স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ৩০ ডিসেম্বর : কংগ্রেসের বহু নেতা ১৯৭২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে। তারা ব্যক্তি স্বার্থে এই প্রতারণা গুলি করে বারবারই সিপিআইএমকে সুযোগ করে দিয়েছে। তাদের কোন আদর্শ নেই। এখন আবার তারা মানুষের কাছে সরকার প্রতিষ্ঠিত করে দিতে সুযোগ চাইছে। রাজ্যের মানুষ তাদের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে যোগ্য জবাব দেবে।
শুক্রবার দুপুরে আগরতলা ওরিয়েন্ট চৌমুহনী এলাকায় আইন-শৃঙ্খলার পুনঃ প্রতিষ্ঠা সহ একাধিক দাবিতে তৃণমূল কংগ্রেসের সভায় বক্তব্য রেখে এমনটাই বললেন প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পীযূষ কান্তি বিশ্বাস। তিনি বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষ কংগ্রেস, বামফ্রন্ট এবং বিজেপিকে সরকার প্রতিষ্ঠিত করে দেখেছে। এখন কংগ্রেস পার্টি সি পি আই এম-এর সাথে হাত মিলিয়ে বলছে একবারের জন্য সুযোগ দেওয়ার জন্য। ১৯৭২ সালে ত্রিপুরা রাজ্যে সুকুময় সেনগুপ্তের নেতৃত্বে ৬০ টি আসনের মধ্যে ৪১ টি আসন নিয়ে কংগ্রেস ক্ষমতায় এসেছিল। সে সময় কংগ্রেসের পতনের কোন সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু তৎকালীন সময়ে দেখা গেছে ১৯ জন বিধায়ক কংগ্রেস থেকে সিপিআইএম -এর সাথে হাত মিলিয়ে কংগ্রেসের মন্ত্রিসভার পতন ঘটিয়েছে। তারপর সিপিআইএমের সাথে হাত মিলিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করেছিল। তারপর ছয় মাস পর সিপিআইএম মন্ত্রিসভা থেকে কংগ্রেসের সেই বিধায়কদের লাথি মেরে বের করে দিয়ে নির্বাচনের ডাক দিয়েছিল। তারপর যারা এই বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল তাদের রাজ্যের মানুষ মুছে দিয়েছিল। ১৯৭৮ সালে ৫৬ টি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসে সিপিআইএম। তারপর যতবারই বামফ্রন্ট সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা হতো ততবারই কংগ্রেস নেতাদের খুন করত তারা। এমনও হয়েছে দিনে ছয় থেকে সাতজন খুন হয়েছে। বহু বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দিয়েছিল। তারপর মানুষ বুঝতে পেরে ১৯৮৮ সালে ২২ টি আসন দিয়ে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসে। তখন যারা ১৯৭৮ সালে কংগ্রেস ছেড়ে সিপিআইএমে যোগ দিয়েছিল তারা আবার কংগ্রেসের যোগদান করেন। তারপর সঠিকভাবে সরকার পরিচালনা করলেও সেই বিশ্বাসঘাতক বিধায়করা পুনরায় সুধীর রঞ্জনকে হটিয়ে সরকারের পতন করেছিল। এবং ২০১৮ সালের আগে সেই বিশ্বাসঘাতকতারা কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি’তে যোগদান করেন। বিজেপি সরকারের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বিভিন্ন পদ থেকে তারা আবারও ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য কংগ্রেসের যোগদান করেছেন। যার ফলে বামফ্রন্ট সরকার পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
এবং আজ তারা দুহাত তুলে বলছে তাদের আবারো একবারের জন্য সুযোগ দিতে। তাই যারা জানান তারা কখনো কংগ্রেসের এই নেতাদের কোথার উপর আস্থা রাখবে না। কারণ ভারতবর্ষের মানুষ সি পি আই এম দলকে জানে। তাদের কাছে কোন আদর্শ নেই। তাই বিশ্বাসঘাতক কংগ্রেস নেতাদের কথার উপর আস্থা না রাখার জন্য আহ্বান জানান পীযুষ কান্তি বিশ্বাস। তিনি আরো বলেন এ রাজ্যের মানুষ এখন আর কংগ্রেসের এই বিশ্বাসঘাতক নেতাদের কথা বিশ্বাস করে না। তারা ভাবছে আবারো সিপিএমের সাথে জোট হয়ে সরকার প্রতিষ্ঠা করবে। কিন্তু এখন আর তাদের উপর মানুষ বিশ্বাস করে না। যে সিপিআইএম দল কংগ্রেস পার্টি টা নস্যাৎ করে দিয়েছিল তাদের সাথে আবার জোট হতে চাইছে। তাই আজ যারা দাবি করছে কংগ্রেসকে সুযোগ দেওয়ার জন্য তারা শুধুমাত্র বিধানসভায় যেনতেন প্রকারে যেতে এ ধরনের দাবি করছেন। তাই তাদের রাজ্যের মানুষ যোগ্য জবাব দেবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। আরব বললেন সিপিআই এম সরকারের আমলে রাজ্যের মানুষ যেভাবে খুন হয়েছে, তার কোন ক্ষমা করবে না বলে জানান তিনি। পশ্চিমবঙ্গ বিগত বিধানসভা নির্বাচনের আগে হাত মিলিয়ে ছিল এই কংগ্রেস ও সিপিআইএম। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মানুষের যোগ্য জবাব দিয়েছে বলে জানান শ্রী বিশ্বাস। আরো বলেন, বিজেপিকে ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আনার পেছনে মূলত একটাই কারণ ছিল, সেটা হলো বামফ্রন্ট শাসক গোষ্ঠীর জন্য ত্রিপুরার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছিল। প্রতিবাদ করলেই খুন হতে হতো। তাই রাজ্যের মানুষ অনেক আশা ভরসা নিয়ে দল মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বামফ্রন্ট সরকারকে ত্রিপুরার মাটি থেকে উৎখাত করেছিল। বহু আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে দায়িত্ববান দিয়ে রাজ্যবাসী দেখেছে। কিন্তু রাজ্যের মানুষ গত পাঁচ বছরে বিজেপি সরকারের উপর অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। ভোট পেতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজ্যের মানুষের সাথে প্রতারণা করেছেন।