স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১১ ডিসেম্বর : দেশে কৃষি আইন প্রত্যাহারের জন্য দীর্ঘ ১৫ মাস কৃষকরা আন্দোলন করেছে কৃষকরা। অবশেষে দেশের প্রধানমন্ত্রী কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তাই সংযুক্ত কিষান মোর্চার পক্ষ থেকে ১১ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক বিজয় হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরই অঙ্গ হিসেবে শনিবার সংযুক্ত কিষান মোর্চা রাজ্য কমিটির উদ্যোগে আগরতলা শহরে একটি মিছিল সংঘটিত হয়।
মিছিলটি শুরু হয় প্যারাডাইস চৌমুহনি এলাকা থেকে। মিছিলের পর শহরে একটি সভা সংগঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম রাজ্য কমিটি সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরী। তিনি বক্তব্য রেখে বলেন, স্বাধীনতার পর গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ যা কিছু অর্জন করেছিল, তা নরেন্দ্র মোদি সরকার হরণ করে চলেছে। সর্বশেষে কৃষকদের অধিকার লুট করতে কালো কৃষি আইন পাশ করেছিল। সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কৃষকরা দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে লড়াই করেছে। ৭১৫ জন কৃষক আত্ম বলিদান দিয়েছে। সবশেষে অন্নদাতাদের কাছে মাথা নত করেছে বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, রাজ্য সরকারও যদি মনে করে অত্যাচারের মধ্য দিয়ে মানুষের অধিকার হরণ করে অনন্ত কাল দাবিয়ে রাখতে এবং ক্ষমতা দখল করে থাকবে তাহলে সে ধারণা ভুল। এই কৃষক আন্দোলন শিখিয়ে দিয়েছে আন্দোলন করে অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যায়। অনুরূপভাবে ত্রিপুরা রাজ্য গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করতে হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে সারা ভারত কৃষক সভা রাজ্য কমিটি সম্পাদক পবিত্র কর বক্তব্য দেখে বলেন, গোটা দেশের কৃষক আন্দোলন দেখিয়ে দিয়েছে জনগনের চাপের কাছে সমস্ত শক্তি এবং স্বৈরাচারী শক্তি মাথা নত হয়। বিগত বছর অতিমারির সুযোগে কৃষকদের অধিকার পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দিতে চেয়েছিল সরকার। পরে সেপ্টেম্বর মাসে পার্লামেন্টে আইনে পাশ করে নেয়। এর নাম দেওয়া হয় কালো কৃষি আইন। ২০২০ তে ২৬ নভেম্বর সংযুক্তি কিষান মোর্চা করে আন্দোলন শুরু করে ১৫ মাস পরে জয় হয়ে ঘরে ফিরছে কৃষকরা। ৯০ কোটি মানুষের জন্য ৫ মিনিটও কথা বলেন নি প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি। প্রাকৃতিক বিপর্যয় উপেক্ষা করে আন্দোলন করেছে কৃষকরা। দীর্ঘ ১৫ মাস পর জয়ী হয়ে অন্নদাতারা ঘরে ফিরছে তখন তাদের গ্রামে গ্রামে শুভেচ্ছা জানানো হচ্ছে, এবং বিজয় অনুষ্ঠান হচ্ছে। সারাদেশের ন্যায় ত্রিপুরা রাজ্যে দিনটি ঐতিহাসিক বিজয় হিসেবে পালন করা হচ্ছে। আগামী ২৫ ডিসেম্বর আগরতলা শহরে পঞ্চায়েত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এতে অংশ নেবে সারা রাজ্যের কৃষক শ্রমিক ও বুদ্ধিজীবী অংশের মানুষ।