Thursday, March 28, 2024
বাড়িরাজ্য১০,৩২৩ -এর বিধানসভা চলো অভিযান ঘিরে লঙ্কার কান্ড, আহত বহু

১০,৩২৩ -এর বিধানসভা চলো অভিযান ঘিরে লঙ্কার কান্ড, আহত বহু

স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৬ সেপ্টেম্বর : মানবতা হারিয়েছে প্রশাসন ! একদিকে দেবী পক্ষের সূচনা, অপরদিকে পুরুষ পুলিশ, টি এস আর সিআরপিএফের লাঠির ঘায়ে রাস্তার পাশে পড়ে কান্নায় ভেঙে পড়ল বহু চাকুরিচ্যুত শিক্ষিকা। এবং সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে বহু শিক্ষক শিক্ষিকা। যাদের হাতে নারী সুরক্ষায় কথা রয়েছে তারাই এখন মহিষাসুরের রূপ ধারণ করে ময়দানে অবতীর্ণ হয়েছে। এমনটাই চিত্র প্রত্যক্ষ করল রাজ্যবাসী। সোমবার পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ১০,৩২৩ -এর বিধানসভা চলো অভিযান ছিল। অভিযান ঘিরে এদিন রণক্ষেত্র রাজধানীর সার্কিট হাউস স্থিত এলাকা। উল্লেখ্য, সোমবার হাতে আর টি আই নথি নিয়ে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে থেকে মিছিল করে সার্কিট হাউস এলাকায় আসতে পুলিশ ১০,৩২৩ -এর বিধানসভা চলো অভিযানে বাধা দেয়।

চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্দেশ্যে ছোড়া হয় জলকামান। কিন্তু পুলিশের বেরিগেড ভেঙে বিধানসভার দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে চাকুরিচ্যুত শিক্ষক শিক্ষিকা। তখনই পুলিশ, টিএসআর এবং সিআরপিএফ জওয়ানরা চাকুরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। ব্যাপক লাঠিপেটা করেও সন্তুষ্ট হয়নি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ, টি এস আর এবং সিআরপিএফ জওয়ানরা। রাস্তায় ফেলে লাথি মারতে শুরু করে জওয়ানরা। শেষ পর্যন্ত রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা টমটম এবং ডাস্টবিনে প্রবেশ করে আন্দোলনকারী চাকুরিচ্যুত শিক্ষক শিক্ষিকারা। কিন্তু দেখা গেল সেখানেও গিয়ে কালো চশমা এবং হেলমেট পরিধানকারি পুলিশ এবং সিআরপিএফ জওয়ানরা চাকরিচ্যুত শিক্ষক শিক্ষিকাদের বের করে বেধড়কভাবে রাস্তার পাশে ফেলে লাঠিপেটা করতে। তবে এখানে ক্ষান্ত থাকেন এই দিন জওয়ানরা। চাকুরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর ছোড়া হয় টি আর গ্যাস। ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়ে তিন শিক্ষিকা। শ্বাসকষ্টে রাস্তায় পড়ে ছটফট করতে থাকে তারা। গুরুতর আহত হয় দুই শিক্ষিকা। সাথে সাথে তাদের অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে পাঠানো হয় জিবি হাসপাতালে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো সবটাই প্রত্যক্ষ করেছেন এই দিন মহিলা পুলিশরা। আহত চাকুরিচ্যুত শিক্ষিকাদের রাস্তার পাশ থেকে উদ্ধার করতে মানবতার দেখায়নি তারা। এমনকি বহু চাকুরিচ্যুত শিক্ষককে রাস্তার পাশে ফেলে এমন ভাবে পেটানো হয়েছে যেন মনে হয় তারা কখনো শিক্ষক ছিলেন না। এবং এই জোয়ানদের কাছ থেকে এদিন রক্ষা পায়নি পথচারীরাও। পথচারিদের পর্যন্ত বাইক থেকে নামিয়ে লাঠি পেটা করতে দেখা গেছে এদিন জওয়ানদের। সবটাই যেন মনে হয়েছিল তাদের পরিকল্পনা মাফি কার্যকলাপ। পুলিশ চাইলে এদিন আন্দোলন সাধারণভাবে আটকে দিতে পারতো। কিন্তু যেভাবে লাঠিপেটা করে চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এদিন সংজ্ঞাহীন করেছে তা মনে হয়েছিল জরুরি অবস্থা চলছে। ঘটনায় আহত হয়েছে বহু চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকা। চাকরিচ্যুত শিক্ষক শিক্ষিকারা জানান, তারা অধ্যক্ষ কাছে আবেদন করেছিল রাজ্যের ৬০ জন বিধায়ককে বর্তমান সরকারের পাঁচ বছর মেয়াদকালের শেষ বিধানসভা অধিবেশনে আলোচনা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য। এবং ২৩ সেপ্টেম্বর বিধানসভা নির্বাচনের আগে চাকরিচ্যুত ১০,৩২৩ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুলমুখী করতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য। কিন্তু কোন সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ না করায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বিধানসভা চলো অভিযান সংগঠিত করা হবে। আর এদিন এই অধিবেশন শুরু হওয়ার সাথে সাথে এ ধরনের লংকার কান্ড সংগঠিত হলো বিধানসভা থেকে কয়েকশো মিটার দূরে সার্কিট হাউস এলাকায়। চাকরিচ্যুত শিক্ষক বিজয় কৃষ্ণ সাহার বক্তব্য বিধানসভা অধিবেশনে যদি তাদের নিয়ে বিধায়করা আলোচনা না করে তাহলে ভোট দিয়ে বিধায়ক বানানোর পর তাদের মূল্য কি রয়েছে ? আর যদি সঠিকভাবে বিধায়কের দায়িত্ব পালন করতে না পারেন তাহলে তাদের কি দায়িত্ব দামী দামী গাড়ি দিয়ে চলাচল করার? এই আন্দোলন নির্দিষ্ট কোন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ছিল নয়। এ আন্দোলন বিধানসভায় আলোচনা করে সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করার জন্য। কিন্তু এই দিনের ঘটনা চাকরিচ্যুত শিক্ষক শিক্ষিকারা আশাহত হয়ে পড়ে। চাকরিচ্যুত শিক্ষিকা ডালিয়া দাস জানান আগামী ২৩ শে নির্বাচনের আগে যদি সরকার তাদের জন্য সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ না করে তাহলে যেভাবে ২৫ বছরের সরকারের পতন করা হয়েছিল, সেভাবে বর্তমান সরকারকে পতন ঘটাবে চাকরিযুক্ত ১০,৩২৩ এবং তাদের সাথে জড়িত আরো এক লক্ষ মানুষ। এবং এদিনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন দলদাস হয়ে পুলিশ এভাবে লাঠিপেটা করেছে।

সম্পরকিত প্রবন্ধ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

সবচেয়ে জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য