Wednesday, April 17, 2024
বাড়িরাজ্যঅস্থি বিসর্জন দিল সংযুক্ত কিষান মোর্চা

অস্থি বিসর্জন দিল সংযুক্ত কিষান মোর্চা

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৬ নভেম্বর : উত্তরপ্রদেশের লখিমপুরে চার কৃষক সহ এক সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় সারাদেশে কৃষক সংগঠন গুলির পক্ষ থেকে চলছে অস্থি বিসর্জন। সারাদেশের মতো ত্রিপুরা রাজ্যে সংযুক্ত কিষান মোর্চার উদ্যোগে সব গুলি জেলাতে চলছে কৃষকদের অস্থি বিসর্জন প্রক্রিয়া।

 শুক্রবার পশ্চিম জেলা কমিটির পক্ষ থেকে রাজধানীর দশমী ঘাট হওড়া নদীতে কৃষকদের অস্থি বিসর্জন দেওয়া হয়। অস্থি বিসর্জনের আগে সংযুক্ত কিষান মোর্চার উদ্যোগে প্যারাডাইস চৌমুহনি এলাকায় একটি পথসভা সংঘটিত হয়। উপস্থিত ছিলেন সারা ভারত কৃষক সভা রাজ্য সভাপতি অঘোর দেববর্মা, সম্পাদক পবিত্র কর, কৃষক নেতা রাসবিহারী বস, প্রাক্তন সাংসদ শংকর প্রসাদ দত্ত, সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সম্পাদক রতন দাস, প্রাক্তন মন্ত্রী ভানু লাল সাহা। স্বাধীনতার পর কৃষক আন্দোলন সবচেয়ে বড় দীর্ঘ সময়ের ঐতিহাসিক আন্দোলন।

 ২৬ নভেম্বর কৃষক আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে শহিদ কৃষকদের অস্থি বিসর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সারাদেশের মতো ত্রিপুরা রাজ্যে অস্থি বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে। ৪ জন কৃষক এবং একজন সাংবাদিকের অস্থি বিসর্জন দিয়ে শপথ গ্রহণ করবে সংযুক্ত কিষান মোর্চা। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দপ্তরে প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলে আশিষ মিশ্রের কঠোর সাজার দাবি জানানো হবে বলে জানান সিপিআইএম রাজ্য কমিটির সম্পাদক রতন দাস। বিশ্বের ইতিহাসে কৃষক আন্দোলন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ স্বাধীনতার পর দেশে কৃষক এবং শ্রমিকদের এত দীর্ঘ সময়ে আন্দোলন পূর্বে কখনো কেউ দেখেনি। এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ১০ লক্ষাধিক কৃষক এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে। ত্রিপুরা রাজ্য অস্থি বিসর্জন দিয়ে শপথ নেওয়া হবে বলে জানান সারা ভারত কৃষক সভার রাজ্য কমিটির সম্পাদক পবিত্র কর।

তিনি আরো বলেন, কৃষি আইন দেশের পার্লামেন্টের কোন রীতি নীতি না মেনে সমস্ত কিছুর জলাঞ্জলি দিয়ে সরকার কৃষকদের বিরুদ্ধে পাস করে নিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী গুরু নানকের জন্ম বার্ষিকীতে কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। সরকারের কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানানো হচ্ছে। এই আইন পাস করা হয়েছিল পুঁজিপতিদের স্বার্থ রক্ষা করতে। তাই এই কৃষি আইন পার্লামেন্টে প্রত্যাহার করার পর কৃষকরা ঘরে ফিরবে বলে শপথ নিয়েছে। পাশাপাশি ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য আইন পাশ করতে হবে এবং আইনের গ্যারান্টি দিতে হবে সরকারকে। বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহার করতে হবে। এই দাবিগুলি কৃষকদের স্বার্থে তুলে ধরা হচ্ছে। এমনকি এই সরকার শ্রমিকদের ৪৪ টি শ্রমকোড বাতিল করে চারটি আইনে পরিণত করেছে। ফলে শ্রমিকরা তাদের অধিকার নিয়ে লড়াই করতে পারবে না। তাই সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে দাবি জানানো হচ্ছে। ত্রিপুরা রাজ্যের পুর ও নগর নির্বাচন গনতন্ত্র হত্যা হয়েছে, তা মানুষ মেনে নেয়নি। মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। কারণ বিজেপি সমর্থকদের উপরই আস্থা হারিয়ে ফেলেছে বিপ্লব দেবের সরকার। ভোট দিতে দেয়নি বিজেপি সমর্থকদেরও। মোহনপুর, বিশালগড় থেকে মানুষ এনে আগরতলায় ভোটে অংশগ্রহণ করে প্রহসনে পরিণত করেছেন নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অহংকার যেমন কৃষি আইন প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে চূর্ণ হয়ে গেছে, তেমনি রাজ্যে বিপ্লব দেবের সরকারের অহংকার চূর্ণ হয়ে যাবে। পুলিশ এবং নির্বাচন কমিশনকে পুতুল করে যা খুশি তা করছে। এই অহংকার রাজ্যের মানুষ ভেঙে দেবে। আজকের দিনে শহিদ কৃষকদের অস্থির সামনে দাঁড়িয়ে কৃষক সংগঠনগুলির এই শপথ গ্রহণ করেছে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি কৃষকদের অস্হির মধ্যে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানায় কৃষক সংগঠন নেতৃত্বরা। পরবর্তী সময় পথসভায় পর একটি মিছিল সংঘটিত করে অস্থি বিসর্জন করতে দশমী ঘাট যায় সংযুক্তি কিষান মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্যরা।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য