স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১১ ডিসেম্বর : নির্বাচন ঘোষণা হতে আর মাত্র একমাস বাকি, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সঠিক সময় মত ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। কিন্তু এর আগে ময়দান গরম করে চলেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএম। রবিবার সকালে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে থেকে সিপিআইএম সদর বিভাগীয় কমিটির পক্ষ থেকে একটি বাইক মিছিল সংঘটিত করা হয়। মিছিলের উপস্থিত সিপিআইএম পশ্চিম জেলা কমিটির সম্পাদক রতন দাস। সরকারের তীব্র সমালোচনা করে মিছিল থেকে বক্তব্য রেখে বলেন, রাজ্যে বিজেপি থাকা মানে অপশাসন, কুশাসন। তাই এই দলটাকে ত্রিপুরা থেকে মানুষ উৎখাত করতে চাইছে।
তাই বিজেপি দলকে পরাস্ত করতে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএম এই মিছিলের ডাক দিয়েছে। মিছিল থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার আওয়াজ তোলা হয়েছে। এর পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি প্রত্যাহার করার জন্য দাবি জানানো হচ্ছে। কিন্তু গত পৌনে পাঁচ বছরে দেখা গেছে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্যের সন্ত্রাস। তাই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সকলকে লড়াই করতে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান তিনি। মিছিলে প্রায় এক হাজার কর্মী সমর্থক অংশগ্রহণ করেছে। এতে স্পষ্ট হয়ে গেছে মানুষের ক্ষোভ এই মিছিলে প্রত্যক্ষ করা যায়। কারণ রাজ্যের গ্রাম পাহাড় শহর সব জায়গার মানুষ এই সরকারের আমলে অত্যাচারিত এবং বঞ্চিত বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে। কিন্তু রাজ্য রাজনীতি কোন দিকে এগিয়ে চলছে তা বলা মুশকিল হয়ে পড়েছে রাজ্যের সবকটি রাজনৈতিক দলের কাছেই। ২০১৮ সালে রাজ্যের মানুষ ২৫ বছরের বাম শাসন থেকে মুক্ত চেয়েছিল। কারণ দুর্নীতির আকড়া বেঁধেছিল গোটা রাজ্যে। তাই যে প্রত্যাশা নিয়ে রাজ্যের মানুষ সরকার পরিবর্তন করে জোট সরকার প্রতিষ্ঠিত করেছে সেই প্রত্যাশা গত পাঁচ বছরে প্রায় হুচুট খেয়েছে বলা চলে। এখন যখন মানুষ একপ্রকার ভাবে নিজেদের মধ্যেই বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখন ভোট ময়দানে নেমে শাসক দলের তাড়া খেতে হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি জনসম্পর্ক করতে গিয়ে মানুষের মুখোমুখি হয়ে তারা কি করেছে জবাব দিতে পারছে না। মানুষের একটাই প্রশ্ন গত পাঁচ বছর কোথায় ছিলেন।
কেন একবারের জন্য মুখ দেখান নি? এমনটাই ক্ষোভের মুখে পড়ে রাষ্ট্রবাদী দলের কর্মীদের বাড়ি ঘর ছেড়ে বের হতে হচ্ছে। সুশাসন মুখে মুখে মানুষের ঘরে পৌঁছেছে ঠিকই, কিন্তু ঘরে ঘরে বাস্তবে কতটাই পৌছেছে সেটা এখন বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ চাইছে শান্তি সম্প্রীতি, কর্মসংস্থান এবং বাম আমলের বঞ্চনার অবসান। এদিকে জাতি জনজাতিদের মধ্যে যে সু-ভ্রাতৃত্ব সম্পর্ক, তা যেন নষ্ট করতে ময়দানে ঝাঁপিয়েছে নয়া নেতা। এ নয়া নেতার জনসমর্থন পাহাড়ে ব্যাপকভাবে পড়লে তাদের সাথে জোটে যেতে বহু চেষ্টা করছে কিছু রাজনৈতিক দল। কারণ রাজ্যের রাজনীতির অধ্যায়ের সূচনা হয় পাহাড় দিয়ে। পূবর্তন সরকারের আমলে দেখা যেত পাহাড়ের কুড়িটি আসন নিজেদের তবিয়তে রেখে তারপর থেকে শুরু করতো নিজেদের সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনের ভোট গণনা। আজ সেই হিসেবটা কতটা মেলাতে পারবে নতুনভাবে পাহাড়ে আত্মপ্রকাশ করা রাজনৈতিক দলটি এবং রাষ্ট্রবাদী দল এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো, সেটা এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ নীরব ভোটারদের মধ্যে কাজ করছে অন্যরকম রাজনীতি। সুতরাং আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ভোট ব্যাংকে “নো” ভোটার ফ্যাক্টর হবে না সেটা বলা মুশকিল।