আগরতলা, ২৮ নভেম্বর (হি.স.) : ত্রিপুরায় সাঙ্গ হল পুর ও নগর সংস্থার নির্বাচন। ফলাফলে বিজেপির বিরাট জয়ে বিরোধীরা কার্যত ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গেছে। ত্রিপুরায় রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরোধী শিবিরে এত বড় বিপর্যয় অতীতে কখনও দেখেননি রাজ্যবাসী। স্বাভাবিক ভাবেই এই ফলাফল ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনের আগে শাসকদল বিজেপিকে অনকে রসদ যোগাবে, তা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই।
১১২টি আসনে আগেই বিজেপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়ে রয়েছে। আজ ২২২টি আসনে বিজেপি ২১৭টি আসনে জয় হাসিল করেছে। সার্বিক জয়ের হার ৯৮.৫০ শতাংশ। আজ তিনটি পুর ও নগর সংস্থা বাদে সবকটিতে বিজেপি ১০০ শতাংশ জয়ী হয়েছে। ফলাফলের নিরিখে সিপিএম দ্বিতীয় এবং তৃণমূল কংগ্রেস তৃতীয় স্থানে রয়েছে। কংগ্রেস দুই শতাংশে নেমে এসেছে।
পুর ও নগর সংস্থা নির্বাচনে বিজেপি উদয়পুর, শান্তিরবাজার, মোহনপুর, রানিরবাজার, কমলপুর এবং বিশালগড় পুর ও নগর সংস্থায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে। এছাড়া, খোয়াই ৭-টি আসনে, জিরানিয়ায় ১০টি আসনে, ধর্মনগরে ১-টি আসনে এবং মেলাঘরে ২-টি আসনে বিজেপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে। আজ মোট ২২২টি আসনে নির্বাচনের গণনা হয়েছে। তাতে বিজেপি ২১৭টি আসনে জয়ী হয়েছে, জয়ের হার ৯৭.৪ শতাংশ। সব মিলিয়ে ৩৩৪টি আসনের মধ্যে বিজেপি ৩২৯টি আসনে জয় হাসিল করেছে, জয়ের হার ৯৮.৫০ শতাংশ।
ফলাফলের সার্বিক বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, একমাত্র আমবাসা পুর পরিষদে বিজেপির তুলনামূলক খারাপ ফলাফল হয়েছে। কারণ সেখানে বিজেপি ১৫টি আসনের মধ্যে ১২টি আসনে জয়ী হতে পেরেছে। বাকি তিনটি আসনে সিপিএম, তৃণমূল কংগ্রেস এবং তিপ্রা মথা একটি করে আসনে জয়ী হয়েছে। এছাড়া পানিসাগর ও কৈলাসহরে বিজেপি একটি করে আসনে পরাজিত হয়েছে। তবে, পুর নিগমে ৫১টি আসনে সবকটি আসনেই বিজেপি প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন।
নির্বাচনী ফলাফলে ভোটের হারে বিজেপি ৫৯.০১ শতাংশ, বামফ্রন্ট ১৯.৬৫ শতাংশ, তৃণমূল কংগ্রেস ১৬.৩৯ শতাংশ, কংগ্রেস ২.০৭ শতাংশ, অন্যান্য ০.১৭ শতাংশ, নির্দল ০.৯৯ শতাংশ এবং নোটা ১.৭২ শতাংশ ভোট পেয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে পুর ও নগর সংস্থা নির্বাচনে বামেরা ৯৪ শতাংশ আসনে জয়ী হয়েছিলেন। আগরতলা পুর নিগমে ৪৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪৫টি ওয়ার্ডে বামেরা জয়ী হয়েছিলেন। এছাড়া ১২টি পুর পরিষদ এবং ৬-টি নগর পঞ্চায়েতেও বামেরাই দখল করেছিলেন। সব মিলিয়ে ৩১০টি আসনে ২৯১টি আসনে বামফ্রন্ট, ১৩টি আসনে কংগ্রেস এবং ৪টি আসনে বিজেপি জয়লাভ করেছিল। কিন্তু এ বছর বামেরা প্রায় ধুলিস্যাত হয়ে গেছেন।