স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৫ মে : ঘুম ভাঙতেই ধ্বংসলীলা, কান্নার রোল গৃহহীন পরিবারের লোকজনদের। ঘটনা উদয়পুর রায়াবাড়ি মুসলিম পাড়ায়। উচ্ছেদ হয় ৭ পরিবার। জানা যায়, উদয়পুর কিল্লা থানাধীন পূর্ব গকুলপুর রাইয়াবাড়ি মুসলিম পাড়া এলাকায় ৪৬ টি পরিবার দীর্ঘ বছর ধরে বসবাস করে আসছিল।
এই পরিবার গুলিকে এক সময় সন্ত্রাসবাদীদের দ্বারা আক্রমণ হওয়ায় বাড়িঘর ছেড়ে উদবাস্তু হয়ে ১৯৮৫ সাল থেকে ২০০৩ সালে এখানে এসে মাথা গুঁজে।
তৎকালীন রাজ্য সরকার তাদের বসবাস করার জন্য পুনবাসন দেয়। সরকার এই পরিবার গুলোকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর যেমন প্রদান করে, তেমনি রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতে পানীয় জল, বিদ্যুৎ সহ রাস্তাঘাট তৈরী করে দেওয়া হয়। তারপরও বেশ কয়েক বছর ধরে বনদপ্তর পরিবার গুলোকে উচ্ছেদ হতে নির্দেশ দেয়। অবশেষে বৃহস্পতিবার গোমতী জেলার পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনী সহ জেলা প্রশাসন, মহকুমা প্রশাসন, বনদপ্তরের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে সাত পরিবারের ঘর ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। অসহায় পরিবারগুলো হল আবিত মিঞা, রাকেশ মিঞা, সাজাহান মিঞা, জলিল মিঞা, আব্দুল হালিম, মির হোসেন, আমির হোসেন। এদিন বুল ডজার দিয়ে ঘরগুলি ভাঙ্গা দেয়।
তখন লোকজনদের আত্মনাতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠে। সদ্যজাত শিশু নিয়ে মহিলারা চিৎকার করে বলতে থাকে বাঁচার জন্য একটু জায়গায় ব্যবস্থা করার জন্য। রান্না করা ভাত গুলিকে খেতে দেয়নি প্রশাসন। ঘর ভাঙ্গা দৃশ্য দেখে ৭০ বছরের রাইলা বিবি সইদা বিবি, আকিমা বেগম, মনোরা বেগমের দুই মাসের মেয়েকে নিয়ে মাটিতে পড়ে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলে। রাস্তায় পরে থাকলেও প্রশাসনের বিবেক একটু নাড়া দেয়নি।এদিকে গোমতী জেলার বন দপ্তরের আধিকারিক ডঃ এন কে চঞ্চল জানান সরকারি নির্দেশ মতো তারা উচ্ছেদ করেছে। বৃহস্পতিবারের উচ্ছেদ অভিযানে উপস্থিত ছিলেন গোমতী জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক সুমিত লোধ, জেলা বন দপ্তরের আধিকারিক ডঃ এন,কে চঞ্চল, মহকুমা শাসক জয়ন্ত ভট্টাচার্যী, অতিরিক্ত মহকুমা শাসক রাজু দে, সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিক।