Sunday, February 16, 2025
বাড়িরাজ্য২০২১-২২ অর্থ বছরে ২ লক্ষ ২৮ হাজার ৪১১ টি ঘরের অনুমোদন পেয়েছে...

২০২১-২২ অর্থ বছরে ২ লক্ষ ২৮ হাজার ৪১১ টি ঘরের অনুমোদন পেয়েছে রাজ্য

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২ নভেম্বর : মহাত্মা গান্ধী এন রেগা প্রকল্পে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ৩২৫ লক্ষ মেনডিজের অনুমোদন পেয়েছে। বুধবার পর্যন্ত ভারত সরকারের কাছ থেকে ৮৩০ দশমিক ৪০ কোটি টাকা পেয়েছে গ্রাম উন্নয়ন দপ্তর। পাশাপাশি রাজ্যের শেয়ার হিসাবে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে পেয়েছে ৭৩.৪৭ কোটি টাকা।  তার মধ্যে এখনো পর্যন্ত মোট ব্যয় হয়েছে ৫৮৫.৯৫ কোটি টাকা।

বুধবার মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলন করে গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরতে গিয়ে এমনটা বলেন দপ্তরের সচিব সন্দীপ রাঠোর। তিনি আরো জানান প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা গ্রামীণ প্রকল্পে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের আগে ২৪ হাজার ৯৮৯টি ঘর পেয়েছে রাজ্য। ২০২১-২২ অর্থবছরে ২ লক্ষ ২৮ হাজার ৪১১ টি ঘরের অনুমোদন পাওয়া গেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ত্রিপুরা গ্রামীণ জীবিকা মিশনের অধীনে ৮৮৯ জন চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। মহিলাদের আর্থসামাজিক ক্ষমতায়নের জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে ত্রিপুরা গ্রামীণ জীবিকা মিশনের অধীনে গ্রামীণ দরিদ্র পরিবারের প্রায় ৬৩ হাজার ৮০৮ জন মহিলাকে ৭৬৯৬ টি স্বসহায়ক দলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং তাদের জীবিকা উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মহিলা স্বনির্ভর দলগুলিকে ২৩৬ টি গ্রাম সংগঠন এবং ১৬ টি ক্লাসটার লেভেল ফেডারেশন-এর অধীনে সঙ্ঘবদ্ধ করা হয়েছে। আরো ৩৬ টি ক্লাসটার লেভেল ফেডারেশন গঠনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৪২১৪ টি স্বসহায়ক দলকে ৪.৫৯ কোটি টাকার রিভলভিং ফান্ড প্রদান করা হয়েছে। এবং ২৫৩৬ টি স্ব সহায়ক দলকে ৩১.৯২ কোটি টাকা কমিউনিটি ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড হিসাবে প্রদান করা হয়েছে। স্বসহায়ক দলের সদস্যাদের বিভিন্ন জরুরি ভিত্তিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য ৫৯ টি গ্রাম সংগঠনকে ৮০.১০ লক্ষ টাকা ভালনারেবল রিডাকশন ফান্ড হিসাবে প্রদান করা হয়েছে। স্বসহায়ক দলের সদস্যাদের জীবিকার কার্যক্রম বৃদ্ধির জন্য ১২০ দশমিক ১৮ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ হিসাবে স্বসহায়ক দলগুলিকে প্রদান করা হয়েছে।

এই তহবিল স্বসহায়ক দলের সদস্যাদের জীবিকার মানোনোন্নয়ন শিশুদের শিক্ষা ইত্যাদির জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বর্তমানে ত্রিপুরার এস এইচ জি ব্যাংক ঋণের এনপিএ হার মাত্র ২.১ শতাংশ। কৃষিভিত্তিক জীবিকা কার্যক্রমকে সমর্থন করার জন্য বর্তমান অর্থবছরে ৩৮ টি কাস্টম হায়ারিং সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে এবং ৩৮টি ভি.ও-কে কৃষি সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। প্রান্তিক চাষীদের আরো অধিক সুবিধা প্রদানের জন্য ১৭৮ টি প্রডিউসার গ্রুপ বা উৎপাদক দল গঠন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে প্রান্তিক উৎপাদকরা যৌথ নিবাসের পাশাপাশি বাজারজাত করণের ব্যাপক সুবিধা লাভ করবে। স্বসহায়ক দলের সদস্যাদের দ্বারা উৎপাদিত পণ্যগুলি আরো ভালো বিপণনের জন্য ভিল-মার্ট নামে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। অ্যামাজন এবং ফেসবুকের মাধ্যমে এই পণ্যগুলোর প্রচার ও বিপণন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। ওয়ান স্টেশন ওয়ান প্রোডাক্ট প্রকল্পের আওতায় আগরতলা রেলওয়ে স্টেশনে স্বসহায়ক দলের তৈরি সামগ্রীর জন্য হস্তশিল্পের স্থল উদ্বোধন করা হয়েছে বলে জানান গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের সচিব সন্দীপ রাঠোর। গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের সচিব সন্দীপ রাঠোর আরও জানান স্বসহায়ক দল দ্বারা পরিচালিত খাদ্য পরিষেবার প্রসারের জন্য সিপাহীজলা জেলা এবং ধোলাই জেলার অধীনে ডিএম অফিস চত্বরে সংযোগ কেনটিন স্থাপন করা হয়েছে।

৫২৯ টি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কার্যক্রমের সাথে জড়িত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে পি এম এফ এম ই প্রকল্পের অধীনে মূলধন প্রদানের মাধ্যমে সহায়তা করা হচ্ছে। সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহারের কারণে পরিবেশ দূষণ জনিত সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য তিনটি স্বসহায়ক দল কাগজ এবং সুপারি গাছের পাতা দিয়ে বায়ু ডিগ্রেডেবল প্লেট তৈরির ইউনিট স্থাপন করেছে। কনভারজেন্স-এর মাধ্যমে গোমতী জেলার অধীনে টিআরএলএম-এর স্বসহায়ক দলের সদস্যরা পাঁচটি একলব্য স্কুলের জন্য স্কুল ইউনিফর্ম সেলাই করেছে। লাভ সমেত এই প্রকল্পের মোট মূল্য ছিল ১৬ লক্ষ টাকা। হর ঘর তিরঙ্গা প্রোগ্রামের জন্য ত্রিপুরা গ্রামীণ জীবিকা মিশনের অধীনে এসএইচজি সদস্যরা সাধারণ জনগণের কাছে প্রায় ৫৫ হাজার জাতীয় পতাকা সেলাই করে বিক্রি করেছে।নির্বাচিত গ্রামীন ক্লাস্টারকে শহরের মতো সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী রুরবান মিশন প্রকল্প চালু করা হয়েছিল।

রাজ্যের পাঁচটি জেলায় সাতটি গ্রামীণ ক্লাস্টার রয়েছে। জেলাগুলি হলো উত্তর ত্রিপুরা, ধোলাই, গোমতী, সিপাহীজলা ও দক্ষিণ ত্রিপুরা। এই প্রকল্পে ৩৭৭ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ১৩৬ টি প্রজেক্ট সম্পন্ন করা হয়েছে। সমস্ত গ্রামীণ পরিবারের মৌলিক সুবিধা গুলি সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরা গ্রাম সমৃদ্ধি যোজনা চালু করা হয়েছে। এই প্রকল্পটিতে ২২ টি মূল সূচক রয়েছে যা রাজ্যের প্রতিটি গ্রামে মৌলিক সুবিধাগুলির সেচুরেশন স্তরে প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে মূল্যায়ন করতে ব্যবহৃত হয়। প্রথম মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সম্প্রতি সব জেলায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন একটি বিশেষ পুনঃমূল্যায়ন চলছে। শীঘ্রই সেরা পারফরমেন্স কারি গ্রামগুলিকে সংবর্ধিত করা হবে। ৪৪ টি মূল অগ্রাধিকার সূচকের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে নয়টি দপ্তরের সহযোগিতায় ২০১৯ সালে ১২ টি পিছিয়ে থাকা ব্লকে ট্রান্সফরমেশন অব এসপিরেশনাল ব্লক প্রোগ্রাম শুরু করা হয়েছে। এই পরিকল্পনার প্রধান লক্ষ্য সমস্ত সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলি চিহ্নিত করা ব্লকগুলিতে আট থেকে দশ শতাংশ অধিক বরাদ্দ নিশ্চিত করা, কমপক্ষে অনুমোদিত কর্মচারীর ৮০ শতাংশ এই ব্লকগুলিতে পোস্টিং করা এবং চিহ্নিত ব্লক গুলিতে দুই বছরের জন্য সমস্ত প্রধান কর্মকর্তাকে পোস্টিং দেওয়া। প্রোগ্রামটি সমস্ত সংশ্লিষ্ট বিভাগ দ্বারা বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। প্রতিটি চিহ্নিত ব্লকের জন্য নিযুক্ত প্রভাবী আধিকারিক জেলাশাসক সচিব দ্বারা নিয়মিত পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানান গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের সচিব সন্দীপ রাঠোর। সাংবাদিক সম্মেলনে গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের সচিব সন্দীপ রাঠোরের সাথে উপস্থিত ছিলেন টিআরএলএম-এর সিইও স্মিতা মল।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে
Captcha verification failed!
CAPTCHA user score failed. Please contact us!

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য