স্যন্দন ডিজিটাল ডেস্ক। আগরতলা। ২৯ আগস্ট : সাড়ে চার বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। কিন্তু একই সঙ্গে ৩৫ বছরের সিপিএম-র শাসন কালের কালো ছায়া এখনো দেখতে পাওয়া যায়। বিগত ৩৫ বছরের শাসনে মহিলাদের স্ব শক্তিকরণের কোন উদ্যোগ ছিল না। জনজাতিদের অবজ্ঞা এবং যুবদের অপব্যবহার করা হয়েছে। অন্যদিকে কংগ্রেসের শাসন কালে সন্ত্রাসবাদকে বাড়তে দেওয়া হয়েছিল। বনধ ও রাস্তা অবরোধ ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। নেশা সামগ্রীর পাচারের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছিল।
ভ্রষ্টাচার ছিল চরমসীমায়। উত্তেজনা তৈরি করে রাখা হয়েছিল রাজ্য জুড়ে। সোমবার প্রদেশ বিজেপি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সিপিএম ও কংগ্রেসকে এভাবেই বিধলেন বিজেপি-র রাষ্ট্রীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নাড্ডা। ২০১৮ সালে বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যে সর্বাঙ্গীণ উন্নতি হয়েছে। অস্টলক্ষ্মী হিসাবে ত্রিপুরার উদয় হয়েছে। পরিকাঠামোর উন্নয়নের জন্য বহু কোটি টাকার বিনিয়োগ হচ্ছে রাজ্যে। শিল্প ক্ষেত্রেও উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। ক্রীড়া ক্ষেত্রের বিকাশের জন্য জোর দেওয়া হয়েছে। পর্যটন শিল্পকে সামনে আনা হয়েছে। আভ্যন্তরীণ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় ঝাঁপ দিয়েছে ত্রিপুরা। মহিলাদের স্ব শক্তিকরনে ৩৩ শতাংশ আসন সরকারী চাকুরীর ক্ষেত্রে রাখা হয়েছে। সাত গুন বেড়েছে স্ব সহায়ক দলের সংখ্যা। এটা সরকারের উৎসাহ দানের কারনেই সম্ভব হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী শ্রমিক কল্যাণ যোজনার মাধ্যমে প্রতিভার সঠিক ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে ।
জাতীয় ফরেনসিক বিশ্ব বিদ্যালয় স্থাপন। তাতে ২০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ ডাবল ইঞ্জিনের সরকারের সুফল। এম বি বি বিমানবন্দরের আধুনিকিকরন সহ একাধিক প্রসঙ্গ তুলে ধরেন বিজেপি-র রাষ্ট্রীয় সভাপতি। জনজাতিদের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তায় ১৩০০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা করেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও তাদের জীবন মানের উন্নয়নের জন্য এই অর্থ ব্যয় করা হবে। একজন দেশবাসী হিসাবে গর্বের যে দেশের রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন একজন জনজাতি অংশের মহিলা। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর জনজাতিদের সম্মান ও মূল ধারায় আনার ক্ষেত্রে এটা কেন্দ্রীয় দৃষ্টি ভঙ্গিকে স্পষ্ট করে দেয় বলে জানান তিনি। কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার কাজ করছে বলে জানান তিনি। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে ত্রিপুরায়। শান্তি চুক্তির সফলতা এসেছে। এন এল এফ টি-র বড় অংশের আত্ম সমর্পণ করা। সেই সমস্ত যুবদের মূল স্ত্রোতের সঙ্গে এনে তাদের প্রতিষ্ঠিত করা তারই উদাহরণ। ২৩ বছর ৩৭ হাজার ব্রু শরণার্থীদের শান্তিপূর্ণ ভাবে পুনর্বাসন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজনৈতিক হিংসা এখন স্তব্ধ হয়ে গেছে। আগে রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা ছিল এই রাজ্যে প্রধান বিষয়। বর্তমান সরকার দায়িত্ব নিয়ে এই রাজনৈতিক হিংসার পরিবেশ বন্ধ করেছে বলে জানান রাষ্ট্রীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। ধর্ষণ, ডাকাতি, অপহরণ, ছিনতাইয়ের মত ঘটনা কমেছে। সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে কমতি দেখা গেছে। মূল স্ত্রোতে এগিয়ে চলেছে ত্রিপুরা। কোভিড টিকাকরনের ক্ষেত্রে বড় সাফল্য পেয়েছে ত্রিপুরা। এর জন্য স্বাস্থ্য কর্মী, প্রথম শারির যোদ্ধা এবং স্বাস্থ্য দপ্তরকে অভিনন্দন জানান তিনি। স্থানীয় নির্বাচন গুলিতে বড় সাফল্য পেয়েছে বিজেপি দল।
এরপরের নির্বাচন গুলিতেও মানুষ আশীর্বাদ করায় ধন্যবাদ জানান তিনি। ডাবল ইঞ্জিনের সরকার ডাবল গতিতে এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা এবং এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত গড়ার দিশাতে এগিয়ে চলেছে। রবিবার বিজেপি-র সমস্ত বিধায়ক, নেতা , মন্ত্রী , এমডিসি ও শীরক দলের সদস্যদের বৈঠক হয়েছে। শান্তি ও বিকাশ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে আগামী নির্বাচনে রাজ্যের মানুষ বিপুল ভোটে জয়ী করবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন বিজেপি-র রাষ্ট্রীয় সভাপতি। এই ক্ষেত্রে দলীয় স্তরে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। সংবিধানের মধ্যে সবার বিকাশ এবং সবার উন্নয়ন এটাই বিজেপি-র চিন্তাধারা। এর জনেই সবকা সাথ সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস ও সবকা প্রয়াসের শ্লোগান দিয়েছে বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গে ভোটের হার বৃদ্ধি করেছে বিজেপি। তৃণমূল সরকার সমস্ত কিছু লঙ্ঘন করে গেছে। কংগ্রেস ও সিপিএম নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। তাই প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তৃনমূলের দুর্নীতি, জন বিরোধী নীতি, মানুষের সঙ্গে প্রতারণার বিষয় গুলি বিজেপি মানুষের কাছে তুলে ধরছে। বিজেপি স্বচ্ছ প্রশাসনের বিশ্বাসী। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আমলে বেহাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, আইনের নামে অপাশান নিয়ে মাথা নত হয়ে যায়। মহিলা মুখ্যমন্ত্রী থাকার পরেও মহিলারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মানব পাচারে শীর্ষে পশ্চিমবঙ্গ। এর বিরুদ্ধে লড়াই করবে বিজেপি । পশ্চিমবঙ্গের মানুষ বিজেপি-র সঙ্গে আছে বলে জানান রাষ্ট্রীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা, প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, রাজ্য প্রভারী বিনোদ সোনকর, উপ মুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা ও বিধায়ক বিপ্লব কুমার দেব।