান্যতা দিচ্ছে না একাংশ শিক্ষক। একাংশ শিক্ষক রীতিমতো কোচিং সেন্টার খুলে বসেছেন। আবার একাংশ শিক্ষক বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রাইভেট টিউশান করছেন। মাসের শেষে ভিক্ষুকের মতো পকেট ভারী করার জন্য হাত পেতে অভিভাবকদের কাছ থেকে নিয়ে যাচ্ছেন মোটা অঙ্কের টাকা। সম্প্রতি উচ্চ শিক্ষা দপ্তর থেকে জেলা শিক্ষা আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয় কোন কোন শিক্ষক প্রাইভেট টিউশন করছে, তাদেরকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য।
কিন্তু জেলা শিক্ষা আধিকারিকরাও কোন এক অজ্ঞাত কারনে নীরব ভূমিকা পালন করে চলছে। অবশেষে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার রাতে সিপাহীজলা জেলা প্রশাসন এই প্রাইভেট টিউশানি বন্ধ করতে অভিযানে নামে। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা হানা দেয় চরিলামের মধ্যপাড়া এলাকায়। সেখানে চড়িলাম দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিশ্বজিৎ দেবনাথ রীতিমতো ঘর ভাড়া করে কোচিং সেন্টার খুলে প্রাইভেট টিউশন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা গোটা ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। এবং শিক্ষক বিশ্বজিৎ দেবনাথের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেন। তারপর এই কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে। শুধুমাত্র সিপাহীজলা জেলায় নয়, রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলায়, প্রতিটি মহকুমায় একাংশ শিক্ষক দিনের পর দিন টিউশন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারি নির্দেশ অমান্য করেই প্রাইভেট টিউশন চালিয়ে যাচ্ছে সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা। প্রশাসনিক আধিকারিকরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করলে সহজেই প্রাইভেট টিউশনের বাণিজ্য পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব। অন্যথায় সরকারি নির্দেশিকা কাগজে পত্রে সীমাবদ্ধ থেকে যাবে। বাস্তবে কোন কাজ হবে না। এখন দেখার জেলা শিক্ষা আধিকারিকরা সরকারি নির্দেশিকা কার্যকর করতে কতটা উদ্যোগী হয়।