Friday, April 19, 2024
বাড়িরাজ্যবিধানসভা অধিবেশনে জঙ্গলের রাজত্ব চলছে বলে অভিযোগ জিতেনের

বিধানসভা অধিবেশনে জঙ্গলের রাজত্ব চলছে বলে অভিযোগ জিতেনের

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৮ মার্চ : ত্রয়োদশ বিধানসভা অধিবেশন জঙ্গলের রাজত্ব বলে অভিযোগ তুলেছে সিপিআইএম। বিধানসভা অধিবেশনের গত পাঁচ বছরের মতোই আবারো জঙ্গলে রাজত্ব কায়েম করতে চাইছে এ জোট সরকার। ভোটের ফলাফলের পর রাজ্যে যে সন্ত্রাস সৃষ্টি হয়েছে সেই বিষয়ে কথা বলতে দেওয়া হয়নি বলে জানান বিধানসভা অধিবেশনের শেষ লগ্নে এসে অভিযোগ তুললেন সিপিআইএম দলের পরিষদীয় নেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী।

এদিন বিধানসভার কর্নারে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, গত পাঁচ বছর বিজেপি ও আই পি এফ টি জোট সরকারের রাজত্বকালে আইনের শাসন এবং গণতন্ত্র ত্রিপুরা থেকে বিলুপ্ত হয়েছে। এই আইনের শাসন এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিল রাজ্যের জনগণ। সংখ্যাগরিষ্ঠ ৬১ শতাংশ ভোট এই ত্রয়োদশ বিধানসভা নির্বাচনে মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে জনগণ প্রদান করেছে। মাত্র ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়ে ভোট ভাগাভাগির কারণে ৩৩ টি আসন পেয়ে সরকারে বসতে পেরেছে বিজেপি এবং আইপিএফটি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট না পেয়েও বিজেপি শিক্ষা হয় নি। গত পাঁচ বছরের মতোই আবারো জঙ্গলে রাজত্ব কায়েম করতে চাইছে তারা। এবার বিধানসভার ভেতরে পর্যন্ত জঙ্গলের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। কারণ বিধানসভা অধিবেশন শুরু দিন অর্থাৎ ২৪ মার্চ সন্ত্রাস প্রসঙ্গে তুলতে চাইলে এটা সাব জুডিশিয়াল বলে বাতিল করে দেন অধ্যক্ষ। একইভাবে দ্বিতীয় দিনও ভোট ফলাফলের পর সন্ত্রাসের ঘটনা উত্থাপন করতে দেওয়া হয়নি বিধানসভা অধিবেশনে।

কিন্তু এটা কিভাবে বিধানসভার বহির্ভূত বিষয় হল সেটা জানা নেই বিরোধী দল সিপিআইএমের। এমনকি চাকরিচ্যুত ১০,৩২৩ -এর ন্যায়ের জন্য প্রাক্তন বিচারপতি এবি পাল -কে নিয়ে যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেই বিষয়ে কতটা অগ্রগতি হয়েছে, তা পর্যন্ত উথাপন করে জানতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু এটা শিক্ষা দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর জবাব দেওয়ার দায়িত্ব ছিল। কিন্তু বিষয়টি উত্থাপন করতে না দেওয়ার পেছনে মূল কারণ হলো একজন মন্ত্রীর উপর সব দপ্তর দেওয়ার ফলে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বিধানসভা অধিবেশনে। কথা বললে ট্র্যাজেরি বেঞ্চ থেকে আফ্রিকার জঙ্গলের পশুর মত আসছে। বিধানসভা অধিবেশনে মন্ত্রী রতনলাল নাথ দাঁড়িয়ে রাস্তার গুন্ডাদের মত যেভাবে ধমক দিয়ে কথা বলেছেন তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এর ফলে যারা এবার বিধানসভায় নতুন সদস্য হয়েছে তারা কি শিখবেন সেটাও দানা বাঁধছে বলে জানান জিতেন্দ্র চৌধুরী। শ্রী চৌধুরী আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে আরো বলেন মুখ্যমন্ত্রীকে বোবা বানিয়ে ট্র্যাজেরি বেঞ্চের সদস্যরা এগুলি করছেন। গত ২ মার্চ ভোটের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর থেকে সারা রাজ্যে ৬৩০ জন সিপিআইএম কর্মী দৈহিক আক্রমণের শিকার হয়েছে। ৮৫ জনের ঘর সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়ে গেছে।

৬৭ জনের ঘর আংশিক পুড়েছে। ৫৫ জন মৎস্য চাষী এবং ২৮৬ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৪২ টি গাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। ৭৩ টি অটো ও টমটম নষ্ট করে দিয়েছে। ৩২ টি দ্বিচক্র যান ভাঙচুর এবং লুটপাট করা হয়েছে। ৫৪৯ টি গাড়ি রাস্তায় নামতে দেওয়া হচ্ছে না। ১৬৪৭ টি দোকান ঘর ভাঙচুর হয়েছে। ৪৪৭ টি দোকান ঘর খুলতে দেওয়া হচ্ছে না। ছয়টি পরিবারকে উচ্ছেদ করে দিয়েছে। ৫২৭ জন বাড়িতে প্রবেশ করতে পারছে না। শাসক দলের আশ্রিত দুর্বৃত্তদের দ্বারা এই ক্ষতিগ্রস্ত তথ্য বিধানসভায় গত ২৪ মার্চ তোলার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তুলতে দেওয়া হয়নি। পরিষদীয় নেতা রতন লাল নাথের জন্য বিধানসভায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিধানসভার গড়িমা নষ্ট করে দেওয়া চেষ্টা করছেন। এবং বিধানসভার মান নামিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেন জিতেন্দ্র চৌধুরী। এদিন তিনি আরো বলেন গত পাঁচ বছরে এই জোট সরকার কোন একটি হাসপাতাল নির্মাণ করেছে বা নার্স এবং প্যারামেডিকেল কর্মী নিয়োগ করেছে বলে দেখাতে পারবে না। হাসপাতাল গুলি কিছু ডাক্তার দিয়ে চলছে। আবার পবিত্র বিধানসভা অধিবেশনে দাঁড়িয়ে স্বাস্থ্য দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ত্রিপুরায় স্বাস্থ্য পরিষেবার অভূতপূর্ব পরিবর্তন হয়েছে বলে দাবি করছেন। শাসক দল তারা প্রশাসন প্যারালাইসিস হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে কালো দিনের পরিবর্তন ঘটাতে হবে বলে জানান পরিষদীয় দলনেতা। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে বিধায়ক নির্মল বিশ্বাস সহ অন্যান্য বিধায়করা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য