স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৫ ফেব্রুয়ারি : ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস এবার আমতলী থানাধীন হাঁপানিয়া সুকান্ত পল্লী এলাকায়। রাতে আধারে দুটি বোমার আওয়াজে ঘুম কেড়ে নেয় এলাকাবাসীর। পরবর্তী সময় জানতে পারে এলাকার বাবুল সাহার বাড়িতে বোমা নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। অভিযোগ, শুক্রবার রাতে বারোটা নাগাদ এলাকার বাবুল সাহার বাড়িতে দুটি বোমা নিক্ষেপ করেছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ঘর থেকে বের হয়ে বাবুল সাহার পরিবারের লোকজনেরা চিৎকার শুরু করলে ছুটে আসে আশেপাশের মানুষজন।
এলাকাবাসী প্রতিরোধ গড়ে তুললে বাইক বাহিনী ঘটনার স্থল থেকে পালিয়ে যায়। ২৩ বিধানসভা নির্বাচনে বাবুল সাহা বাধারঘাট বিধানসভা কেন্দ্রের ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী পার্থ রঞ্জন সরকারের হয়ে দলীয় প্রচারের কাজ করেছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনার সংঘটিত করেছে বিজেপির বাইক বাহিনী বলে ধারণা বাবুল সাহার। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো রাতের বেলায় আমতলী থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ ছুটে যায়নি। এদিকে বাবুল সাহা আরো জানান এর আগেও বহুবার তার পরিবারের উপর আক্রমণের ঘটনা সংগঠিত করেছে বিজেপি আশ্রিত দুর্বৃত্তরা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হলো পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করছে না। শুধু তাই নয় বিগত ঘটনা গুলি পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, এবং তৎকালীন বিজেপি সভাপতি ডাক্তার মানিক সাহা সহ মুখ্য সচিবের কাছে এ ঘটনাগুলো সম্পর্কে অবহিত করা হলেও কোন বিচার পায় নি।
তাই এলাকাবাসী সিদ্ধান্ত নিয়েছে গণতন্ত্রের জন্য এবার সকলে গিয়ে ভোট দিয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করবে। এবং আমতলী থানার পুলিশের এহেন ভূমিকায় তার পরিবার এবং তিনি নিজে নিরুপায় বলে জানান। ঘটনার খবর পেয়ে শনিবার সকালে সি পি আই এম ডুকলি মহকুমা সম্পাদক নারায়ণ দেব, পার্টি নেতা অরিন্দম বিশ্বাস, প্রার্থী পার্থ রঞ্জন সরকার সহ এক প্রতিনিধি দল বাবুল সাহার বাড়িতে যান। তারা ঘটনার প্রতিবাদ জানান। সিপিআইএমের হাপানিয়া অঞ্চল কমিটির সম্পাদক আবুল হোসেন জানান, রাজ্যে সমাজদ্রোহীদের দৌরাত্ম্য চলছে। বিজেপি জোট সরকারের পরাজয় নিশ্চিত করা ছাড়া এই অরাজকতা বন্ধ করার সুযোগ নেই। ২ মার্চ রাজ্যের শান্তি এবং উন্নয়নকামী মানুষের সরকার প্রতিষ্ঠা হলেই এধরনের সমাজদ্রোহীরা আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না।
মানুষ শান্তি সম্প্রীতির পরিবেশ পুনরায় ফিরিয়ে আনতেই ভোটে জবাব দিয়েছে। বিজেপি নেতারা বুঝতে পারছে তাদের পরাজয় নিশ্চিত। দলের কর্মীদের ধরে রাখতেই এ ধরনের ঘটনা সংগঠিত করছে বলেও দাবি করেন তারা।এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতৃবৃন্দ। তাদের অভিযোগ পুলিশকে রাতের বেলায় খবর দেওয়া হলে আসে নি, শনিবার সকালে খবর নিতে এসেছে বলে জানান সিপিআইএমের হাপানিয়া অঞ্চল কমিটির সম্পাদক আবুল হোসেন। তবে প্রশ্ন হলো শুক্রবার রাতে ঘটনার পর পুলিশ কার কথা শুনে ঘটনাস্থলে যায়নি। খাকি উদ্দিপড়া পুলিশ বাবুরা চাকুরি পাওয়ার সময় যে শপথ নিয়ে যোগদান করেন সেটা কি দিন দিন ভুলে যেতে বসেছে তারা। এ ধরনের একাধিক প্রশ্ন দাগ কাটতে শুরু করেছে জনমনে। কিন্তু যাই হোক মানুষের সুরক্ষার জন্যই জনগণের পয়সা দিয়ে মাসে মাসে মোটা অংকের বেতন মিলে এই পুলিশ বাবুদের। এমনকি ২৩ ফেব্রুয়ারি আমতলী থানায় বসে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে এসডিপি’র সাহেব এবং থানার ওসি সর্বদলীয় বৈঠকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সেই প্রতিশ্রুতি কতটা পালন করতে সক্ষম হচ্ছে সেটাও এই ঘটনায় আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।