স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১২ জানুয়ারি : নির্বাচন ঘোষণা আগে পশ্চিম জেলার সবগুলি সিপিআইএম কার্যালয় খোলার ব্যবস্থা করা, দলীয় কর্মীদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা এবং প্রচার সজ্জা সঠিকভাবে যাতে লাগানো যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য পশ্চিম জেলা শাসকের কাছে দাবি জানায় সিপিআইএম পশ্চিম জেলা কমিটির সম্পাদক মন্ডলী। পরবর্তী সময়ে বৃহস্পতিবার সিপিআইএম জেলা অফিসে সাংবাদিক সম্মেলন করে এ বিষয়ে তুলে ধরেন সি পি আই এম পশ্চিম জেলা কমিটির সম্পাদক রতন দাস।
তিনি জানান, ২০১৮ সাল থেকে পশ্চিম জেলা সিপিআইএমের বহু কার্যালয় খোলা যাচ্ছে না। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাতে সেই দলীয় কার্যালয় গুলি খোলা যায় এবং দলীয় কর্মসূচি সংঘটিত করা যায় তার জন্য সিপিআইএম পশ্চিম জেলা কমিটির পক্ষ থেকে পূর্ব নির্ধারিত সুচি অনুযায়ী পশ্চিম জেলা শাসকের সাথে দেখা করা হয়েছে। এবং গত কয়েক বছরের যে ঘটনাগুলো সংঘটিত হয়েছে সে বিষয়ে জেলা শাসকের নজরে আনা হয়েছে। পাশাপাশি যাতে এই দলীয় কার্যালয় গুলির নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয় তার দাবি জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি। গত পাঁচ বছরে পশ্চিম জেলার সিপিআইএমের ৫০ টি দলীয় অফিস একাধিকবার আক্রান্ত হয়েছে। মোহনপুর, কাতলামারা, গান্ধীগ্রাম, কামালঘাট, বামুটিয়া, লেফুঙ্গা, দূর্গাবাড়ি, লেম্বুছড়া ছেচুড়িয়া ও পঞ্চবটি সিপিআইএম কার্যালয়টি বহুবার আক্রান্ত হয়েছে স্থানীয় বিধায়কদের নেতৃত্বে। এ বিষয়গুলি জেলা শাসকের কাছে তুলে ধরে বলা হয়েছে যদি এভাবে আক্রান্তের ঘটনা সংঘটিত হয় তাহলে বিরোধীদল কিভাবে কাজ করবে। ব্যতিক্রম নয় জিরানিয়া মহকুমা কার্যালয়, কৃষ্ণনগর কার্যালয়, শচীন্দ্রনগর কার্যালয়, নোয়াবাদী কার্যালয়, বেলবাড়ি, খুমুলুঙ, মান্দাই দলীয় কার্যালয়।
জিরানিয়া মহকুমা বিভিন্ন দলীয় কার্যালয় খোলা যাচ্ছে না। সেখানে শাসক দল চাইছে ফ্যাসিসুলভ আক্রমণ করে বিরোধীশূন্য মহাকুমা করতে। এর জন্য প্রতিবাদ করা যাচ্ছে না। শুধু তাই নয় দলীয় কার্যালয়টি এবং খয়েরপুরের প্রাক্তন বিধায়ক পবিত্র করের বাড়িতেও একাধিকবার আক্রান্ত হয়েছে। একই অবস্থা সদর মহকুমা। রামনগর দলীয় কার্যালয়, নতুন নগর দলীয় কার্যালয়, ইন্দ্রনগর লাড্ডু চৌমুহনী কার্যালয়, জিবি বাজারের কার্যালয় সহ বহু কার্যালয় আক্রান্ত হয়েছে। এই কার্যালয় গুলি যাতে পুনরায় খুলে কাজ করা যায় তার জন্য দাবি জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয় এর পাশাপাশি যেসব দলীয় কার্যালয় জবর দখল করা হয়েছে সেগুলো যাতে মুক্ত করা হয় তার জন্য দাবি জানানো হয়েছে। আর এই ঘটনাগুলির সাথে জড়িত মন্ডলের নেতা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং আরএসএস -এর কর্মীরা। এর পাশাপাশি জেলাশাসকের কাছে দাবি জানানো হয়েছে ইতিমধ্যে যাতে তিনটি দলীয় কার্যালয় খোলার সুযোগ করে দেওয়া জন্য। এর মধ্যে হলো ডুকলি মহকুমা কার্যালয়। মোহনপুর মহকুমা কমিটি দলীয় কার্যালয়টি কামাল ঘাটে খোলার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য। শুধু তাই নয় দলীয় নেতাকর্মীরা পর্যন্ত আক্রমণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সি পি আই এম নেতৃত্ব পবিত্র কর, ডুকলী মহকুমা কমিটির সম্পাদক নারায়ণ দেব, প্রাক্তন সাংসদ ঝর্ণা দাসের বাড়িতে আক্রমণ সংঘটিত হয়েছে। সেগুলি দিকে বিশেষ নজর দিয়ে নিরাপত্তার দাবি জানানো হয়েছে। জেলাশাসক আশ্বস্ত করেছেন তিনি ব্যবস্থা করবেন। কিন্তু জেলাশাসক’কে জানানো হয়েছে সব সময় যাতে সিপিআইএমের কার্যালয় গুলি খোলা রাখা যায় তার ব্যবস্থা করতে।
অর্থাৎ কাজে প্রমাণ দিতে হবে প্রশাসনিক আধিকারিকদের। আরো বলা হয়েছে সিপিআইএম কর্মীরা যাতে এলাকায় নিরাপদে জনগণের কাছে যেতে পারে তার নিশ্চিত করা। জেলা শাসকের কাছে আরো দাবি জানানো হয়েছে নির্বাচনী সাজসজ্জাগুলি গত কয়েকদিন ধরে নষ্ট করা হচ্ছে। তাই নির্বাচনী সাজসজ্জা রাতে ঠিকভাবে লাগানো যায় তার জন্য সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করার। এবং ভারতীয় জনতা পার্টি যারা দুষ্কৃতী রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে। কারণ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে গেলে এগুলি ছাড়া আর কোন বিকল্প ব্যবস্থা নেই। এদিনের প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম পশ্চিম জেলা কমিটির সম্পাদক রতন দাস, পশ্চিম জেলার সম্পাদক মন্ডলী সদস্য শংকর দত্ত, মধুসূদন দাস, নারায়ন দেব, শুভাশিস গাঙ্গুলী এবং মোহনপুর মহকুমা মহকুমা কমিটির সদস্য সুজিত দেবনাথ। আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম সদর মহকুমা কমিটির সম্পাদক শুভাশিস গাঙ্গুলী, মধুসূদন দাস।