স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক, আগরতলা। ২৪ অক্টোবর : রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সংঘটিত হওয়া নারী নির্যাতন, ধর্ষণকারী এবং খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া, রেলের ওয়াগন বোঝাই কোটি কোটি টাকার নেশা সামগ্রী পাচারকারীদের গ্রেফতার করা, মন্ত্রী সুধাংশু দাসকে সভা থেকে বরখাস্ত করার দাবিতে শুক্রবার রাজধানীর ওরিয়েন্ট চৌমহনী এলাকায় ভারতের মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে এক গণ অবস্থানের আয়োজন করা হয়। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী, সিপিআইএম নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে, প্রাক্তন বিধায়ক রতন ভৌমিক, সারা ভারত গণতান্ত্রিক নারী সমিতির নেত্রী কৃষ্ণা রক্ষিত সহ অন্যান্যরা।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বক্তব্য রেখে বলেন, রাজ্যে টিটিএএডিসি এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে দুর্নীতির প্রতিযোগিতা চলছে। তারা প্রতিযোগিতা করছে কে কত বেআইনি সম্পত্তি বৃদ্ধি করতে পারে। এর বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ নিয়ে মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির বিধায়করা বিধানসভার ভেতরে সোচ্চার হয়েছেন এবং বিধানসভার বাইরে ও সোচ্চার হয়েছে মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি। কিন্তু তাদের দুর্নীতির শেষ নেই। পঞ্চায়েত থেকে মহাকরণ পর্যন্ত দুর্নীতি করে চলেছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দুর্নীতির সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রাজ্য সরকারের একজন মন্ত্রী। এই মন্ত্রী যখন জনগণের সামনে স্বীকার করছেন তারপরেও তাকে যদি মন্ত্রী সভা থেকে সরানো না যায় তাহলে এই সরকারের কাছে চাওয়ার কিছু থাকবে না। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, উদয়পুরে দীপাবলি মেলাতে এসে হায় হতাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। এই পরিস্থিতি থেকে ব্যবসায়ীদের বের করে আনার মত কোন উদ্যোগ নেই সরকারের।
কিন্তু রাজ্যের ৪২ লক্ষ মানুষের মধ্যে প্রায় ৩৫ লক্ষ মানুষ দৈনিক হাজিরা নিরিখে কাজ করেন। তারা সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে আসার সময় নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রিক চাহিদা সংসারের জন্য মেটাতে পারছে না। তাই রাজ্যে চলছে লুটেরাদের উৎসব, মন্ত্রীদের উৎসব এবং মানুষকে যারা ঠকাচ্ছেন তাদের উৎসব। এটা জনগণের উৎসব হতে পারে না। তাই জনগণকে ঘর থেকে বের হয়ে আসতে উৎসাহিত করতে হবে। এবং এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে ভারতের মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির। জিরানিয়া রেল স্টেশনের মালগাড়ি থেকে মাদক দ্রব্য উদ্ধার প্রসঙ্গে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী বক্তব্য রেখে বলেন, যদি প্রথম দিন মাদক পাচার হতো তাহলে এক কার্টুন কিংবা দুই কার্টুন আসতো। এভাবে রেলের বগি ভর্তি হয়ে আসতো না। তারপর আবার উনিশ অক্টোবর ধরা পড়েছে। তাই এই ঘটনার সাথে যে বড় বড় রাঘব বোয়ালেরা জড়িত সেটা আর বোঝার বাকি থাকে না। শুধু নেশা দ্রব্য পাচার করেই নয়। গত সাত বছরে ত্রিপুরার জনগণের সম্পদ একের পর এক লুট হয়েছে। পঞ্চায়েত থেকে মহাকরণ পর্যন্ত গত সাড়ে সাত বছরে শুধু চুরি না, ডাকাতির কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। এতে দেশে রেল এবং রাজ্য প্রশাসন থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুই কলঙ্কিত হচ্ছে। কিন্তু পুলিশ এগুতে পারছে না। শুক্রবার রাজধানীর ওরিয়েন্ট চৌমুহনি স্থিত এলাকায় বামেদের গণঅবস্থানে এ কথা বললেন বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। আয়োজিত এদিনের গণ অবস্থানে বামেদের কর্মী সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়।

