Friday, January 24, 2025
বাড়িরাজ্যরক্তদাতাদের পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা, আহত ২, অভিযোগ শাসক দলের বিরুদ্ধে

রক্তদাতাদের পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা, আহত ২, অভিযোগ শাসক দলের বিরুদ্ধে

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ১২ নভেম্বর : প্রতিদিন রাজ্যের প্রধান রেফারেল হাসপাতাল থেকে শুরু করে মহকুমা ও জেলা হাসপাতাল রোগীর পরিজনরা অসহায় ভাবে রক্তের জন্য ঘুরে বেড়ায়। কখনো সামাজিক মাধ্যমে আর্জি জানাতে হয়, আবার কখনো মানুষের বাড়ি ঘরে গিয়ে পর্যন্ত রক্তের জন্য দিশেহারা হয়ে বহু রোগীর পরিজনকে ঘুরতে দেখা যায়। কারণ কোন ফার্মাসির মধ্যে রক্ত পাওয়া যায় না। এবং কোটি টাকা দিলেও রক্ত কোন দোকানপাট থেকে কেনা যায় না। মানবতার মহৎ এবং শ্রেষ্ঠ স্থান দখল করে আছে এই রক্তদান শিবির।

 কিন্তু ত্রিপুরা রাজ্যে রক্তদান শিবিরের মত মানবিক কাজে বিগত দিনে বাইক বাহিনীর হামলা হুজ্জতির মত ঘটনা সংঘটিত হলেও শনিবারের ঘটনা সম্পূর্ণ ভিন্ন। যা হয়তো গোটা রাজ্যবাসী নজর কেড়ে নেবে। রক্তদাতাদের শিবিরে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে এদিন শাসক দলের দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে। রক্তদান শিবিরে এবার অগ্নিসংযোগ করে ছিঃ ছিঃ রব তুলেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি ঘটেছে বিলোনিয়া মহকুমা বড়পাথরীতে। অভিযোগ শাসক দল বিজেপি আশ্রিত দুর্বৃত্তদের দিকে। জানা যায় এদিন পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল ডি ওয়াই এফ আই নেতা ভোলা চক্রবর্তীর বাড়িতে। কিন্তু এই দিন সকাল থেকেই বড়পাথরী বাজারে এসে জমায়েত হতে শুরু করে বিজেপির পতাকা নিয়ে দুর্বৃত্তরা। রক্তদান শিবির শুরু হওয়ার মুহূর্তে গিয়ে আচমকা হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। দা, লাঠি, রড সহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে ভয়াবহ তান্ডব শুরু করে ভোলা চক্রবর্তীর বাড়িতে। কোনক্রমে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে প্রাণে বাঁচে রক্তদাতারা।

তারপর রক্তদান শিবিরে বিভিন্ন সামগ্রী ফ্ল্যাগ ফেস্টুন এবং রক্তদান শিবিরে আসা রক্তদাতাদের বাইসাইকেল বাড়ির উঠোন এনে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। পরবর্তী সময় দুই রক্তদাতাকে রাস্তায় পেয়ে বেধড়ক মারধর করে বিজেপি আশ্রিত দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে ছুটে যায় পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনী সহ দমকল কর্মীরা। দীর্ঘ প্রয়াসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এবং এদিনের ঘটনায় যারা জড়িত তারা হলেন স্থানীয় মন্ডলের বিমল পাল, সাধন শীল, সজল বিশ্বাস, বিনোদ সেন, মানিক মজুমদার, রঞ্জিত সরকার। তাদের নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৪০ জন এই ঘটনার সংগঠিত করেছে বলে পরবর্তী সময় সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ তুলেন ডি ওয়াই এফ আই রাজ্য সম্পাদক নবারুণ দেব।

তিনি আরো বলেন, রক্তদান শিবিরে রক্তদাতাদের এদিন পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে বিজেপির দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনার পর পুলিশ যদি ২৪ ঘন্টার মধ্যে কাউকে গ্রেফতার না করে তাহলে স্পষ্ট হবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এই ঘটনা সংঘটিত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হবে। এবং রক্তের অভাবে যদি কোন রোগীর মৃত্যু হয় তাহলে এর জন্য দায়ী থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী নামের আগে যে ডাক্তার শব্দটি লাগানো হয় তা যেন তুলে দেওয়া হয় তার জন্য দাবি জানান তিনি। আরো বলেন, সম্প্রতি দেখা গেছে পুলিশ নিরপেক্ষ হয়ে কাজ করছে না। সন্ত্রাসের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পর শাসক দলের দুর্বৃত্তদের কিভাবে ঘটনাস্থল থেকে সুরক্ষিতভাবে পৌঁছে দেওয়া যায় তার দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছে। যতগুলি ঘটনা সংগঠিত হচ্ছে সবগুলি ঘটনা পুলিশের সামনেই হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেন তিনি।

এদিনের অমানবিক ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কোন শিক্ষায় শিক্ষিত তারা। কে মদত করছে তাদের ? কে দেখাবে তাদের সঠিক দিশা। রক্তের তো কোনো রাজনৈতিক রঙ হয় না। এ ধরনের ঘটনা হলে রক্তদানের মহান দায়িত্ব আগামী দিন কে নেবে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য