স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১৬ ফেব্রুয়ারি : বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ বিধানসভা নির্বাচনে সকাল থেকে বিক্ষিপ্ত কিছু সন্ত্রাসের ঘটনা সামনে উঠে এসেছে। দিকে দিকে ভোটার এবং বিরোধী দলের এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। আটুসাটু নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও যেন ভোটে রেগিং এবং প্রহসনে পরিণত করতে সকাল থেকেই উঠে পড়ে লেগেছিল দুর্বৃত্তরা।
এদিন ভোট শুরুতেই গ্রাম, পাহাড়, সমতল সর্বত্রে ছিল নজরকাড়া ভোটারদের লাইন। যা দেখে রীতিমতোই কম্পন শুরু হয়ে যায় বিজেপির। বেলা বাড়তে বাড়তে শুরু হয় রেগিং এবং প্রহসনের অভিযোগ। রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয় ভোটারদের ও পুলিং এজেন্টদের। পুলিশ প্রশাসন ছিল দর্শকের ভূমিকা। কিন্তু কোথাও কোথাও দেখা গেছে ভোটাররা প্রতিরোধ করে ভোট দিতে গেছে। এর মধ্যে অন্যতম ৭ রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রের রামনগরের বিজেপি প্রার্থী সুরজিৎ দত্তের গাড়িচালক সুধাংশু দাস এলাকার মহিলাদের ভোট দিতে যেতে বাধা দেয়। মহিলারা সাথে সাথে চোখ রাঙিয়ে প্রতিরোধ করে তোলে। শেষ পর্যন্ত সুধাংশু দাস বাধা দিতে ব্যর্থ হয়। মহিলারা ভোটকেন্দ্রের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তবে ভোটার জানায় বিজেপির দুর্বৃত্তরা তাকে মারধরও করেছে। এদিকে উদয়পুর জগন্নাথ দিঘীরপাড় এলাকায় ভোট দিতে যেতে বাধা দেয় কিছু দূর্বৃত্তরা। সেখানে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে প্রতিরোধ করে তুললে দুর্বৃত্তদের সাথে হাতাহাতি হয় ভোটারদের। ব্যতিক্রম নয় চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্র। চন্ডীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের এক মহিলা ভোটার জানান তার শিশুকন্যাকে নিয়ে ভোট দিতে যাওয়ার সময় ৫০০ টাকা দেয় মন্ডল সভাপতি হিমাংশু দাসের ভাই অলিন্দ দাস। এবং সেই মহিলা ভোটারকে বলে যাতে বিজেপি প্রার্থী টিংকু রায়ের ভোট নিশ্চিত করেন তিনি। অপরদিকে ৪৮ করমছড়ার ৩৮ নং বুথে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস কর্মীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে।প্রতিরোধ গড়ে তোলে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস কর্মীরা এলাকায় মোতায়েন আধা সামরিক বাহিনী। ৩৩ কাঁকড়াবন শালগড়া বিধানসভার ৩ নং ও ৪ নং এর ভোটার অমিত কুমার ভৌমিক এবং রুফিপুল ইসলাম মারধর করেন বিজেপি কর্মীরা বলে অভিযোগ। আহত দুই জন সি পি আই এম কর্মী বলে জানা যায়। তবে সিপিএমের পক্ষ থেকে আরো অভিযোগ এদের নাকি আরো কয়েকজন কর্মী অল্পবিস্তারে আহত হয়েছে। ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছে শালগড়া স্কুল মাঠে। ৪২ অমরপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ৪৪ নং বুথের সিপিআইএম পুলিং এজেন্ট রাজীব মধ্যমদারকে মারধর করেছে বিজেপি আশ্রিত দুর্বৃত্তরা বলে অভিযোগ। জানা যায় চার থেকে পাঁচ জন মিলে তাকে মারধর করে বলেছে আগামী ২ মার্চের পর বাড়িতে থাকতে পারবে না। পাশাপাশি সে যখন তারপরও ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল তখন তাকে বলেছে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য।
এই ঘটনার সাথে যারা অভিযুক্ত তারা হলেন তাপস দাস, মিহির দেবনাথ, মোহন্ত দাস, নবদ্বীপ দাস। পুরো ঘটনাটা নিরাপত্তা কর্মীদের সামনে সংঘটিত হলো সকলেই ছিল নীরব ভূমিকায়। এবং অভিযুক্ত যে হাতের সামনে এই ঘটনা সংঘটিত করলে তাদের আটক করার কোন পদক্ষেপ নেয় নি বি এস এফ জোয়ানরা বলে অভিযোগ। শান্তিরবাজারের ৫৭ নম্বর বুথ কামিনী দাস পাড়া এলাকায় ভোটাররা যখন ভোট দেওয়ার জন্য রওনা হয়েছেন তখন দুর্বৃত্তরা রাস্তায় ফেলে মারধর করেছে বলে অভিযোগ। পরবর্তী সময়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আরো খবর রয়েছে বক্সনগর সিপিআইএম অঞ্চল সম্পাদক আশীষ সরকারের উপর আক্রমণ সংগঠিত করেছে। মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত হয়েছেন তিনি। ১৬ টি সেলাই লেগেছে তার। খয়েরপুর বিধানসভা কেন্দ্রে একাধিক বিক্ষিপ্ত সন্ত্রাসের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে খবর। আরো জানা গেছে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে। একই অবস্থা ছিল ১০ মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রেও। পরবর্তী সময়ে নিরাপত্তার কর্মীরা মানুষকে ভোটকেন্দ্রে আসতে সহযোগিতা করে। আরো জানা গেছে, ৩৬ এর ৩৬ নং বুথে সকালে দুই পক্ষের মধ্যে গন্ডগোল, শিমুল মজুমদার সহ অন্য আরেকজনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।